মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের প্রভাবিত করে নড়াইল সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার’রা কমিশনের মাধ্যমে বেসরকারি ক্লিনিকে রোগী পাঠান এমন অভিযোগ এনেছেন বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএইচসিডিওএ),নড়াইল জেলা শাখা। রোববার (১ অক্টোবর) বিপিএইচসিডিওএ’র নড়াইল জেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ৩০ স্বত্বাধিকারী স্বাক্ষরিত অভিযোগ পত্রটি নড়াইল -২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজার কাছে পাঠানোর পাশাপাশি বিভিন্ন দপ্তর ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবদুল গফফারের নিকট দাখিল করেছেন। বিপিএইচসিডিওএ’র নড়াইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এস.এম সাজ্জাদ রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অভিযোগ পত্রে বলা হয়েছে,আধুনিক সদর হাসপাতাল নড়াইল,অফিস চলাকালীন হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. দীপঙ্কর বিশ্বাসসহ হাসপাতালের বেশ কিছু ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অপারেশনের জন্য রোগীদের প্রভাবিত করে নির্ধারিত বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে অনৈতিকভাবে অর্থের বিনিময়ে সেবা প্রদান করছেন। ডাক্তারদের এমন কর্মকাণ্ডে সরকারি হাসপাতালের কর্মচারীদের মধ্যে সেবা প্রত্যাশী রোগীদের প্রভাবিত করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে অনৈতিক কমিশন প্রাপ্তির হিড়িক পড়েছে। সরকারি হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারীদের এমন অপেশাদার দায়িত্বহীন আচরণে সাধারণ রোগীরা সঠিক সরকারি চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগে আরও বলা হয়,সার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. দীপঙ্কর বিশ্বাসসহ হাসপাতালের বেশ কিছু ডাক্তার বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রোগীদের সঠিক সেবাদানের পাশাপাশি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমুহের প্রতি নিরপেক্ষ আচরণের জোর দাবি জানিয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিপিএইচসিডিওএ’র নড়াইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এস.এম সাজ্জাদ রহমান বলেন,শুধু ডাক্তার দীপঙ্কর বিশ্বাসই নয় গাইনি কনসালটেন্ট ডাক্তার সুব্রত কুমার বাগচিসহ নড়াইল সদর হাসপাতালের বেশ কিছু ডাক্তার রোগী দেখার সময় বহিরাগত পছন্দমতো বেসরকারি ক্লিনিকের স্টাফদের নিয়ে রাউন্ড দেন। ডাক্তার যাওয়ার পরপরই নির্দিষ্ট রোগীদের প্রভাবিত করে তারা ডাক্তারদের নির্দেশে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ অপারেশনের জন্য বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যান। তিনি আরও বলেন,ডাক্তার দীপঙ্কর বিশ্বাসের শ্যালক ডা. দীপের নামে লাইসেন্স নিয়ে একটি বেসরকারি ক্লিনিক চালু করেছেন,সেটার মালিকানা ডা. দীপঙ্করের স্ত্রীও আছেন। মূলত ওই ক্লিনিকের সকল রোগী সাপ্লাই হয় সদর হাসপাতাল থেকে,দীপঙ্কর অনুসারী ডাক্তার ও কর্মচারীদের মাধ্যমে। এই অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সমাধান চেয়ে নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি,জেলা সিভিল সার্জন,হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ৫ দপ্তরে অভিযোগ পাঠিয়েছেন। এবিষয়ে নড়াইল সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. দীপঙ্কর বিশ্বাস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,আমি রাউন্ডের সময় বহিরাগতদের নিয়ে রোগী যদি দেখে থাকি সেটা দেখভাল করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আছেন। আমি অফিস সময়ের পর সুবিধামতো যেকোনো প্রাইভেট ক্লিনিকে অপারেশন করতেই পারি। সেক্ষেত্রে কোথায় চেম্বার করছি,কোথায় অপারেশন করছি সেটা আমার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবদুল গফফার সত্যতা শিকার করে বলেন, বিপিএইচসিডিওএ’র নড়াইল জেলা শাখার একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।