নিজস্ব প্রতিবেদক : জুয়া খেলায় নিঃস্ব হয়েছে অনেকে আবার এই খেলায় বউ বন্ধক দেওয়ারও নজির আছে। সংসারে মারামারি হানাহানি থেকে শুরু করে সমাজ বিনষ্টসহ যুবসমাজকে ধ্বংস করে জুয়া খেলা। তবে এবার চট্টগ্রামে মুসলমানদের সিয়াম সাধনার একমাত্র মাস পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করছে কথিত স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা রানার জুয়া। যদিও সিএমপির পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় ইতোমধ্যেই জুয়া নিয়ে চট্টগ্রামে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষনা দিয়েছেন তারপরেও সদরঘাট থানা এলাকায় ব্যঙ এর ছাতার মত গড়ে উঠেছে জুয়া খেলা। জানা যায়, রানার বোর্ডেই দৈনিক দুই লাখ টাকার লেনদেন হয়। এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, এই জুয়ার কারনে এলাকায় বেড়েছে ছিনতাই, মাদক ও ইভটিজিং। জুয়ার টাকা জোগাড় করতে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে অপরাধ প্রবনতা। ফলে রানার জুয়ায় রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসীরা।
নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, থানা পুলিশকে ম্যানেজ করেই চলে জুয়া। কিছুদিন পর পর পুলিশের গাড়ি দেখলেও রানার জুয়ার আসর থেকে জুয়াড়ি গ্রেফতার করা হয় না। আমরা একাধিকবার ৯৯৯ এ পুলিশের হেল্প লাইনে কল করেও সমাধান পাইনি। কল দিলে পুলিশের গাড়ি আসার আগে কিভাবেইবা জানি জুয়াড়িরা আগে থেকে টের পেয়ে যায়, পরে পুলিশ এসে নামকাওয়াস্তে ঘুরে যায়।
বন্দরনগরীর সদরঘাট থানা এলাকার জুট রেলি ঘাটে কর্ণফুলীর তীর ঘেঁষে কেরানের নীচে রাতদিন প্রকাশ্যেই চলে রানার এই আসর। সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা এমনকি গভীর রাত হলেও বন্ধ হয় না খেলা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রানা নিজেকে পরিচয় দেন স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা হিসেবে। যদিও তিনি নগর থানা কিংবা ওয়ার্ড পর্যায়ের কোন কমিটিতেই নেই। শুধু তাই না, বিগত কয়েক বছরে জুয়া খেলার ইনকাম দিয়ে গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। অনুসন্ধান বলছে, রানার বেশ কয়েকটি ট্রাক, পিকআপ ভ্যান ও হাইচ রয়েছে। আর এইসব গাড়ি রানা কিনেছেন এই জুয়া খেলার টাকা দিয়ে। এদিকে এর আগেও জাতীয় পর্যায়ের একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও বন্ধ করা যায়নি এই অপরাধ। সংশ্লিষ্টরা তাই মনে করছেন, এভাবে চলতে থাকলে দিন দিন ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাবে অত্র থানা এলাকার আর সমাজ বিনষ্টের পাশাপাশি বাড়বে সব ধরনের অপরাধ প্রবনতা।
রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করছে সদরঘাটে রানার জুয়া।
স্থানীয়রা একাধিকবার অভিযোগ করার পরেও বন্ধ করা যায়নি আসর। স্থায়ীভাবে রানার জুয়া বন্ধে অত্র থানার পক্ষ থেকে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানতে সদরঘাট থানার ওসি ফেরদৌস জাহানের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি বলেন, নদীর পাড় হওয়ায় এই এলাকায় অনেকেই আড্ডা জমিয়ে খেলে।
তবে এটি লুডু খেলা কিনা জানতে চান প্রতিবেদকের কাছে। পরে প্রতিবেদক বারবার তথ্য নিশ্চিত করলেও ফের তিনি বলেন, অর্থ বিনিময় হয় কিনা দেখতে হবে কারন অনেকে একসাথে বসে তাস খেলতে পারে কিংবা লুডুও খেলতে পারে সেটিতো জুয়া নয়। তবে অভিযোগের বিষয়ে পরে তিনি সাড়া দিয়ে বলেন, এখনি কার্যকরি ব্যবস্থা নিচ্ছি।