নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ গায়ে হলুদ। কাল হবে বিয়ে। সাজানো হয়েছে পুরো বাড়ি। তৈরি করা হয়েছে গায়ে হলুদের কেক। মেজবানির জন্য কেনা হয়েছে গরু। তবু হলুদের শাড়ি গায়ে জড়ানোর আগেই হবু স্বামীর উদ্দেশে সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেছেন কনে রিমা আক্তার।গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের পটিয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত রিমা আক্তার (২০) পটিয়ার ঈদগাঁও এলাকার মনির আহমদের মেয়ে। তিনি পটিয়া সরকারি কলেজের স্নাতক ৩য় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
মৃত রিমার পরিবার জানায়, একই এলাকার ছেলে মোরশেদুর রহমান মিজানের সঙ্গে শুক্রবার (২৮ জুন) বিয়ে হওয়ার কথা ছিল রিমা আক্তারের। মোরশেদুর রহমান আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ, সোনারগাঁও, মোগড়াপাড়া শাখার ক্যাশ অফিসার। মেয়ের পরিবার থেকে কিছুদিন আগে ৫০০ জন বরযাত্রী খাওয়ানো বাবদ ২ লাখ টাকা নেয় মোরশেদুরের পরিবার। তবে বিয়ের আগের দিন বলছেন ফার্নিচার না দিলে বিয়ে করতে আসবে না ছেলে। এ কথা শুনেই সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেন রিমা।
সুইসাইড নোটে লেখা ছিল, ‘প্রিয় শখের পুরুষ, তুমি করো তোমার বিয়ে। অনেক ভালোও বেসেছো এবং অতিরিক্ত যন্ত্রণাও দিয়েছ। আমি পারছি না এত যন্ত্রণা নিতে। বাকি জীবনটা সুন্দর উপভোগ করতে পারলাম না, ভালো থেকো, আজকের দিনেও তোমার যন্ত্রণা আমি নিতে পারছি না, আমার পরিবার থেকে তোমাদের যে যৌতুকের তোমাদের টাকা দিয়েছে সেগুলো শোধ করে দিও। তুমি আমাকে বাঁচতে দিলে না। আমি বাঁচতে পারতাম যদি বেশি মান-সম্মানওয়ালা পরিবারে জন্মগ্রহণ না করতাম, সবাই ক্ষমা করে দিও, আর আমার পোস্টমর্টেম করিয়ে আমার সব যন্ত্রণা ধুঁয়ে মুছে আমাকে কবরে পাঠিয়ো।’
এরপর তিনি তার পরিবারের উদ্দেশে লিখেন, ‘আর আমার পরিবারকে বলছি, মোরশেদকে তোমরা ছাড়বে না। ওকে ওর প্রাপ্য শাস্তি তোমরা দিবে।’
রিমা আক্তারের মা সাজিয়া বেগম জানান, আমার মেয়ের মৃত্যু জন্য মোরশেদুর রহমান দায়ী। আমরা তাকে অনেক দিয়েছি। তার পরও যৌতুক চায়। দিতে না পারায় আমার মেয়ের আত্মসম্মানে লেগেছে। তাই সুইসাইড করেছে।
বাবা মনির আহমদ চট্টগ্রাম মেডিকেলের মর্গের সামনে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমি আমার মেয়ে কই পাব বলেন। আর মেয়ে আসবে না। আমি মোরশেদুল আমলের বিচার চাই। তার শাস্তি চাই। আর কোনো মেয়ের পরিবারকে যেন এমন পরিণতি ভোগ করতে না হয়।