আজকের দেশ রিপোর্ট : রাজধানীসহ সারাদেশে অবস্থিত ইউনানী ও আয়ুবেদিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ প্রস্তুতকালে ক্ষতিকর কেমিকেলের ব্যবহার আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এসব ক্ষতিকর কেমিকেল মিশ্রিত ওষুধ সেবনে দেশের জনস্বাস্থ্য আজ হুমকির সম্মুক্ষীন। রাজধানির বাসাবো বৗদ্ধ মন্দির এলাকায় অবস্থিত বিগো ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) এর বিরুদ্ধে ভিটামিন ও যৌন উত্তেজক ওষুধ সামগ্রীতে ভয়ংকর পার্শ্বতিক্রিয়া যুক্ত ক্ষতিকর ক্যেমিকেল ব্যবহারের গুরুতর এক অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাম্প্রতি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের আওতাধীন ড্রাগ টেষ্টিং ল্যাবরেটরিতে বিগো ফার্মাসিউটিক্যাস (আয়ূ) এর বেশ কয়টি যৌন উত্তেজক ওষুধ সামগ্রীর নমুনা পরিক্ষার পর ভয়ংকর পাশ্বপ্রতিক্রিয়া যুক্ত কেমিকেল ব্যবহারের বিষয়টি ধরা পড়ে। এ বিষয়ে ওষুধ অধিদপ্তর বিগো ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) এর প্রস্তুতকৃত কেমিকেল যুক্ত যৌন উত্তেজক ওষুধ গুলির উৎপাদন ও বাজারজাত সাময়িক বাতিল করে এবং বাজার থেকে কেমিক্যাল যুক্ত ঐ সকল যৌন উত্তেজক ওষুধ গুলো প্রত্যাহার পূর্বক ওষুধ অধিদপ্তরকে অবগত করতে লিখিত আদেশ প্রদান করে। কিন্তু বিগো ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) জনস্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর ওই ওষুধ বাজার থেকে প্রত্যাহার না করে উৎপাদন তারিখ ব্যাচ নাম্বার পরিবর্তন করে বিপুল পরিমান উল্লেখিত কেমিক্যাল মিশ্রিত ভয়ংকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যুক্ত যৌন উত্তেজক ওষুধ সামগ্রী বাজারজাত করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এই বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বাজার মানিটরিং সেলকে দায়ী করেন স্বাস্থ্য সচেতন একটি মহল। বাজার মনিটরিং সেলের অদক্ষ্যতা, অযোগ্যতা সর্বোপরি অনৈতিক সুবিধা সংশ্লিষ্ট কারণে অবৈধ, ভেজাল ও নিম্মমানের ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। নকল ভেজাল ওষুধের দুর্গোখ্যাত রাজধানীর মিটফোর্ডে র্যাব ফোর্সেস ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর ভ্রাম্যমান আদালতের তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক নকল ভেজাল ওষুধ সিন্ডিকেট বর্তমানে দেশের মফস্বল শহর অঞ্চলকে টার্গেট করে তাদের কর্মতৎপরতা চালাচ্ছে। তবে এখনো ওষুধের মেয়াদ উত্তীর্ণ কাঁচামাল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তাদের অপ-তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। আর এই সব মেয়াদ উত্তীর্ন নিম্মমানের ওষুধের কাঁচামাল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটদের টিকিয়ে রেখেছে কতিপয় ভেজাল ও নিম্মমানের এলোপেথিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের একটি সংঘবদ্ধচক্র। এইসব সংঘবদ্ধচক্রের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে সংবাদ প্রকাশ করা হবে এর প্রক্রিয়া চলমান। আজ বিগো ফমাসিউটিক্যালস (আয়ূ) এর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো। অভিযোগ মতে বিগো ফার্মাসিউটিক্যাল (আয়ু) এর কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন যাবৎ যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, ক্যাপসুল ও সিরাপে সিলড্রেনাফিন সাইট্রেড ও ট্রাডালফিন সাইট্রেড ব্যাবহার করছে যার প্রমান ড্রাগ টেষ্টিং ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরিক্ষাকালে পাওয়া গেছে। অপরদিকে ভিটামিন সিরাপে ডেক্সামেথাসন ও হরমোন জাতীয় কেমিকেল ব্যবহার করছে। এছাড়াও বিগো ফার্মাসিউটিক্যাল (আয়ু) এর ওষুধের লেবেল কার্টুনের আনুমোদন ওষুধ অধিদপ্তর থেকে এনে পরে নিজের ইচ্ছামত লেবেল কার্টুন ওষুধ বাজারজাত করছে। ওষুধ প্রসাশন অধিদপ্তরের নিয়ম অনুসারে অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদিত লেবেল কার্টুনের কোন প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা বিকৃত করা যাবে না। অথচ বিগো ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) কর্তৃপক্ষ ওষুধ প্রসাশন অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদিত লেবেল কার্টুন ব্যবহার না করে ক্রেতা সাধারণের দৃষ্টি আকর্ষন করতে অবৈধ ভাবে নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী লেবেল কার্টুনে ওষুধ সামগ্রী বাজারজাত করছে যা ওষুধ নিয়ন্ত্রন অধ্যদেশ পরিপন্থি। উক্ত কোম্পানী হরমো-বি, ভিগোরা ও জিনসেং প্লাস নামক যৌন উত্তেজক সিরাপ চমকপ্রদ লেবেল কার্টুনে বাজারজাত করছে। এছাড়া জিনসেং নামক যৌন উত্তেজক সিরাপে জিনসেং এর সাথে প্লাস (+) চিহ্ন যোগ করে সিরাপটি জিনসেং প্লাস হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এমনিভাবে আমলকি রসায়ন নামক সিরাপে আমলকি প্লাস (+) রসায়ন নাম ব্যাবহার করছে। জিনসেং প্লাস (ডিএআর নাম্বার আয়ু-৯৩-এ-৩০), হরমো-বি (ডিএআর নাম্বার আয়ু-৯৩-এ-০১৪), ভিগোরা (ডিএরআর নাম্বার-আয়ু-৯৩-এ-০১৫), ভীমরস (ডিএআর নাম্বার আয়ু-৯৩-এ-০৩২), সঞ্জীবনি রসায়ন (ডিএআর নাম্বার আয়ু-৯৩-এ-২৭), এইসব যৌন উত্তেজক সিরাপ প্রস্তুতকালে সিলড্রেনাফিন সাইট্রেড ও ট্রাডালাফিন সাইট্রেড নামক ভায়াগ্রার কাঁচামাল ব্যাবহারের অভিযোগ উঠেছে। আমলকি প্লাস রসায়ন, (ডিএআর নাম্বার আয়ু-৯৩-এ-০২৫), ফলারিষ্ট (ডিএআর নাম্বার আয়ু-৯৩-এ-০২৯) এবং রুচিজেন-এস (ডিএআর নাম্বার আয়ু-৯৩-এ-০৩২)। এখানে প্রশ্ন উঠে ভীমরস এবং রুচিজেন এস নামক রুচিবর্ধক ও বলকারক সিরাপের ডিএআর নাম্বার (আয়ু-৯৩-এ-০৩২) একই হয় কিভাবে? একই ওষুধ দুই নামে ও ভিন্ন দামে কিভাবে উৎপাদন ও বাজারজাত হয়। ফলারিস্ট ও আমলকি প্লাস রসায়ন নামক সিরাপে ডেক্সামেথাসন ও হরমোন জাতীয় কেমিকেল ব্যবহার করারও অভিযোগ উঠেছে। প্রতিনিয়ত এই সব পার্শ¦ প্রতিক্রিয়া যুক্ত ক্ষতিকর ওষুধ সেবন করলে মানবদেহের লিভার, কিডনি ও হার্ট বিকল হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ বলে বিশ্বস্থ্য একটি সুত্রের দাবি। এই বিষয়ে বিগো ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) এর মালিক সাখাওয়াত হোসেন টিপুর বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে যোগযোগ করা হলে অপ্রসাংগিক কথাবার্তা বলে মূল অভিযোগের বিষয়টি এড়িয়ে যান। ফলে তার কোন বক্তব্য প্রকাশ করা সম্ভব হলো না।
