নিজস্ব প্রতিবেদক : গত দুই সপ্তাহে সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দরিদ্র ও হতদরিদ্র মানুষের জন্য সরকারের বরাদ্দের ২ হাজার ১৭৪ বস্তা চুরি হওয়া চাল উদ্ধার করেছে আইনশ্ঙ্খৃলা বাহিনী। তবে এখনও হদিস মেলেনি ৫৫০ বস্তা চালের। সবচেয়ে বেশি ৬৯৫ বস্তা চুরি হওয়া চাল উদ্ধার হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে এবং সবচেয়ে কম ৩৮ বস্তা উদ্ধার হয়েছে সিলেট বিভাগ থেকে। এসব ঘটনায় সারা দেশ থেকে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাসহ ২৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ মানুষের ত্রাণ সহায়তা দিতে আইনশ্ঙ্খৃলা বাহিনীকে আরও কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। তবে পুলিশ বলছে, পুলিশের সব ইউনিট এ বিষয়ে সজাগ রয়েছে। ত্রাণে কোনও অনিয়ম হতে দেওয়া হবে না। জনস্বার্থে পুলিশ যেকোনও সিদ্ধান্ত নেবে।
বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার মধ্যে চার জেলায় হতদরিদ্র ও ত্রাণের চাল চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত দুই সপ্তাহে চারটি জেলা থেকে ৬৩৮ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় আটক করা হয়েছে তিন জনকে।
বরগুনা: জেলার পাথরঘাটা থানার কাকচিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টু তার গুদামে জেলেদের জন্য বরাদ্দ করা চাল রেখেছিলেন। তবে প্রশাসনের পরিদর্শনে সেখানে ৫৫০ বস্তা (৫০ কেজি বস্তা) চালের হদিস মিলেনি। এ কারণে ওই চেয়ারম্যানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঝালকাঠি: ঝালকাঠি সদর উপজেলার ৮নং বাসন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিরের হেফাজত থেকে ৫০ বস্তা (৫০ কেজি করে বস্তা) চাল উদ্ধার করা হয়।
পটুয়াখালী: জেলার কমলাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির মৃধাকে তার দুই সহযোগীসহ ওএমএসের চাল বিক্রির অপরাধে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ১০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। তারা এখন কারাগারে।
ভোলা: ভোলার লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার জুয়েলের ঘরের খাটের নিচে মাটি খুঁড়ে লুকিয়ে রাখা ৭ বস্তা, ওয়ার্ডের চৌকিদার শাহ আলমের ঘর থেকে ৬ বস্তা, ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার ওমরের এলাকা থেকে ১৫ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফরিদুল হক তালুকদার, তার ভাতিজা ওয়ার্ড মেম্বার ওমরসহ ৪ জনকে আসামি করে মামলা হয়। ওমর মেম্বারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
খুলনা বিভাগের দুটি জেলা থেকে ওএমএস’র বিক্রির জন্য সরকারি বরাদ্দের ৬৩৩ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় চার জনকে আটক করা হয়েছে।
যশোর: দারিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ ত্রাণ সহায়তা নিয়ে যশোর জেলায় অনিয়ম হয়েছে। এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। পৃথক ঘটনায় গত ৪ এপ্রিল ৬২৯ বস্তা (প্রায় ২০ মে. টন) চাল উদ্ধার করা হয়েছে। তিন জনকে আটক করা হয়। তারা হলো চাতাল মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুন, রাকিব হাসান শাওন (৩২) ও হাসিবুল হাসান (৩৫)। তারা ওই এলাকার বাসিন্দা।
বাগেরহাট: ১২ এপ্রিল সকালে বাগেরহাটের হাকিমপুর এলাকা থেকে ইস্রাফিল নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে চার বস্তা ওএমএস’র চাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
এছাড়াও সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় সলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে সরকার বরাদ্দ দেওয়া গরিব, অসহায় ও দুস্থ মানুষদের ত্রাণের চাল আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। তবে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেনের হস্তক্ষেপে চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান শুক্রবার ভোর রাতে ইউপি মেম্বারদের কাছে চালগুলো হস্তান্তরে বাধ্য হন।
ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় সরকারি চাল বিক্রি ও চুরি করে গুদামজাত করার ঘটনা ঘটেছে। পৃথক ঘটনায় তিনটি জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৬৯৫ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাসহ পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ: জেলার ত্রিশালে গত ২ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযান চালিয়ে ১৬ বস্তা ওএমএস চাল উদ্ধার করে।
জামালপুর: জামালপুর সদরের নরুন্দি বাজারে তুলশীরচর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তোফাজ্জল হোসেনের গুদাম থেকে ৩২৬ বস্তা এবং বকশীগঞ্জ পৌর শহরের পাখিমারায় নূর কালামের গুদাম থেকে ২০০ বস্তা (২৫ কেজি) সরকারি চাল উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের দুজনকেই আটক করা হয়েছে। এছাড়াও ১০ এপ্রিল শাহবাজপুর এলাকা থেকে ৩০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে।
শেরপুর: শেরপুরের চরপক্ষীমারি এলাকা থেকে গত ৯ এপ্রিল ব্যবসায়ী মানিকের কাছ থেকে ৩৩ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়।
নেত্রকোনা: জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় ১০ টাকা কেজির ৯০ বস্তা চাল চুরির অভিযোগে ১০ এপ্রিল সন্ধ্যায় আমিনুর রহমান শাকিল (৪৫) ও সাইফুল মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি রোয়াইলবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে।
ত্রাণের চাল চুরির অভিযোগে বগুড়ায় গ্রেফতার হন স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই নেতা। তাদের দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহীর চারটি জেলায় ত্রাণের চাল নিয়ে অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। দুই জেলার বিভিন্ন উপজেলার রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও ব্যবসায়ীদের বাড়ি থেকে ৫০৯ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার করা হয়। এ সময় আটক করা হয়েছে পাঁচ জনকে।
চাপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২২৬ বস্তা সরকারি চালসহ দু’জনকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। রোববার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের জোড়াবকুলতলা এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে এসব চাল জব্দ করা হয়। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলমগীর হোসেন এ তথ্য জানান।
জব্দ চালের মালিক বাবু নামে এক ব্যক্তি বলে জানা গেছে। তাকে আটক করতে না পারলেও এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে মেসবাউল হক (৩৮) ও রবিউল ইসলামকে (৪৮) আটক করেছে পুলিশ।
বগুড়া: জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানকে ১৬৮ বস্তা সরকারি চালসহ এবং শিবগঞ্জের সৈয়দপুর ইউনিয়নের গণকপাড়া এলাকা থেকে ১০২ বস্তা চালসহ মোস্তাফিজুর রহমানকে (৩৫) গ্রেফতার করে র্যাব ও থানা পুলিশ। এছাড়াও সোনাতলা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নে মিঠু মিয়া নামে এক চাল ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে ৪০ বস্তা ভিজিডির চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগ অভিযুক্ত চার নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়ে কেন্দ্রের কাছে তাদের বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে।
নওগাঁ: গত ২ এপ্রিল নওগাঁর রাণীনগরে আয়াত আলী (৬০) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি থেকে ১৩৮ বস্তা সরকারি ত্রাণের চাল এবং ২০০ পিস খালি বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে আয়াত আলী পলাতক রয়েছে।
নাটোর: নাটোরের সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নে পর পর দুই দিন ১০ টাকা কেজি দরের ওএমএসের ৬১ বস্তা চাল উদ্ধার হয় আওয়ামী লীগের দুই নেতার বাড়ি থেকে। এ ঘটনায় দুজনকেই গ্রেফতার করা হয়। তারা হলো স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগের সদস্য শাহিন শাহ এবং একই ইউনিয়ন কমিটির বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আওয়াল হোসেন স্বপন।
রংপুর বিভাগের রংপুর ও জয়পুরহাট এলাকা জেলা থেকে ১১২ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় আটক করা হয় চার জনকে।
রংপুর: গত ৮ এপ্রিল রংপুরের পীরগঞ্জে ৯০ বস্তা সরকারি চালসহ তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো ঈসমাইল হোসেন, রিয়াদ ও জাহাঙ্গীর আলম। তারা সবাই ওই এলাকার বাসিন্দা।
জয়পুরহাট: ক্ষেতলালে সুহলী বাজারের একটি গুদাম থেকে ১০ টাকা কেজির রেশনের ২২ বস্তাসহ দুই ভ্যানচালক এবং জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর থেকে একইদিন অবৈধভাবে মজুত রাখা ৭৩৮ বস্তা (২৫ টন) সরকারি চালসহ গোপীনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো. আল ইসরাইল ওরফে জুবেলকে হাতেনাতে আটক করেছে র্যাব।
সিলেটের দুটি জেলা থেকে ৩৮ বস্তা ওএমএস চাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
মৌলভীবাজার: জেলার বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউপির ভাটাউচি গ্রামের শুক্কুর আলীর বাড়ি থেকে শুক্রবার রাতে ৮ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং এলাকার নিয়ামতপুরে একটি দোকান থেকে ৩০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঢাকা বিভাগের দুই জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে ৫৮ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় একজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে গরিবদের জন্য বরাদ্দ চাল খোলা বাজারে বিক্রি ও মজুত করার অপরাধে গত ৯ ও ৮ এপ্রিল দুজনকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩৩ বস্তা চাল জব্দ করা হয়। এদের মধ্যে একজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
কিশোরগঞ্জ: গত ১০ এপ্রিল জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ ইউনিয়নে সরকারি ত্রাণের ২৫ বস্তা চাল ফেলে রাখা হয়েছিল খড়কুটার ভেতরে। পরে খবর পেয়ে তা উদ্ধার করেছে করিমগঞ্জ থানা পুলিশ। তবে কে বা কারা চালের বস্তাগুলো এনে ওই জায়গায় রেখেছিল তা জানা যায়নি।
নরসিংদী: নরসিংদীর রায়পুরায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরের চাল কালোবাজারে বিক্রির দায়ে দুই জন আটক হয়েছে। আটককৃতরা হলো ডিলার মো. রফিকুল ইসলাম ও চালের ক্রেতা হালিম মিয়া। আটক ডিলার রফিকুল ইসলাম উত্তর বাখরনগর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে। রোববার (১২ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার উত্তর বাখরনগর বাজার থেকে তাদের আটক করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের তিন জেলা থেকে ওএমএস’র ৪১ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। এ সময় আটক করা হয় চার জনকে।
ফেনী: ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় জেলার ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের পেনা পুষ্করণী গ্রামে জাকির হোসেন মজুমদার নামে এক প্রবাসীর বাড়ি থেকে হতদরিদ্রের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ করা ১০ টাকা কেজি দরে খোলা বাজারে বিক্রির (ওএমএস) ৬ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই প্রবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি: ১২ এপ্রিল সকালে জেলার মাটিরাঙ্গা এলাকায় ১০ টাকা দরের চাল কালোবাজারে বিক্রি সময় ২৮ বস্তা (৮৪০ কেজি) চাল জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় ডিলার মোমিন ও ক্রেতা হাশেমকে আটক করা হয়।
লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে হতদরিদ্রদের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ডিলার আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৭ বস্তা চাল জব্দ করে একটি গোয়েন্দা সংস্থা।
দুর্যোগের এই সময়ে যারা ত্রাণ চুরি কিংবা আত্মসাতে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে দ-সহ ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আগের ধারাবাহিকতায় রোববারও (১২ এপ্রিল) গণভবন থেকে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ১৬ জেলায় ভিডিও কনফারেন্স করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
এসব ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, এ ধরনের জাতীয় সংকটে সবার মানবিক, সহযোগী ও সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত। কিন্তু তা দেখছি না। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে অসাধু ব্যক্তিরা দরিদ্র মানুষের খাবার মেরে দিচ্ছে, যা মোটেই প্রত্যাশিত নয়।
ত্রাণ বিতরণের সময় ক্ষমতার অপব্যবহার, চুরি এবং অন্যান্য অনৈতিক ঘটনা ঘটছে। জড়িত জনপ্রতিনিধি এবং ওএমএস ব্যবসায়ী বা সে যেই হোক তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত বলেও তিনি মনে করেন। তিনি নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দেন।
র্যাব সদর দফতর জানিয়েছে, ত্রাণের চাল চুরির অভিযোগে সারা দেশে এখন পর্যন্ত তারা সাত জনকে গ্রেফতার করেছে। এ সময় ৩৪ হাজার ২৪০ কেজি চাল ও অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করেছে। এছাড়াও টিসিবির পণ্য অবৈধভাবে বিক্রির জন্য দু’জনকে ১১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সব ইউনিটকে ত্রাণের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। এসব অসাধু ব্যক্তিকে শক্ত হাতে দমন করা হবে। জনগণের স্বার্থে বাংলাদেশ পুলিশ যেকোনও সিদ্ধান্ত নেবে এবং কাজ করবে।