শুরুতেই ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে স্বস্তি উত্তর-দক্ষিণের পথে শঙ্কা চাপ বাড়েনি সদরঘাটে মহসীন আহমেদ স্বপন : শুক্রবার-শনিবার সরকারি ছুটি। রোববার শবে কদরের বন্ধ। মাঝে ৩ জুন ছুটি নিয়েছেন অনেকেই। ৪ জুন থেকে ৬ জুন তিন দিন ঈদের ছুটি। ৭ ও ৮ জুন শুক্র-শনিবার সরকারি ছুটি। এই লম্বা ছুটিতে ঈদ উদযাপন করতে অনেকে গত বৃহস্পতিবার রাজধানী ছেড়েছেন। বিশেষ করে বৃহস্পতিবার অফিস করে দুপুরের পর তারা গ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। তবে বৃহস্পতিবার শুরুর দিনই ঘরমুখো মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বিশেষ করে রাজধানীর যানজটে অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকেন টার্মিনালে যেতে।
ঈদযাত্রার শুরুতেই ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। শুক্রবার কমলাপুর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের পাঁচটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে ছাড়ায় যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সকাল ৯টায় রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও যাত্রীরা স্টেশনে এসে জানতে পারেন এটি দুপুর ২টা ১০ মিনিট ছাড়া হবে। বাকী ট্রেনগুলোরই একই অবস্থা।
তবে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, সব ট্রেন নয়, ১৮টি ট্রেনের মধ্যে মাত্র ৪টি ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে পরে ছাড়া হবে। শুক্রবার সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঈদযাত্রা পরিদর্শনে আসেন রেলমন্ত্রী। এ সময় তিনি প্লাটফর্মে থাকা দুটি ট্রেনের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত ১৮টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে দেরি করেছে ৪টি ট্রেন। সবচেয়ে বেশি দেরি করেছে রংপুর এক্সপ্রেস। এই ট্রেন কাল যাতে আর দেরি না করে সেজন্য বিকল্প হিসেবে আরেকটি ট্রেন প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই রাজধানীর টার্মিনালগুলোতে ভিড় লক্ষ করা যায়। বিকেলের দিকে এই ভিড় তীব্র আকার ধারণ করে। কোনো কোনো এলাকা এ সময় স্থবির হয়ে পড়ে। রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখার সময়ও রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় ছিলো প্রচ- ভিড়। ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে বলা হয়েছে, হঠাৎ রাস্তায় যানবাহনের তীব্র চাপ পড়েছে। যে কারণে ভিড় লেগে গেছে। একাধিক সূত্র বলেছে, দুপুরের পর একই সাথে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়ে যায়। যে কারণে তীব্র আকার ধারণ করে যানজট। এসকান্দার নামের এক পথচারী জানান, গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত তাকে হেঁটে যেতে হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে যাওয়ার পর হাঁটারও পথ ছিল না। মানুষের সাথে ধাক্কাধাক্কি করে কোনোমতে টার্মিনালে পৌঁছেছেন।
সবচেয়ে ভিড় লক্ষ করা গেছে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। সদরঘাট টার্মিনালের চরম অব্যবস্থাপনা যাত্রীদেরকে ভোগান্তির মধ্যে ফেলে দেয়। যাত্রীরা ঘাটে প্রবেশের পরই টানাহেচড়ার মধ্যে পড়ছেন। একাধিক যাত্রী বলেছেন, ঘাটের শ্রমিকরা তাদের মালামাল টেনে নিয়ে যায়। বাড়তি টাকা আদায় করছে মালামাল বহনের নামে। মাসুদ নামের এক যাত্রী বলেছেন, তার একটি হাত ব্যাগ। যা নিজেই বহন কওে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ঘাটের ভেতরে প্রবেশের পরই তিন-চারজন টানাটানি শুরু করে। শেষ পর্যন্ত একজনের কাছে ব্যাগটি দিতে হয়। হাত ব্যাগটি লঞ্চে তুলে দিয়ে দেড় শ’ টাকা দাবি করে। শেষ পর্যন্ত তাকে এক শ’ টাকা দিতে হয়। করিম শিকদার নামের এক যাত্রী বলেন, তিনি মিরপুর থেকে দুপুরের দিকে রওয়ানা দিয়েছেন। আর সদরঘাট পৌঁছেছেন সন্ধ্যায়। পথে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন।
বাস টার্মিনালগুলোতেও বিকেলের দিকে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। মহাখালী টার্মিনালে বেলা ৩ টার দিকে দেখা যায় মানুষ আর মানুষ। নাড়ির টানে সবাই বাড়ি ফিরছেন। ময়মনসিংহের যাত্রী শাহিন জানালেন, এখানে গাড়ির কোনো সিরিয়াল নেই। যে যেভাবে পারছে গাড়ি ছেড়ে দিচ্ছে। টিকিটেরও অধিক মূল্য রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গাবতলীতে খবর নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে টার্মিনালে ছিলো উপচেপড়া ভিড়। অনেকের গাড়ি সন্ধ্যার পরে হলেও তারা আগেভাগে গিয়ে টার্মিনালে বসে আছেন। এমন এক যাত্রী ছিদ্দিক জানালেন, অফিস থেকে আর বাসায় যাননি। স্ত্রী-সন্তানদের টার্মিনালে চলে আসতে বলেছেন, আর তিনি সোজা অফিস থেকে টার্মিনালে এসেছেন। টার্মিনালেই ইফতার সেরে গাড়িতে উঠবেন। গাবতলী থেকে একাধিক যাত্রী জানিয়েছেন, আমিন বাজারে প্রচ- যানজট। এই জটে তাদেরকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পাে ফেরিঘাটগুলোতেও বাড়তি চাপ পড়েছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার মানুষের বেশি ভোগান্তি হয়েছে রাজধানীর যানজটে। ঘরমুখো মানুষগুলো বাসা থেকে বের হয়ে বাস টার্মিনালে যেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় যানজটে আটকে থাকেন। অনেকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছেন। গতকাল সন্ধ্যার দিকে পল্টন থেকে অনেককেই পায়ে হেঁটে সদরঘাটে যান।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে স্বস্তি : ঈদকে সামনে রেখে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। প্রতি বছরই ঈদে সড়ক, নৌ এবং রেলপথে ঘরে ফিরতে গিয়ে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পরিবহন সংকট, ভাঙাচোরা রাস্তা, সড়ক দুর্ঘটনা ও দীর্ঘ যানজটের মতো ঘটনা লেগেই থাকে সড়কে। নৌপথে ফেরি সঙ্কটে দৌলতদিয়া, পাটুরিয়া এবং শিমুলিয়া ঘাটে ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়ে হাজার হাজার যানবাহন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার খুবই ভালো অবস্থায় রয়েছে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। অর্থনীতির লাইফলাইনখ্যাত এ মহাসড়কের বিষফোঁড়া ছিল তিনটি সেতু- কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী। কয়েকদিন আগে দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু উদ্বোধনের পর খুলে দেয়া হয়েছে। গত মার্চে খুলে দেয়া হয়েছে দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু। শুক্রবার খুলেছে কাঁচপুর ফ্লাইওভার। এর আগে ভুলতা ফ্লাইওভারের একটি অংশ খুলে দেয়া হয়েছে। নতুন করে তিনটি সেতু চালু হওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গত কয়েকদিন ধরেই কোনো যানজট নেই। অনায়াসে মাত্র চার ঘণ্টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসা-যাওয়া করা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন ঈদেই এবার এ মহাসড়কের যাত্রীদের কোনো ভোগান্তি পোহাতে হবে না। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ভুলতা অংশে যানজট আছে। তবে এ যানজটের জন্য অব্যবস্থাপনাই দায়ী। পুলিশ একটু সক্রিয় হলেই এ যানজট উপেক্ষা করা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের ঈদযাত্রায় শঙ্কা : আসন্ন ঈদে সড়ক পথে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের বাড়ি ফেরা এবারও খুব একটা স্বস্তিদায়ক হবে না। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ৬ লেন উন্নয়নের কাজ চলায় বিড়ম্বনায় পড়তে হবে যাত্রীদের। আর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে দীর্ঘ পথে সড়কের পাশের মাটি সরে যাওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে এই দুই মহাসড়কে কয়েকগুণ অবৈধ যানবাহনের দৌরাত্ম বেড়েছে।
জানা গেছে, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঢাকার বাবুবাজার থেকে শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ঘাট হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার মহাসড়ক ২ লেন থেকে ৬ লেনের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। মহাসড়কের কাজে বিপুল সংখ্যক গাড়ি ও মালামাল লোড-আনলোড করায় এবারের ঈদে যাত্রীদের ভোগান্তির শঙ্কা রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কের সেতু ও কালভার্টগুলো ভেঙে ডাইভারশন তৈরি করায় যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। রয়েছে কর্দমাক্ত পরিবেশও। এছাড়া মালিগ্রাম, পুলিয়া ও বগাইল এলাকায় এখনও সড়কের কাজ চলছে।
এদিকে জরাজীর্ণ ও ভাঙ্গাচুরার কারণে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গত কয়েক বছরের ঈদসহ সারা বছরই দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহালেও এবার অনেকটাই স্বস্তি রয়েছে। মহাসড়কটির টেকেরহাট থেকে মোস্তফাপুর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার অংশ সংস্কার করায় কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বড়ইতলা থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার অংশ এবং মোস্তফাপুর থেকে ভুরঘাটা পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার অংশ আগেই সংস্কার হওয়ায় পরিস্থিতি মোটামুটি সহনীয়।
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মালিগ্রাম ও পুলিয়া, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বড়ইতলা, ভুরঘাটাসহ কয়েকটি স্থানে অস্থায়ী বাজার রয়েছে। দুই লেনের সরু অতি ব্যস্ত মহাসড়কজুড়েই পাশের এজিনের মাটি সরে যাওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। রয়েছে অবৈধ যানবাহনের ছড়াছড়িও।
প্রস্তুত আরিচা-পাটুরিয়ায় ফেরি সেক্টর : দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ টি জেলার প্রবেশদ্বার পাটুরিয়া – দৌলতদিয়ায় ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিআইডব্লিউটিসি ওই রুটে ১৮ টি ফেরি প্রস্তুত রেখেছে। এর মধ্যে ১০ টি রো রো, ১টি মিডিয়াম এবং ৭টি ইউটিলিটি ফেরি রয়েছে। আরো ১টি রো রো এবং ১টি কে-টাইপ ফেরি দু’একদিনের মধ্যে ফেরি বহরে যুক্ত হবে। পাটুরিয়া ৪টি ঘাট ও দৌলতদিয়া ৬টি ঘাটের মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হবে বলে বিয়াইডব্লিউটিসির ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম জানান। মোট ২০টি ফেরি ঈদ উপলক্ষে পারাপারে নিয়োজিত থাকবে।
যানজট নেই শিমুলিয়ায় : ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের বাড়িফেরা শুরু হলেও মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ঘাটে যানবাহনের তেমন কোনো চাপ নেই। শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৭০০ যান পারাপার করা হয়েছে। পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে ২ শতাধিক ছোট যানবাহন।
এদিকে যাত্রীদের নির্বিঘেœ পারাপার করতে নৌরুটে যুক্ত করা হয়েছে আরো তিনটি ফেরি।
শিমুলিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম জানান, ঘাটে যানবাহনের চাপ স্বাভাবিক। মহাসড়কে ট্রাক আটকে রাখা হচ্ছে। পরে সুযোগ বুঝে ট্রাক পার করা হবে। এমতাবস্থায় ঘাটে প্রায় অর্ধশত ট্রাক রয়েছে। যা দ্রুত সময়ের মধ্যে পার করা সম্ভাব হবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডাব্লিটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) প্রফুল্ল চৌহান জানান, কিছু ফেরি ডকে ছিল। মেরামত করে সেখান থেকে তিনটি ফেরি এ নৌরুটে দেয়া হয়েছে। এখন মোট ১৮টি ফেরি যানবাহন পারাপার করবে। গাড়ির চাপ স্বাভাবিক আছে। কোনো সমস্যা হবে না আশা করি।
এদিকে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে গাড়ির চাপও স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন হাঁসাড়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গোলাম মোর্শেদ তালুকদার।
তিনি জানান, মহাসড়কে ছোট গাড়ির একটু চাপ আছে। সেটা প্রতি শুক্রবারই থাকে। এছাড়া বড় গাড়ির তেমন কোনো চাপ নেই। যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।
যাত্রীর চাপ বাড়েনি সদরঘাটে : ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নৌপথে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন মানুষ। সদরঘাটে যাত্রীদের চাপ তেমন বাড়েনি। তবে মানুষের কিছুটা ভিড় আছে।
শুক্রবার সদরঘাট থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কয়েকটি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। টিকিট বিক্রেতাদের মতে, আজ সন্ধ্যা বা রাত নাগাদ চাপ বাড়তে পারে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সদরঘাটে চাঁদপুর টার্মিনালে যাত্রীদের চাপ কিছুটা রয়েছে। ঢাকা থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশে ৯টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের চাপ কিছুটা কমে যায় চাঁদপুর টার্মিনালে।
চাঁদপুরগামী লঞ্চের যাত্রী আমিন আহমেদ জানান, কোনো বাড়তি ভাড়া নেয়া হচ্ছে না। ভাড়া আগের মতোই। সিঙ্গেল কেবিন ৫০০, ডাবল কেবিন ৭০০ টাকা নেয়া হচ্ছে।
চাঁদপুরগামী ময়ূর লঞ্চের টিকিট বিক্রেতা মুসা জানান, যাত্রীদের চাপ এখন কিছুটা কম। যাত্রী হলেই আমরা লঞ্চ ছাড়ব। ভাড়া আগের মতোই।
সদরঘাটে চাঁদপুর টার্মিনালের দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা হেদায়েত উল্লাহ জানান, চাঁদপুরের উদ্দেশে ইতোমধ্যে ৯টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। আরও লঞ্চ ঘাটে রয়েছে। যাত্রী পরিপূর্ণ হলেই লঞ্চগুলো ছেড়ে যাবে।
অতিরিক্ত যাত্রী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। আমাদের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে, অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে লঞ্চে উঠতে দেব না।
ঠিক ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে বরিশাল টার্মিনালে। অনেকটাই ফাঁকা ছিল সদরঘাটের বরিশাল টার্মিনাল। শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বরিশালের উদ্দেশে ঢাকা থেকে মাত্র ৩টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বরিশাল রুটে তিনটি লঞ্চ ছেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ধারণক্ষমতার চেয়ে বাড়তি যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছাড়তে দেব না, এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।
জানা গেছে, ঈদে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার ৪৩টি নৌ রুটে ২১৫টি লঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজনে বিশেষ সার্ভিস দেয়ার জন্যও তারা প্রস্তুত। প্রয়োজন মতো লঞ্চ চালু রাখা হবে।
বরিশালগামী লঞ্চের যাত্রী, বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, টানা ছুটি পেয়েছি। ঈদের আগে আর অফিস করব না। বৃহস্পতিবার অফিস থেকে আগামী সোমবারের জন্য ছুটি নিয়েছি। লঞ্চে ভিড় না থাকায় আজ বাড়ি যাচ্ছি।