সাজেদ রহমান : সন্ধ্যা নেমেছে, বৃষ্টি হচ্ছে টিপটিপ। কাঁচা রাস্তা। তাঁর আগেই ঘোড়ার গাড়ি প্রস্তুত। ঘোষনা হলো বাংলা ভাগের। যশোরের চৌগাছা পড়েছে পাকিস্তানের দিকে। তাই থাকবেন না মানিক হালদার। জমিদার তিনি। চোখের জল মুছতে মুছতে ঘোড়ার গাড়িতে উঠলেন মানিক হামলাদারের মা। বললেন-‘দুগ্গা, আমি যেন এখানে আবার আসতে পারি।’ তিনি আর আসতে পারিনি।
আঠারো শতকের শেষের দিকে তৈরি করেছিলেন সুন্দর বাড়ি। সঙ্গে নাট মন্দির। তিনি ভাবেননি আর আর কয়েক বছর পর এই বাড়ি ফেলে চলে যেতে হবে।
বলছিলাম চৌগাছার স্বরুপপুরের জমিদার মানিক হালদারের কথা। নিজ গ্রামে তৈরি করছিলেন বিশাল বাড়ি। বাড়ি সংলগ্ন স্থানে বড় নাট মন্দির।
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা ভাগ। আগস্টেই বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। রাতের আঁধারে ঘোড়ার গাড়িতে করে চলে গেলেন কলকাতা। বাড়ি, নাট মন্দির ফেলে পালিয়ে গেলেন জমিদার মানিক হালদারের পরিবার। চলে যাবার সময় চৌগাছার স্বরুপপুরে ছিল মানিক হালদারের বাড়ি। তার ভাইয়ের নাম গৃজা হালদার। মানিক হালদারের কয়েক পুত্র ছিল। এরা হলেন মৃণাল কান্তি হালদার, শরৎ কান্তি হালদার, গৌয়ুর বাবু হালদার। আর একজনের নাম বলতে পারেননি এলাকার মানুষ। গৃজা হালদারের পুত্র ছিল রণজিৎ হালদার।
স্থানীয় মানুষ বলছেন-দেশভাগের পর তারা কয়েক বছর এলাকায় এসেছিলেন পুজার সময়। পরে আর আসেনি। এখন সেখানে বাস করে ভারত থেকে আসা কয়েকটি পরিবার।