নিজস্ব প্রতিবেদক : কলকাতায় গাড়িচাপায় নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনী-বিএসএফ। রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দুই দেশের কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে লাশ দুটি হস্তান্তর করা হয় বলে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের পরিদর্শক মাসুম বিল্লাহ জানান। শুক্রবার মধ্যরাতে কলকাতার লাউডন স্ট্রিটের কাছে গাড়ি চাপায় মৃত্যু হয় গ্রামীণফোনের রিটেইল সাপোর্ট ম্যানেজার কাজী মুহাম্মদ মঈনুল আলম (৩৬) ও সিটি ব্যাংকের ধানম-ি শাখার সিনিয়র কর্মকর্তা ফারহানা ইসলাম তানিয়ার (২৮)। একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে গতকাল রোববার সকালে তাদের লাশ বেনাপোল চেকপোস্টে নিয়ে আসা হয়। পরে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে কফিন বুঝিয়ে দেওয়া হয় অপেক্ষায় থাকা স্বজনতের কাছে। পরিদর্শক মাসুম বিল্লাহ জানান, কুষ্টিয়ার খোকশা উপজেলার চান্দুর গ্রামের মুন্সি আমিনুল ইসলামের মেয়ে তানিয়ার লাশ বুঝে নেন তার চাচাতো ভাই আবু ওবায়দা শাফিন। আর ঝিনাইদহের বুটিয়াঘাটি গ্রামের কাজী খলিলুর রহমানের ছেলে মঈনুলের লাশ তার চাচাতো ভাই জিহাদ আলীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। কলকাতার সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, শুক্রবার রাতে একটি জাগুয়ার তীব্র গতিতে শেক্সপিয়র সরণি ধরে বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামের দিক থেকে কলামন্দিরের দিকে যাচ্ছিল। লাউডন স্ট্রিটের কাছে সেটি একটি মার্সিডিজকে সজোরে ধাক্কা মেরে রাস্তার পাশে ট্রাফিক পুলিশের একটি পোস্টে ঢুকে পড়ে। মঈনুল, তার চাচাত ভাই মো. শফী রহমত উল্লাহ এবং তানিয়া তুমুল বৃষ্টির মধ্যে ওই পুলিশ পোস্টে আশ্রয় নিয়েছিলেন। গাড়িটি মঈনুল ও তানিয়াকে চাপা দেয়। শফীও আঘাত পান। রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মঈনুল ও তানিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, চোখের চিকিৎসার জন্য কলকাতায় গিয়েছিলেন মঈনুল। তার সঙ্গে থাকা শফী বলেন, ওই পুলিশ পোস্টে দাঁড়িয়ে তারা ট্রাক্সির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় হঠাৎ একটি গাড়ি উল্টে এসে তাদের ওপর পড়ে। ওই ঘটনায় কলকাতার নামি রেস্তোরাঁ আরসালান-এর মালিকের ছেলে পারভেজ আরসালানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনার সময় পারভেজের জাগুয়ারটি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চলছিল। আর তিনি নিজেই তখন চালকের আসনে ছিলেন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
মইনুলের দাফন সম্পন্ন: কলকাতার সেক্সপিয়ার সরণিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ঝিনাইদহ পৌর এলাকার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের কাজী মইনুল আলমের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রোববার বাদ জোহর পারিবারিক গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। তিনি ঝিনাইদহ পৌর এলাকার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের অ্যাডভোকেট খলিলুর রহমানের ছেলে। তিনি গ্রামীণ ফোনের ঢাকার মতিঝিল এলাকার এরিয়া ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরআগে, সকালে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সোহাগের লাশ বাংলাদেশে আনা হয়। তার চাচাতে ভাই জিহাদ লাশটি গ্রহণ করেন। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে সোহাগের লাশ বাড়িতে এসে পৌঁছায়। তখন বাড়িতে বৃদ্ধ মা-বাবা, স্ত্রী, ভাই-বোনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।