চট্টগ্রাম প্রতিবেদক : রাজধানীতে ক্যাসিনোর পর চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্লাবে আইশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান ইস্যুতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেছেন, ‘কেউ যদি বলেন, ক্লাব চালানোর জন্য জুয়ার আসর প্রয়োজন, আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ক্লাব চালাতে জুয়ার আসর বসাতে হয় না। ক্লাব করি নির্মল বিনোদনের জন্য। এটি পবিত্র অঙ্গন। এটি অপবিত্র করার অধিকার কারও নেই।’
সোমবার চট্টগ্রাম নগরের দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতিবিরোধী সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে দেন।
মেয়র বলেন, নিজের সামর্থ্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের থেকে নিয়ে ক্লাব পরিচালনা করতে হবে। জুয়ার আসর বসিয়ে, মদের আসর বসিয়ে, ক্যাসিনো বসিয়ে ক্লাব পরিচালনার কথা কোথাও নেই। সংবিধান এবং ইসলামেও জুয়া নিষিদ্ধ। এটা জায়েজ করার সুযোগ নেই।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্লাবে রাব-পুলিশের অভিযানের পর এর ধরন ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সরকারি দলের সংসদ সদস্য ও সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী।
তিনি সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘লোকোরা তাস খেললে বোর্ড মানি দেয় ক্লাবকে। এসব পয়সা ক্লাবের কাজে ব্যবহার হয়। ফুটবল ফেডারেশন বা অন্য কোনো সংস্থা তো ক্লাবকে টাকা দেয় না। এভাবে যদি অভিযান চালানো হয়, তাহলে লোকজন খেলাধুলা ছেড়ে চলে যাবে। ক্লাবের তাস খেলা বন্ধ করে কোনো লাভ হবে না। তাস খেলা বন্ধ করলে ছেলেরা রাস্তায় ছিনতাই করবে। এখানে কোনো ক্যাসিনো নেই।
শামসুল হক চৌধুরী চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের মহাসচিব। তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।
মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন হুইপের বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, ‘আমিও ক্লাব চালাই, ১৯৮৫ থেকে। আমি চট্টগ্রাম ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। এখন দীর্ঘদিন যাবৎ সভাপতি। এ ক্লাব অনেকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমি ক্লাবঘর করছি না। কারণ ক্লাবঘর করলে কেউ না কেউ অবৈধ কাজ করবে। আমাদের ক্লাব এ ধরনের ফালতু কাজের সঙ্গে জড়িত নয়।’
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রিয়ভ্রাতা শেখ কামাল, যিনি অনেক বড় ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন, উনার নাম ব্যবহার করে জুয়ার আসর বসিয়ে ক্লাব চালাবে- এটার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এখানে বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ নেই। যারা জুয়ার বোর্ড বসাবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আকতার, যুগ্ম জেলা জজ জাহানারা ফেরদৌস, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক তপন কান্তি শর্মা, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এস এম সোহেল প্রমুখ।