নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে করোনার বিস্তাররোধে সরকারের নেয়া জেলা পর্যায়ের সব কার্যক্রম তদারকি করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবরা। তারা জেলা পর্যায়ের সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে কী না তাও দেখভাল করবেন। দরকার হলে করোনা পরীক্ষার জন্য ল্যাব স্থাপনের পদক্ষেপ নেবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা, জেলায় জেলায় আইসিইউ স্থাপনেরও ব্যবস্থা করবেন সচিবরা। প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেটর সরবরাহের জন্য পদক্ষেপ নেবেন। এছাড়া চলমান লকডাউনের মধ্যে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের জন্য সরকারি ত্রাণ বিতরণে কোনো অনিয়ম থাকলে তা বন্ধের জন্য পদক্ষেপ নেবেন। গতিশীলভাবে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় জন্য দরকারি দিক নির্দেশনা দেবেন। এক কথায় কেন্দ্র ও মাঠ পর্যায়ে করোনা ও ত্রাণ কার্যক্রম সার্বিক ভাবে তদারকি করবেন সরকারে সিনিয়র সচিব ও সচিবগণ।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের (সদস্য) সচিব এবং ভোলা জেলার করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমরা করোনা বিস্তাররোধ এবং ত্রাণ কার্যক্রম তদারকি করবো। যেখানে যা লাগে তা সরবরাহে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সুপারিশ করবো। ইতোমধ্যে ভোলায় একটি করোনা টেস্টিং ল্যাব স্থাপনের অনুমোদন নিতে সক্ষম হয়েছি। এছাড়া আইসিইউ স্থাপন এবং ভেন্টিলেটর নেয়ার ব্যবস্থা করবো। এক কথায় করোনায় আক্রান্তদের যেন জেলা থেকেই ভালো চিকিতসা দেয়া যায় সেই ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।
তিনি আরো বলেন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যারা দায়িত্বপালন করছেন তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজগুলো করবো। তাদেরকে দরকারি দিক নির্দেশনা দেবো। যেহেতু তারা মাঠে কাজ করছেন তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ নেবো। জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে পরামর্শ দেবো।
চলমান ত্রাণ কার্যক্রম যাতে সঠিকভাবে সম্পন্ন হয় তা তদারকি করবো। চুরি রোধে পদক্ষেপ নিতে মাঠ পর্যায়ে কর্মরতদের পরামর্শ দেবো। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় নেতা, সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানগণের কাছ থেকে সার্বিক সহযোগিতা নেবো।
গত সোমবার করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে জেলা পর্যায়ে চলমান ত্রাণ কার্যক্রম সুসমন্বয়ে ৬৪ সচিবকে দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ৬৪ জেলার জন্য সিনিয়র সচিব ও সচিবদের মধ্যে সমন্বয় করে একটি করে জেলার দায়িত্ব দিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবরা সমন্বয় কাজে তার মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দফতর, সংস্থার উপযুক্ত সংখ্যক কর্মকর্তাকে সম্পৃক্ত করতে পারবেন।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। এছাড়া কর্মহীন ও দুস্থ মানুষকে দেওয়া ত্রাণ বিতরণে নানা অনিয়মের খবর শোনা যাচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৩৪ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ৯ জন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, নিয়োগ করা কর্মকর্তাগণ জেলার সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করে করোনা সংক্রান্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার কাজ তত্ত্বাবধান ও পরিবীক্ষণ করবেন। জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিবীক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করবেন।
এতে আরও বলা হয়, সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত সমস্যা,চ্যালেঞ্জ অথবা অন্যবিধ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়,বিভাগ,দফতর,সংস্থাকে লিখিতভাবে জানাবেন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে নিয়মিত অবহিত করবেন।
এর আগে সোমবার করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সচিববৃন্দ রয়েছেন। যেহেতু এখন মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো অনেকটা সীমিত হয়ে গেছে, তাই একেকটা জেলায় একেকজন সচিবকে দায়িত্ব দিয়েছি, ত্রাণ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার কাজগুলো যথাযথভাবে হচ্ছে কিনা, তারা সে সব জেলায় খোঁজখবর নেবেন এবং সেই রিপোর্টটা আমাকে দেবেন।