করোনায় মৃতের সংখ্যা ১৭০, আক্রান্ত আট হাজার ২৩৮

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন সারাদেশ স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৭০ জনে। আক্রান্ত হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৫৭১ জন। ফলে দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল আট হাজার ২৩৮ জনে। শুক্রবার (১ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।


বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচ হাজার ৯৫৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৭৩টি। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭০ হাজার ২৩৯টি। নতুন যাদের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, তাদের মধ্যে আরও ৫৭১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আট হাজার ২৩৮ জন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও দুজন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭০ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও ১৪ জন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৭৪ জন।

ব্রিফিংয়ের শুরুতে তিনি করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে যেসব প্রতিষ্ঠান বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে, তাদের নাম উল্লেখ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় বুলেটিনে।

শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের প্রতিটি দেশের স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বারবার করণীয় বাতলে দিলেও থেমে নেই করোনার বিস্তার। প্রতিদিনই বাড়ছে এতে সংক্রমণের সংখ্যা। এই সংখ্যা এখন ছাড়িয়ে গেছে ৩৩ লাখ। এর এতে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষের। এতে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত যুক্তরাষ্ট্রে গেল ২৪ ঘণ্টায়ই প্রাণ হারিয়েছেন দুই সহস্রাধিক মানুষ। তবে আশার বাণী হলো, এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তদের প্রায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

আজ মহান মে দিবস। কর্মক্ষেত্রে বঞ্চনা আর শ্রমঘণ্টা কমানোর দাবি নিয়ে আন্দোলনের ফসল হিসেবেই শ্রমিকদের কর্মঘণ্টা নির্ধারিত হয়েছিল ৮ ঘণ্টায়। শ্রমিকদের বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছেন এমন দাবিই ছিল তখন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে কর্মহীন আর লকডাউনে ঘরে বসে থাকতে থাকতে আজ যেন শ্রমিকরা অনেকটাই ক্লান্ত।

যে দেশে কর্মঘণ্টা কমানোর দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল সেখানেই আজ আন্দোলন হচ্ছে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করতে দিতে। করোনার কারণে লকডাউন হওয়ায় বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই জরুরি প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান বাদে সব কিছুই এখন বন্ধ। আর এই বন্ধের কারণে বেশিরভাগেরই আয়ের পথও বন্ধ হয়ে গেছে।

তাই এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় যেই আন্দোলন হচ্ছে তার মাত্রাটা যুক্তরাষ্ট্রে যেন একটু বেশিই। কারণ দেশটির মিশিগান প্রদেশে গতকাল সাধারণ জনতা লকডাউন খুলে দেয়ার জন্য বিক্ষোভ করেছেন বন্দুক উঁচিয়ে। আর বিক্ষোভের মাত্রাও ছিল ভয়ংকর। কারণ তারা বন্দুক নিয়ে বিক্ষোভ করতে করতে ঢুকে পড়েছিলেন আইনপ্রনেতাদের ভবনে। তবে কোনো ধরণের হতাহতের ঘটনা ছাড়াই সেই বিক্ষোভ দমাতে সক্ষম হয় পুলিশ।

প্রতিবছর এই দিনে দেশে শ্রমিকরা নানা কর্মসূচি পালন করলেও এবার স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বাতিল করা হয়েছে সব ধরণের সভা সমাবেশ। শ্রমিকরাও সেভাবেই পালন করছেন দিনটি।

সরকারি ছুটির এই দিনটিতে কাজ থেমে নেই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কর্মরতদের। প্রতিদিনের মতো আজও তারা করোনার আপডেট নিয়ে হাজির হয়েছেন সাধারণের সামনে। শত বিতর্ক থাকলেও সংস্থাটি নিয়মিতই জানিয়ে যাচ্ছে করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি। মনে করিয়ে দিচ্ছে, করোনা থেকে বাঁচতে কী কী করতে হবে সবাইকে।