মানবিক সহায়তার নতুন রেকর্ড

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন

৫০ লাখ পরিবার পেল নগদ অর্থ, শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস মহামারির জন্য ৫০ লাখ হতদরিদ্র ও কর্মহীন পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছে সরকার। এর পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং পরিসেবার দ্বারা স্নাতক ও সমমান পর্যায়ের ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের হিসাবে সরাসরি নগদ অর্থ প্রেরণ করছেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় তিনি বলেন, দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছিলো, তখনই অদৃশ্য শক্তির আঘাতে হোঁচট খেতে হলো। বিশ্বের সব মহাশক্তিশালী দেশ এ শত্রুর সামনে অসহায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা এমন এক অদৃশ্য শক্তি যার কাছে সকলকে মাথা নত করতে হয়েছে। করোনার প্রভাবে আজ জীবন যাত্রা অচল। এমন ঘটনা পৃথিবীতে আর ঘটেনি। তবে, এর মধ্যেও যেভাবে যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ সবাই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। দেশে যখন করোনার মহামারি খারাপ রূপ ধারণ করলো তখন, আমার নির্দেশে দলের সদস্যরা যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, কৃষকের ধান কেটে দিয়েছেন তা প্রশংসনীয়।
সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা পারেন নিজ নিজ জায়গা থেকে ঘরে থাকুন।
করোনাভাইরাস দুর্যোগ মোকাবেলায় বিত্তবানদের আরো বেশি সাহায্য করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ভিডিও কনফারেন্সে বলেন, আশেপাশের দরিদ্র মানুষের সাহায্য করুন। তাদের পাশে দাঁড়ান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে শিল্পকারখানার উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে, আমদানি-রপ্তানি সীমিত হয়ে পড়েছে। তাই এক ইঞ্চি জমি অনাবাদি রাখা যাবে না। ফসল ফলাতে হবে।
মানবিক সহায়তার নতুন রেকর্ড :মানবিক সহায়তার নতুন রেকর্ড তৈরি করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে আড়াই হাজার টাকা করে নগদ অর্থ সহায়তা পাচ্ছে করোনাভাইরাসের কারণে সারাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবার। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে ও বর্তমান বিশ্বে এটি রেকর্ড।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন তার কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
একটি ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে ১৯৭২ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মানবিক সহায়তা কর্মসূচিগুলো তুলে ধরা হয়। ওই ভিডিওটিতে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং চলমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তার গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরা হয়।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, আজকে যে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি আপনি (শেখ হাসিনা) উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, পৃথিবীর ইতিহাসে এটি বিরল যে, একসঙ্গে এতগুলো মানুষ মানবিক সহায়তা পাওয়া। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর বাংলাদেশে আপনিই প্রথম এতসংখ্যক মানুষকে একসঙ্গে মানবিক সহায়তা প্রদান করছেন।
ভিডিওচিত্র থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, প্রতি পরিবারে ধরা হয়েছে চারজন সদস্য। সেই হিসেবে এই নগদ সহায়তায় উপকারভোগী হবে প্রায় দুই কোটি মানুষ। এজন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এক হাজার ২৫০ কোটি টাকা। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, গ্রামের মেম্বার, শিক্ষক, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি এই তালিকা তৈরি করেছেন।
ভাতা পাওয়ার তালিকায় আছেন রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, নির্মাণশ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, দোকানের কর্মচারী, ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসায় কর্মরত শ্রমিক, পোল্ট্রি খামারের শ্রমিক, বাস-ট্রাকের পরিবহন শ্রমিক ও হকারসহ নি¤œআয়ের নানা পেশার মানুষ।
তালিকাভুক্তদের মধ্যে নগদ, বিকাশ, রকেট, এবং শিউরক্যাশের মাধ্যমে সরাসরি চলে যাবে এই টাকা। ফলে বাড়তি কোনো ঝামেলা পোহাতে হবে না তাদের। টাকা পাঠানোর খরচ বহন করবে সরকার। এই টাকা উত্তোলন করতে ভাতাভোগীদের কোনো খরচ দিতে হবে না। এই ৫০ লাখ পরিবারের বাইরে আরও ৫০ লাখ পরিবারের প্রায় দুই কোটি সদস্য আগে থেকেই রয়েছে ভিজিএফ কার্ডের আওতায়। এছাড়াও রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, শিক্ষা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা।


বিজ্ঞাপন