করোনায় আক্রান্ত বাড়ছেই

স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বব্যাপী মহামারি রূপ নেয়া করোনাভাইরাসের তান্ডবে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। বাংলাদেশেও আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ১ হাজার ২৭৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল সংখ্যা ২২ হাজার ২৬৮ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩২৮ জনে। রোববার দুপুরে করোনা ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, মৃত্যুবরণকারী ১৪ জনের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ, একজন নারী। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগের ৯ জন এবং চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচ জন। ১৪ জনের মধ্যে শুধু হাসপাতালেই মারা গেছেন ১৩ জন এবং বাসায় একজন। আর অঞ্চল বিবেচনায় ঢাকা শহরে মারা গেছেন পাঁচ জন, চট্টগ্রাম শহরে চার জন, সাভার ও কেরানীগঞ্জে একজন করে এবং নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও শরীয়তপুরে একজন করে মারা গেছেন।
মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে তিন জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে তিন জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে দুই জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে তিন জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন।
নাসিমা সুলতানা জানান, ৪২টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ ছিল ৮ হাজার ৫৭৪টি। পরীক্ষা করা হয়েছে ৮ হাজার ১১৪টি। এখন পর্যন্ত এক লাখ ৭৫ হাজার ৪০৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ২৭৬ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন তিন হাজার ২৪৮ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৪ জন। এখন পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন এক হাজার ৬০৪ জন।
তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে তিন হাজার ৬৩৪ জনকে। এখন পর্যন্ত দুই লাখ ৪০ হাজার ৫৪৮ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন দুই হাজার ৩৫৮ জন, এখন পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন এক লাখ ৯১ হাজার ৫৩১ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৯ হাজার ৪১৭ জন।
ডিসেম্বরে প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে বেশিরভাগ দেশই ভাইরাসটিতে তেমন পাত্তা দেয়নি। অনেক দেশই ধারণা করেছিল, এটি চীনা ভাইরাস এবং এর সংক্রমণ হয়তো ইউরোপ-আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়বে না। এজন্য সেখানকার দেশগুলো তেমন কোনো পদক্ষেপও নেয়নি। ফলও দিতে হচ্ছে তাদের।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার। ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে।
পঞ্চম দফায় সেই ছুটি বাড়ানো হয় ৫ মে পর্যন্ত। তার আগেই আরেক দফা ছুটি বাড়িয়ে ১৬ মে পর্যন্ত করা হয়। চলমান এ ছুটি আরেক দফা বাড়ি ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়েছে।
এদিকে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার তথ্যানুযায়ী, রোববার সকাল পর্যন্ত বিশ্বের ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার ২৪৫ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হয়েছে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৩ লাখ ১৩ হাজার ৩৮৪ জন। অন্যদিকে শনাক্তদের মধ্যে ১৮ লাখ ১৭ হাজার ৮৮৪ জন সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন।


বিজ্ঞাপন