বিশেষ প্রতিবেদক : জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সহযোগিতায় বাংলাদেশে একটি গ্রামকে মুসলিম ভিলেজ বানিয়ে সেখান থেকে তাদের কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা আঁটছিলো জঙ্গিরা। মুসলিম ভিলেজের কনসেপ্ট হলো- সেখানে আল্লাহর আইন হবে, মানুষের বানানো কোনো নীতিতে গ্রাম চলবে না, কেউ সরকারকে কোনো খাজনা দেবে না। সংগঠনের সদস্যরা গ্রাম পর্যায় থেকে তাদের সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে চায়। আর পরিকল্পনা অনুযায়ী মুসলিম ভিলেজ প্রতিষ্ঠা করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা আছে। সে জন্যে জঙ্গিরা সশস্ত্র প্রতিরোধের জন্য অস্ত্র, বিস্ফোরক ও ইমপ্রোভাইজড বোমা তৈরির সরঞ্জামাদি সংগ্রহ, তৈরির চেষ্টাসহ নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
গত শনিবার বিকালে পাবনার শহর থেকে আব্দুল্লাহ আকাশ নামের এক জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-২। এ সময়ে তার ঘর থেকে ইমপ্রোভাইজড বোমা তৈরি সরঞ্জাম, ১৫টি মোটর, সার্কিট, ট্রান্সমিটার, তামার তার, এডপটার, কাটার মেশিন, হেক্সো ব্লেড, স্কেল, ড্রিল মেশিন, গ্র্যান্ডিং মেশিন, পাইপ, স্কচটেপ বৈদ্যুতিক তার, তারকাঁটা উদ্ধার করা হয়। সেই সাথে তার দখল থেকে বিভিন্ন শিরোনামে ১৫ সেট উগ্র জঙ্গিবাদী বই, পিডিএফ ডক্যুমেন্টস ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ‘মুসলিম ভিলেজ’ তৈরির চেষ্টার বিষয়ে জানান র্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মহিউদ্দিন ফারুকী।
র্যাব-২ এর একটি সূত্র জানায়, চলতি বছরের গত ২৯ জানুয়ারি মুন্সিগঞ্জের সদর থানার মাঠপাড়া সাকিনের হরগঙ্গা কলেজের পিকলুছ ভিলা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তিন সদস্যদেরকে বিস্ফোরক দ্রব্য ও উগ্র জঙ্গিবাদি বইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। ওই আসামিরা তাদের সংগঠনে যোগদানের ব্যাপারে নিন্ম ও মধ্যবিত্ত পরিবারের কোমলমতি যুবকদের উদ্বুদ্ধ করে সংহতি ও জননিরাপত্তা বিপন্ন, জনগণের জানমালের ক্ষতি সাধন করার জন্য বিষ্ফোরক পদার্থ, জিহাদি বই, প্রচার পত্র নিজেদের দখলে রেখে ও বিলি করার চেষ্টার মাধ্যমে নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা এবং একে অপরের যোগসাজশে অপরাধ সংগঠন সহ জন্য সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে মুন্সীগঞ্জে সমবেত হয়েছিল। আটক ও পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে মুন্সিগঞ্জের সদর থানায় একটি মামলা করা হয়।
র্যাব-২ এর ওই সূত্রটি জানায়, র্যাব-২ মামলাটির তদন্ত করে মো. আবু রায়হান লিমন, মো. সাইফুল্লাহ নাঈম, নাবিল চোকদার, শাফাত আহাম্মদ চৌধুরী কিয়বিয়া, সাকিব আল ইমতিহান ওরফে আবু মুছা, মুহিব মুশফিক ও ৭। নাজমুস সাদাত ফাহিদের দফায় দফায় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের পলাতক সহযোগিদের নাম-ঠিকানা ও তাদের পরিকল্পনা উদঘাটন করে। পরে গত শনিবার বিকালে পাবনা জেলার বিসিক শিল্প এলাকার সামনে কলাবাগান মাঠপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তদন্তে প্রাপ্ত আসামি আব্দুল্লাহ আকাশকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব-২ এর ওই সূত্রটি জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আবদুল্লাহ আকাশ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য হওয়ায় এবং তার দখল থেকে নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক জড়িত থাকার জন্য ইলেকট্রনিক বোমা তৈরির সরঞ্জাম, বোমা তৈরির ম্যানুয়াল, বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত হ্যান্ডবুক, মোবাইলে থাকা উগ্র জঙ্গিবাদ সম্পর্কিত তার সহযোগিদের সম্পর্কে তথ্য জানতে আকাশের সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছে র্যাব।