সাহিত্যকে বাদ দিয়ে জীবন নয় : মিলন কান্তি দাস

সাহিত্য

শাহ ইসমাইল সিলেট ব্যুরো: “ মিলন কান্তি দাস”- পেশায় একজন শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি সাহিত্য চর্চায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। এছাড়া তিনি ২০০৩ সাল থেকে তিনি সিলেটের স্থানীয় পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখে আসছেন।তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি একজন কবি,ছড়াকার,প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।ইতিমধ্যে অমর একুশে বইমেলায় তার দুইটি বই প্রকাশিত হয়েছে।শিক্ষাজীবনে তিনি হিসাববিজ্ঞান বিভাগে সম্মান সহ স্নাতকোত্তর এবং আইন বিষয়ে এলএলবি ডিগ্রী অর্জন করেছেন।তার জন্মস্থান সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলার ডালাইচর গ্রামে।
সম্প্রতি আমাদের সিলেট ব্যুরো শাহ ইসমাইলের সাথে সাহিত্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একান্ত আলাপচারিতায় মিলিত হন।সাক্ষাতকারটি নিচে তুলে ধরা হলোঃ


বিজ্ঞাপন

শাহ ইসমাইল: কেমন আছেন-?
মিলন কান্তি দাসঃ হ্যা,মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় ও আপনাদের দোয়া ভালোবাসায় ভালোই আছি।


বিজ্ঞাপন

শাহ ইসমাইল: অবসর সময় কিভাবে কাটছে-?
মিলন কান্তি দাসঃ করোনার কারনে বিগত প্রায় ৩ মাস ধরে গৃহবন্দী জীবন কাটছে। বেশীরভাগ সময়ই লিখালিখির কাজে ব্যাস্ত থাকি।লিখালিখির ব্যাস্ততাই আমাকে এ সময়ে ভালো রেখেছে।

শাহ ইসমাইরল: বিগত দুই বছরে ধারাবাহিক ভাবে অমর একুশে বইমেলায় আপনার দুইটি বই প্রকাশিত হয়েছে। বইগুলে সম্পর্কে কিছু বলেন-?
মিলন কান্তি দাসঃ জ্বী,২০১৯ সালের অমর একুশে বইমেলায় আমার প্রথম বই ও কাব্যগ্রন্থ “সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন” প্রকাশিত হয়।বইটিতে বিভিন্ন ধরনের কবিতার সমাবেশ ছিলো।বর্তমান ২০২০ সালের অমর একুশে বইমেলায় আমার দ্বিতীয় বই ও ছড়াগ্রন্থ “সুরমা পাড়ের ছড়া” প্রকাশিত হয়।বইটি মূলত আমাদের সিলেটের মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাত্রার কথ্য কথোপকথন এর উপর ভিত্তি করে ছড়া রচনা করা হয়।

শাহ ইসমাইল: লিখালিখির ক্ষেত্রে কি কি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন-?
মিলন কান্তি দাসঃ আসলে লিখালিখির ক্ষেত্রে মনের আবেগের একটি সম্পর্ক থাকে।সম্পর্ক ভিতরে থাকে মনের ভিতরের শিল্প সত্বার।মনের আবেগ,দর্শন ও শৈল্পিক সত্বার সমন্বয়েই লিখালিখির উপজীব্য বিষয় সামনে চলে আসে।সেক্ষেত্রে বিষয় নির্ধারন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।

শাহ ইসমাইল: বর্তমান লিখালিখির ব্যাস্ততা নিয়ে বলুন-?
মিলন কান্তি দাসঃ বর্তমান করোনাকালে যথেষ্ট অব্যাস্ত সময় হাতে থাকায় লিখালিখির ক্ষেত্রে প্রচুর সময় দেওয়া যাচ্ছে।বিগত তিন মাসে প্রায় ১০০ টি কবিতা লিখেছি। এছাড়া একটি গাণের সংকলনের কাজ করছি।

শাহ ইসমাইল: কানাইঘাট নিয়ে লিখালিখির ব্যাপারে আপনার পরিকল্পনা কি-?
মিলন কান্তি দাসঃ কানাইঘাট আমার জন্মস্থান।কানাইঘাটের ধুলিকনা, কাদামাটি গায়ে মেখেই আমার বেড়ে উঠা।সুরমা নদীর সাতার কাটা আমার শৈশবের অন্যতম শ্রেষ্ট অনুভূতি।জন্মস্থানের প্রতি প্রতিটি মানুষের একটা আবেগিক টান থাকে।আর লিখালিখির জগতের মানুষ হিসাবে আমাদের টানটা একটু বেশী এবং স্বপ্নের মতো।কানাইঘাটকে নিয়ে আমি সবসময় স্বপ্ন দেখি।কানাইঘাটের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং বর্তমান নিয়ে সমৃদ্ধ কিছু লিখার ব্যাপারে আমার পরিকল্পনা রয়েছে।

শাহ ইসমাইল:দেশের বর্তমান প্রজন্মের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন-?
মিলন কান্তি দাসঃ বর্তমান প্রজন্মই আগামীর বাংলাদেশ।এরাই আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে।আমরা জানি,বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে বিস্ময়কর ভাবে এবং দ্রুততার সাথে।সেই এগিয়ে যাওয়ার সাথে এগিয়ে নিতে হবে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে।সেই এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে হবে আমাদের তরুন প্রজন্মকে।সেক্ষেত্রে তাদেরকে অবশ্যই অত্যন্ত পরিশ্রমী ও চ্যালেঞ্জ জয়ের মনোভাবাপন্ন হতে হবে।বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদেরকে পারতেই হবে।বাংলাদেশকে নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্ব, হানাহানি,মারামারির সময় এখন আর নয়। সবাইকে ভেদাভেদ ভুলে বাংলাদেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করে যেতে হবে।বাংলাদেশ অমিত সম্ভাবনাময় একটি দেশ।এদেশের প্রধান সম্পদ হচ্ছে দেশের জনশক্তি।দেশের জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তর করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।এজন্য বড় ভূমিকা এদেশের বর্তমান প্রজন্মকেই পালন করতে হবে।
শাহ ইসমাইল:
সাহিত্যচর্চার ব্যাপারে আপনার নিজ উপজেলার তরুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন-?
মিলন কান্তিদাস: সাহিত্যচর্চা একজন মানুষের মানবীয় গুণাবলী গঠনের অন্যতম ক্ষেত্র।তাছাড়া, সাহিত্য মানুষের চিন্তা জগতের পরিধিকে আরও প্রসার করে।সাহিত্য মানুষের আবেগকে উন্নত করে এবং আনন্দ দানও করে থাকে।সাহিত্য জ্ঞানের পরিধির বিস্তৃতি একজন মানুষের দেশপ্রেমকেও জাগিয়ে তুলে।সুতরাং,সাহিত্যের প্রতি প্রতিটি তরুন প্রজন্মের সন্তানেরই আগ্রহ থাকা উচিত।নিজ গৃহে যতটুকু সম্ভব একটি সমৃদ্ধশালী পাঠাগার গড়ে তুলতে হবে।বেশী বেশী করে পড়তে হবে।গল্প,কবিতা,ছড়া,উপন্যাস,আত্মজীবনী,ভ্রমনকাহিনী,ইতিহাস ঐতিহ্য সব বিষয়েই পড়তে হবে।তবেই একজন পরিপূর্ন পাঠক হিসাবে আপনি নিজেকে স্বার্থক মনে করবেন।সেই পড়ার ধারাবাহিকতা আপনার জীবন দর্শনের পরিধিকে আপনার স্বপ্নের চেয়েও বড় করে তুলবে।তাই তরুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে একটিই বার্তা, আপনারা আপনাদের দৈনন্দিন জীবনে চলমান সবকিছুর সাথে সাহিত্যকেও রাখেন,সাহিত্যকে বাদ দিয়ে যেন জীবন না হয়।

শাহ ইসমাইল: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদেরকে যথেষ্ট সময় দেওয়ার জন্য?
মিলন কান্তি দাসঃ আপনাকে এবং আপনাদের নিউজ পোর্টালকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।আপনাদের অগ্রগতির জন্য শুভ কামনা।