আহমেদ হৃদয় : ১ লাখ ৮৯ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা ঘাটতি নিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে ২০২০-২১ অর্থবছর। যা জিডিপির ৬ শতাংশের সমান। এবারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। গত বছরের তুলনায় এবারের বাজেটে ৪৪ হাজার ৮১০ কোটি টাকা যোগ করে মোট ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বিশাল বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। যা জিডিপির ১৮ দশমিক ১ শতাংশের সমান ছিল। এবারের বাজেটে ঘাটতি রয়েছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা।
মোট ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের মধ্যে সরকারের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। মোট উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ৪৩ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। মোট রাজস্ব ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৩ কোটি টাকা। এনবিআরের আওতায় রাজস্ব ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআরের বহির্ভূত কর রাজস্ব ১৫ হাজার কোটি টাকা। এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব ব্যয় ৩৩ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়া এডিপি বহির্ভূত প্রকল্পের উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৭২২ কোটি ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচিতে যাবে ২ হাজার ৬ শ’ ৫৪ কোটি টাকা। অন্যান্য উন্নয়ন খাতের ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৬ শ’ ২৪ কোটি টাকা।
এদিকে ঘাটতি মেটাতে ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা, বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ ৭৬ হাজার ৪ কোটি টাকা, বৈদেশিক সহায়তা ৪ হাজার ১৩ কোটি টাকা ও অন্যান্য খাতের সহায়তা ধরা হয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে সূত্র জানিয়েছে, নতুন অর্থবছরের বাজেটে অপ্রদর্শিত বা কালো টাকায় কেনা জমি-ফ্ল্যাট বৈধ করার সুযোগ থাকছে। এজন্য প্রতি বর্গমিটার হিসাবে নির্দিষ্ট অঙ্কের কর দিতে হবে। একই সঙ্গে শর্তসাপেক্ষে পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ থাকছে। এছাড়া পণ্য আমদানিতে মিথ্যা ঘোষণা রোধে বাড়তি করারোপের বিধান যুক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি বাজেটে তৈরি পোশাক খাতের রফতানিতে উৎসে কর বাড়ানো হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব বোর্ডকে খুব বেশি বড় লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া যাবে না। তা বাস্তবসম্মত হবে না এবং কোনো কর ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে না। উল্টো আরও কিছু জায়গায় ছাড় দিতে হবে। তা না হলে বাজেটের ঘাটতি পূরণ করতে সরকারকে বেশ হিমশিম খেতে হবে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন, মহামারী করোনা ভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জ এর বাজেট।
প্রস্তাবিত বাজটে দেখা গেছে, ব্যয়ের চার ভাগের মধ্যে তিনভাগ অর্থই সরকার আয় করতে চায়। প্রধান খাত হিসেবে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। কর ব্যতীত আয় ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব বোর্ড ছাড়াও কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে আরও ১৫ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এবারের বাজেট বড় ধরনের একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।