লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত-মৃতের সংখ্যা

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন সারাদেশ স্বাস্থ্য

আক্রান্ত বেশি যুবকরা

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বব্যাপী মহামারি রূপ নেয়া করোনাভাইরাসে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। বাংলাদেশেও প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় রেকর্ড ভাঙছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৩ হাজার ১৮৭ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৮ হাজার ৫২ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৭ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১ হাজার ৪৯ জনে। বৃহস্পতিবার দুপুরে করোনা ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৫,৭৭২টি। মোট নমুনা পরীক্ষা ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৩৩২টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ৩,১৮৭ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ৪৯ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৪৮ জন সুস্থ হয়ে ফিরেছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৬ হাজার ৭৪৮ জন।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পুরুষ ৩৩ জন এবং নারী সাত জন। বয়সের হিসাবে: ৩১ থেকে ৪০ বছর: ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর: ৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর: ৮ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছর: ২২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছর: ১ জন।
তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা ২০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ জন, সিলেট বিভাগে ৩ জন, বরিশাল বিভাগে ২ জন ও রংপুর বিভাগে ১জন মৃত্যুবরণ করেছেন। হাসপাতালে মারা গেছেন ২৮ জন এবং বাসায় মারা গেছেন ৯ জন।
গত বুধবারের বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ জন মারা গেছেন। ১৫ হাজার ৯৬৫টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ১৯০ জনের মধ্যে, যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত কমলেও মৃত্যু হয়েছে সমানসংখ্যক। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৪৫ জনের মৃত্যুর রেকর্ড আছে, যা গত ৯ জুনের বুলেটিনে জানানো হয়।
বুলেটিনে ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নিজের সুরক্ষা নিজের হাতে।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার। ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়িয়ে এ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়। ছুটি শেষে করোনার বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেই ৩১ মে থেকে দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেয়া হয়। তবে বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এদিকে জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি এন্ড মেডিসিনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের ১৮৮টি দেশ বা অঞ্চলের ৭৩ লক্ষ ৬০ হাজার ২৩৯জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত বিশ্বে মৃত্যু হয়েছে ৪ লক্ষ ১৬ হাজার ২০১ জনের।
যুবকরা আক্রান্ত বেশি : দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। আর এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৩ হাজার ১৮৭ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৮ হাজার ৫২ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৭ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১ হাজার ৪৯ জনে। বৃহস্পতিবার দুপুরে করোনা ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৭১ শতাংশ পুরুষ এবং ২৯ শতাংশ নারী। মোট মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে পুরুষ ৭৭ শতাংশ এবং নারী ২৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ২১ থেকে ৪০ বছর বয়সী রোগীর সংখ্যাই বেশি। যার শতকরা হার ৫৫ শতাংশ। আর মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব রোগীর সংখ্যাই বেশি।
সূত্র জানায়, আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ১ থেকে ১০ বছর বয়সের ৩ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সের ৭ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের ২৮ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৭ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৭ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১১ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৭ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয়েছে।
অন্যদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের মধ্যে ১ থেকে ১০ বছর বয়সের ০ দশমিক ৮২ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সের ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২৯ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৩৮ দশমিক ৯০ শতাংশ রোগী মারা গেছেন।


বিজ্ঞাপন