নড়াইলে আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি

অপরাধ সারাদেশ

দিনেদুপুরে সংঘর্ষে ৩ খুন
কেউ রাখেনি পুলিশ সুপারের কথা

 

মো: রফিকুল ইসলাম, নড়াইল : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গন্ডবগ্রাম এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নড়াইল পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার), গন্ডবগ্রামের দু:পক্ষকে শান্তির বার্তা দিয়ে এক করে মিমাংসা করে দেন এবং সেই সাথে সবার সাথে সবাই কে হাতে হাত মিলিয়ে ওয়াদাবদ্ধ করেন, যে আর কোন দিন কেও কোন রকম দাঙ্গাহাঙ্গামা করবে না।
তার পরেই, নড়াইল পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার) সবার উদ্দেশে বলেন, (সাহস থাকলে আইন ভঙ্গ করে দেখান) পুলিশ সুপারের এমন চ্যালেঞ্জকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়েই আবারও শুরু করেছে রক্তঝড়ানো খেলা।
আইন কে অমান্য করেই এমন নেক্কার জনক ঘটনা ঘটিয়ে চলছে সন্ত্রাসী বাহিনি।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে নড়াইল জেলার আইন শৃঙ্খলা বাহিনির চরম অবনতীর কারনে দিনেদুপুরে পুলিশের সামনে ৩ জন খুন হয়েছে,পুলিশ তখন সংঘর্ষ না ঠেকিয়ে সংঘর্ষের চিত্র মোবাইল ফোনে ধারনে ব্যস্ত,এটা কোন আইন হতে পারেনা বলেও এলাকাবাসি অভিযোগ করে বলেন।
আইন সবার জন্য সমান,তাহলে কেন বিপ্লব নামের ইয়াবা ব্যাবসায়ী ও ইয়াবা সেবনকারী এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যকালাপ সহ ইয়াবা ব্যাবসাসহ ইয়াবা সেবন করে।
নড়াইল জেলা পুলিশ কি কিছুই জানেন না বা কিছুই দেখেন না বিপ্লবের অনৈতিক কর্মকান্ড।
দু:পক্ষকে হুসিয়ারী দিয়ে পুলিশ সুপার বলেছিলেন,ক্ষমতা থাকলে আইন ভেঙ্গে দেখান,সেই কথাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবারও দিনেদুপুরে ৩ খুন করে দেশ ও নড়াইল জেলাকে দেখিয়ে দিলো ক্ষমতা থাকলে সব সম্ভাব।


বিজ্ঞাপন

এদিকে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গন্ডবগ্রাম এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু্ই পক্ষের সংঘর্ষে ৩ জন নিহত ও অনন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে।
(১০ জুন) বুধবার দুপুরে পৃথক পৃথক দুই দফায় সংঘর্ষে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।


বিজ্ঞাপন

বৃহশপ্রতিবার (১১ জুন) সকালে নড়াইল সদর হাসপাতালের সামনে হাজার হাজার মানুষ খুনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও ঝাড়ু মিছিল করেন।
এসময় শেখ নাজমুল ও ভাতিজা বিপ্লব এর ছবিতে ঝাড়ু ও সেন্ডেল নিক্ষেপ করে এবং ফাসির দাবি জানান।
নড়াইল সদর হাসপাতাল থেকে লাশ ঘাড়ে করে মিছিল করে জেলা প্রশাষকের কার্যালয়ের সামনে হাজির হয়ে সেখানেও খুনের বিচার চেয়ে,খুনিদের ফাসির দাবিতে ঝাড়ু মিছিল করেন এলাকাবাসি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান,এ্যাড:বসিরসহ জেলা প্রশাষকের কর্মকর্তাবৃন্দসহ হাজার হাজার জনতা প্রমূখ।

এর আগে এ দুইগ্রুপের মধ্যে শান্তির বার্তা দিয়ে সবাই কে ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে মিমাংসা করে দেন,এবং আর কোন দিন দুইগ্রুপের কেউ কোন রকম সংঘর্ষ করবে না বলে অঙ্গিকার করেন, নড়াইল পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম(বার) এর কাছে।
কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারও মরন খেলায় মেতে উঠেছে এ দুইগ্রুপ।

এলাকাবাসির অভিযোগ, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নড়াইল জেলা পরিষদের সদস্য গন্ডবগ্রামের সুলতানুজ্জামান বিপ্লব দির্ঘদিন ধরে আইনের তোয়াক্কা না করে এসব নেক্কার জনক ঘটনা ঘটাচ্ছে।

বিপ্লবের চাচা শেখ নাজমুল ডিআইজি হওয়ার সুবাদে এলাকায় দুর্নিতি অনিয়ম, ইয়াবার রমরমা ব্যবসা করে এবং নিজে ইয়াবা সেবন করে।
পুলিশ এসব দেখেও তাকে আটক করেনা বা তার এ অবৈধ মাদক ব্যবসার বন্ধের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি বলেও জানান।

এদিকে এ সংঘর্ষে নিহতরা হলেন,মিরাজ মোল্যা পক্ষের মোক্তার মোল্যা (৫০), হাবিল মোল্যা (৪৫) ও রফিক মোল্যা (৪০)।
এলাকাবাসী জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নড়াইল জেলা পরিষদের সদস্য গন্ডবগ্রামের সুলতানুজ্জামান বিপ্লব গ্রুপের সাথে একই গ্রামের মিরাজ মোল্যা গ্রুপের মধ্যে দির্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো।
বুধবার দুপুরে প্রথম দফা হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হন।
দুপুর দুইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে বিপ্লব গ্রুপের সমর্থকদের হামলায় মিরাজ মোল্যার পক্ষের অনন্তত ২৫ জন আহত হন।

আহতদের নড়াইল সদর হাসপাতালে আনা হলে মিরাজ মোল্যা গ্রুপের ২ জনকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।

এছাড়া আশংকাজনক অবস্থায় রফিক মোল্যাকে (৪০) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাপসাতালে নেওয়ার পথে ফুলতলা এলাকায় পৌঁছালে তার মৃত্যু হয়।
আহত অন্যান্যরা নড়াইল সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

নিহত রফিকের ভাই শরিফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, পুলিশের উপস্থিতেই সুলতানুজ্জামান বিপ্লবের লোকজন এ হামলা চালিয়েছে।

নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।