প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ
নিজস্ব প্রতিবেদক : পটুয়াখালীর বাউফলে প্রকাশ্যে যুবলীগকর্মী তাপস দাসকে পৌর মেয়র জুয়েলের নেতৃত্বে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে হত্যাকারীদের শাস্তির নিশ্চিতে সংবাদ সম্মেলন করে বাউফল উপজেলা যুবলীগ ও নিহত তাপস দাসের পরিবার। সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটর নসরুল হামিদ অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েলের স্বশরীরে উপস্থিত নেতৃত্বে এবং তার হুকুমে সন্ত্রাসীরা পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক চাকু, ছেনা, লোহার রড, রাম দা, লাঠি ইত্যাদি প্রদর্শন পূর্বক বর্তমান এমপির বিরুদ্ধে আপত্তিকর শ্লোগান দেয় এবং আমাদের করা পূর্বের তোরণটির ভাঙ্গা অংশ সরাইয়া তথায় নতুন করে তাদের নামে তোরণ নির্মাণের উদ্যোগ নিলে যুবলীগ কর্মী তাপস কুমার দাসসহ উপস্থিত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মীরা তাতে বাধা দিলে মো. হাসান মৃধা খুনের উদ্দেশ্যে তাপসকে বুকে চাকু দিয়ে কোপ দেয়, রুদ্র অনুরুপ, সন্ত্রাসী সিদ্দিক উল্লাহ্ কোপায় তাপস দাসকে। সাইমুন প্যাদা, জসেদস, ইউসুফ হামলায় অংশ নেন বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
নিজের আদিপত্য বিস্তারে পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল ছক একে হত্যাকান্ডের নকশা করেন, সে আলোকেই এই হত্যাকান্ড ঘটে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। অভিযোগ রয়েছে জিয়াউল হক জুয়েল আন্ডার ওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে, কিশোর গ্যাং ও অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করছে। তার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও প্রশাসন কেন নিরব ভূমিকা পালন করছে, কেন অপরাধী গ্রেফতার হচ্ছে না এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন সাধারণ জনগণ।
সূত্র বলছে, জুয়েল নিয়মিত ঢাকার একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সাথে যোগাযোগ রেখে আসছেন। রাজনৈতিক আশ্রয় এবং আর্থিকভাবেও তাদের সুবিধা দেয় পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল। ক্যাসিনোকান্ডের অনেক হোতাই জুয়েলের আনন্দের সঙ্গি। যাদের রঙ্গনীলায় নিয়মিত চাঁদা দিয়ে মাঝে মাঝে অংশ নিতেন রঙের পানির চুমোকে। পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সকল টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের গুরু। জানা যায়, জুয়েল’র বাইরে এখানে কেউ টেন্ডার কখনোই জমা দিতে পারেনি।
প্রকাশ্যে একজন খুন হলেও প্রশাসন কেন নিরব, কেন অপরাধীদের চিহ্নিত করা গেলেও গ্রেফতার করা যাচ্ছে না এমন কিছু প্রশ্ন যার উত্তর এখনও পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ দেয়নি।
মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল ঢাকার ক্যাসিনো কিং খালেদের সহযোদ্ধা হিসেবে ব্যাপক পরিচিত ছিলেন এবং স্থানীয় রাজনীতিতে নিজের আধিপত্য বিস্তারে যেকোন কাজ অনায়াসেই করতে পারেন জুয়েল। ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে একাধিক ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছেন জুয়েল। তার নামে একাধিক অভিযোগ থাকলেও অদৃশ্য কারণে ক্ষমতাসীন দলের নাম ব্যবহার করে, কিছু কিছু নেতার ছত্রছায়ায় ভয়ানক এই জুয়েল বাউফলবাসীর আতঙ্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রূপ নিয়েছেন। অবিলম্বে ভয়ানক এই মানুষটির বিচার দাবি এখন হাজারো বাউফলবাসীর।
তাপস যখন ছুরিকাহত হন তখনও মেয়র জুয়েল স-শরীরে দাঁড়িয়ে নিদের্শনা দিচ্ছেন ঘাতকদের এমন দৃশ্য এখন ভাইরাল। তারপরও কেন মেয়র জুয়েল গ্রেফতার হচ্ছে না এমনটাই প্রশ্ন তাপসের মায়ের।
বাউফল উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম ফয়সাল আহমেদ মনির মোল্লা লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, এ সময় নিহত তাপস দাসের মা ও ভাই পংকজ কুমার দাস কান্নায় ভেঙে পরেন। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে ছেলে হত্যার বিচারের দাবি জানান স্বজনরা।