সিনহা হত্যা : পুলিশের ৩ সাক্ষী ফের র‌্যাব হেফাজতে

অপরাধ আইন ও আদালত

কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের টেকনাফে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষীকে ফের নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে র‌্যাব। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাদের কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে বের করে সদর হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর নিয়ে যায় র‌্যাব। জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ওই তিনজন হলেন- টেকনাফের মারিশবুনিয়া এলাকার নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মো. আয়াছ।
প্রথম দফা সাতদিনের রিমান্ড শেষে গত ২৫ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম তাদের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুনরায় সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে দ্বিতীয় দফায় তাদের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক তামান্না ফারাহ। সিনহা হত্যার বিষয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ফের হেফাজতে নিল র‌্যাব।
সিনহা হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে গত ১১ আগস্ট মারিশবুনিয়া এলাকা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে পরে গ্রেফতার দেখানো হয়।
গত ৩১ জুলাই পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা নিহত হওয়ার পর তার সঙ্গে থাকা সিফাতের বিরুদ্ধে মাদক ও পুলিশকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়ার অভিযোগে টেকনাফ থানায় মামলা করে পুলিশ। এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতের দায়ের করা ওই মামলায় এই তিনজনকে সাক্ষী দেখানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের পাহাড়ে ভিডিও চিত্র ধারণ করে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে তিনটি মামলা করা হয়। দুটি মামলা হয় টেকনাফ থানায়। সরকারি কাজে বাধা প্রদানের মামলার আসামি করা হয় সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে। হত্যাচেষ্টা মামলায় সিফাত ও নিহত সিনহাকে আসামি করা হয়। আপরদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রামু থানায় দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয় শিপ্রা দেবনাথকে।
একই ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পরদিন সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
এ মামলার অপর দুই আসামি এসআই টুটুল ও মো. মোস্তফা আদালতে হাজির হননি। পুলিশের দাবি, এই নামে জেলা পুলিশে কেউ নেই। তবে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
সিনহা হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাত পুলিশ সদস্য, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য ও টেকনাফ পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তাদের মধ্যে প্রথম দফা রিমান্ড শেষ হওয়ার আগেই গ্রেফতার এপিবিএনের তিন সদস্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা কারাগারে রয়েছেন। বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড চলছে।


বিজ্ঞাপন