যশোরে আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে

অর্থনীতি সারাদেশ

যশোর প্রতিনিধি : যশোরে ধান নয়, আখের আবাদে অধিক আগ্রহী হচ্ছে চাষীরা। ধানের আবাদ কমে আখের আবাদ বাড়ছে। উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে লাভজনক হওয়ায় তারা জমিতে আখচাষ করছেন। রোগবালাই ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় এবার ফলনও হয়েছে আশানুরূপ। ক্ষেতের পরিচর্যা ও আগাম আখ মাড়াইয়ে ব্যস্ত চাষীরা। পাইকারী ও খুচরা বাজারে চাহিদা এবং ভালো দাম পাওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখেও।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রেমতে, যশোরে চলতি বছরে সাড়ে ৭শ’ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। যা গত বছর ছিলো ৬শ’ হেক্টর জমি। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে প্রায় দেড় শ’ হেক্টরেও বেশি জমিতে আখের আবাদ বৃদ্ধি হয়েছে। যশোরের আট উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আখের চাষ হয়েছে বাঘারপাড়া উপজেলায় ১১০ হেক্টর জমিতে। ভালো মাটি, আশানুরূপ ফলন, রোগবালাই কম থাকায় ও নায্য মূল্য পাওয়ায় দিন দিন যশোর অঞ্চলে আখ চাষের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া এ অঞ্চলের আখের চাহিদা সারা দেশে ছড়িয়ে রয়েছে। আখের গুনগতমান ও পরিবহন ব্যবস্থা ভালো থাকায় পাইকার ব্যবসায়ীরা স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। আখ কাটার মৌসুম শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলার ক্রেতারা আখ কিনতে যশোরে আসে।
বাঘারপাড়া উপজেলার দোহাকুলা এলাকার আখ চাষী ছবির আল মামুন বলেন, আমি এবার তিন বিঘা জমিতে আখ চাষ করেছি। ফলনও মোটামুটি ভালো হয়েছে। বিগত আম্পান ঘূর্ণিঝড়ে ২৬ শতক জমির আখের জমিতে ক্ষতি হয়েছিলো। সে কারণে এবার বাড়তি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা বেশি উৎপাদন খরচ হয়েছে। চারারোপণ থেকে শুরু করে প্রায় ৫ লাখ টাকা মতো খরচ হয়েছে। বিক্রি করার আশা রয়েছে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা।
একই এলাকার ছাইবাড়িয়া গ্রামের আখ চাষী রিপন হোসেন জানান, ধানের নাম না পেয়ে আমি কয়েক বছর ধরে আখ চাষ করছি। গত বছর আখের আশানুরুপ ফলন ও নায্য মূল্য পেয়েছিলাম। এবারও পাবো বলে আশাবাদি। আখ চাষে সরকারি সহযোগিতা পাওয়া গেলে এই চাষ আরো বাড়বে বলে তিনি আশবাদী।
বাঘারপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল আলম বলেন, গত বছরের তুলনায় তার উপজেলায় আখ চাষের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছরও আখের আশানুরুপ ফলন হয়েছে। ফসলটি খুবই লাভজনক হওয়ায় কৃষকরাও আগ্রহী হচ্ছেন। আমাদের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক চাষের ব্যাপারে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক বিরেন্দ্র নাথ জানান, ধান চাষ থেকে আখ চাষ লাভজনক। তবে ধান চাষে উৎপাদন খরচ কমাতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। যশোর জেলায় বেশ কয়েকটি উপজেলায় আখ চাষ করা হচ্ছে। তবে এখনো ব্যাপক ভাবে আখের চাষ না হওয়ায় সরকারের কোন প্রকার বরাদ্দ আখ চাষীদের জন্য নেই। কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা এসে পৌছালে চাষীদের কাছে পৌছে দেয়া হবে।


বিজ্ঞাপন