নিজস্ব প্রতিবেদক : সম্প্রতি খুলনার ফুলতলায় সেনাবাহিনীর সদস্য মো. আলী হোসেন মোড়ল এবং তার বড় ভাই মিন্টু মোড়লের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা সেনা সদস্য মো. আলী হোসেন মোড়লকে ধারালো ছুরি এবং লাঠিসোটা দিয়ে মেরে রক্তাক্ত করেছে বলে জানা গেছে। তার মাথায় আঘাত পাওয়ায় ক্ষত স্থানে ৪ টি সেলাই করা হয়েছে বলে জানায় আহত আলী হোসেন মোড়ল।
এ ব্যাপারে আহত সেনা সদস্যের ছোট ভাই মো. হানিফ মোড়ল বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামী করে ফুলতলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলেন-এজাহার মোড়ল (৩৫), ইমন মোড়ল(২৫), আজাহার মোড়ল(২৮), মোজাহার মোড়ল(৩২) সর্ব পিতা- সুলতান মোড়ল, ইমামুল মোড়ল(২৮), আমিনুল মোড়ল(৩২), সলেমান মোড়ল(৩৭) সর্ব পিতা- মৃত ইশহাক মোড়ল, ইয়ামিন মোড়ল(২৪), মোস্তাফিজ মোড়ল(২০) উভয় পিতা-মুসা মোড়ল, সর্ব সাং- আলতা রেল গেট, থানা-ফুলতলা, জেলা- খুলনা।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর আনুমানিক ২:১০ ঘটিকায় রেল গেট গ্রামস্থ উপরোক্ত বিবাদীগণের ছেলে-মেয়ে গোসল করছিল। উক্ত পুকুরের পাশেই আমাদের বসত ঘর। তখন আমার মা মমতাজ বেগম(৫০) বিবাদীগণদের ছেলে-মেয়েদের দ্রুত গোসল করে বাড়িতে যেতে বলে। তার কিছুক্ষণ পর লাঠি সোটা নিয়ে বিবাদীগণেরা আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে বিভিন্ন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তখন আমার বড় ভাই বাংলাদেশ আনসার বাহিনীর সদস্য মিন্টু মোড়ল(৩১) ও মেজ ভাই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য মো. আলী হোসেন মোড়ল(২৮) বিবাদীগণদের অকথ্য ভাষার গালি গালাজের কারণ জানতে চাইলে ১ নং বিবাদীর হুকুমে ২নং বিবাদী বাঁশের লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার বড় ভাইয়ের মাথায় আঘাত করে। এরপর বাঁশের ও কাঠের লাঠি দিয়ে আমাদের এলোপাথারিভারে মারপিট করে। মাথায় আঘাত পেলে মাথা ফেটে প্রচন্ড রক্তপাত হয়।
এ বিষয়ে আহত মো. আলী হোসেন মোড়ল বলেন, যাদের আসামী করা হয়েছে তারা আগে থেকেই আমাদের সাথে শত্রুতা করে আসছে। ঘটনার দিন খুব ছোট একটা ব্যাপার নিয়ে তারা আমাদের মারপিট করে।
তিনি বলেন, এর আগের তারা আমাদের একাধিকবার মারপিট করেছে। আমার বাবা মা’ কেও এর আগে তারা অত্যাচার করেছে। এর আগে আমাদের চেয়ারম্যান শরীফ মোহাম্মদ ভূঁইয়ার (শিপলু) কাছে সমাধানের জন্য গেলে তিনি সমাধান করে দিবে বলে আশ^াস দিলেও তিনি এর কোনো সমাধান করেনি। তবে আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
ফুলতলা থানার দামোদড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরীফ মোহাম্মদ ভূঁইয়ার (শিপলু) এ ব্যাপারে বলেন, মো. আলী হোসেন মোড়ল যাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ওরা তাদের আত্মীয়। মূলত তাদের ঝামেলা টা হচ্ছে জমি সংক্রান্ত। প্রায় তিন-চার মাস আগে আমি তাদের বাড়িতে গিয়ে তাদের এই বিষয়টা সমাধান করে দিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে তারা আবারো এই বিষয় নিয়ে ঝামেলা করে। তারপর আমি আবারো গিয়ে তাদের মধ্যে জমি নিয়ে যে ঝামেলা ছিল তা আমি সমাধান করে দিই। কিন্তু তারা আমার কোনো কথায় শোনে নাই। সম্প্রতি মারপিটের ঘটনায়ও তারা আমার কাছে এসেছিল; কিন্তু তারা আমার কোনো কথা রাখেনি। তারা বলছে মামলা করবে। আর আমিও তাদের জোর করিনি। পরবর্তীতে তারা মামলা করে।
এ বিষয়ে ফুলতলা থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ সকালের সময়কে বলেন, মূলত তাদের ঝামেলা টা জমি নিয়ে। জমি নিয়ে তারা নিজেরা নিজেরাই মারামারি করেছে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে যে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে আমরা তাদের গ্রেফতার করার চেষ্টা করছি। এদিকে আমাদের তদন্ত এখনো চলমান। আমরা পুরো ব্যাপারটা তদন্ত করে খতিয়ে দেখছি।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য মামলার ১ নং আসামী এজাহার মোড়লকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।