বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই কূটনীতি পরিচালনা হচ্ছে

এইমাত্র জাতীয়

পৃথিবী রক্ষায় পাঁচ প্রস্তাব

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই সরকার কূটনীতি পরিচালনা করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাতিসংঘ অধিবেশনে ঐতিহাসিক বাংলায় ভাষণের ৪৬ বছর পূর্তি এবং ফরেন সার্ভিস একাডেমি ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু যে পররাষ্ট্রনীতি দিয়ে গেছেন ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়’-এই নীতিতেই চলছে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী জানান, এখন কূটনীতির ধরন বদলে গেছে। শুধু রাজনৈতিক কূটনীতি নয়, এখন সময় অর্থনৈতিক কূটনীতির। সেভাবেই বাংলাদেশের কূটনীতিকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
দেশকে এগিয়ে নিতে অনেকগুলো পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের মূল লক্ষ্য দেশ ও মানুষের উন্নয়ন। দীর্ঘসময় ক্ষমতায় থাকার কারণেই আজ মানুষ সুফল পাচ্ছে। দেশে উন্নয়ন দৃশ্যমান হচ্ছে।
করোনায় যাতে কম ক্ষতি হয় সে লক্ষে সরকার কাজ করছে জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, দেশে যেনো কোনোভাবেই খাদ্যের সংকট না হয় সে লক্ষে সরকার খাদ্য উৎপাদন, মজুদ ও সরবরাহের যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রাকৃতিক এবং মানুষের তৈরি নানা দুর্যোগ মোকাবিলা করেই এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। করোনাভাইরাসে সারা বিশ্বই ক্ষতির শিকার হচ্ছে। আগের চেয়ে প্রবৃদ্ধি আরও বৃদ্ধি করার কথাও বলেন তিনি।
পৃথিবী রক্ষায় পাঁচ প্রস্তাব : পৃথিবীকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য পাঁচ-দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করে জোরাল আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি তার প্রথম প্রস্তাবে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে পৃথিবী এবং নিজেদের রক্ষা করার জন্য আমি রাজনৈতিক নেতৃত্বকে অবশ্যই জোরাল আন্তর্জাতিক সহযোগিতা উৎসাহিত করার পরামর্শ দেব।’
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭৫তম সাধারণ অধিবেশনের (ইউএনজিএ) সাইডলাইনে জলবায়ুু সংক্রাস্ত উচ্চপর্যায়ের একটি ভার্চুয়াল গোলটেবিল আলোচনায় এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এ প্রস্তাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী তার দ্বিতীয় প্রস্তাবনায় বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখতে হবে এবং সমস্ত প্যারিস প্রবিধান বাস্তবায়ন করতে হবে।
তৃতীয়ত, তিনি বলেন, দুর্বল দেশগুলোকে প্রতিশ্রুত তহবিল সরবরাহ করতে হবে।
চতুর্থ প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, দূষণকারী দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় প্রশমন ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদের এনডিসি (জাতীয় নির্ধারিত অবদান) বাড়াতে হবে।
পঞ্চম প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, জলবায়ু শরণার্থীদের পুনর্বাসন একটি বৈশ্বিক দায়িত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ জানানোয় জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, অভিযোজন এবং সহিষ্ণুতার বিষয়ে বিনিময় করার মতো কিছু ধারণা ও অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও জল ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ প্রস্তুত করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশে চার হাজার ২৯১টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র এবং ৫২৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করেছে এবং যেকোনো ঘূর্ণিঝড়ের আগে প্রস্তুতি সহজ করতে ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে।
তিনি বলেন, ‘এ জন্য আমরা ‘রিপ’ (ঝুঁকি-অবহিত আর্লি অ্যাকশন পার্টনারশিপ) উদ্যোগে অংশ নিয়েছি, যার লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে এক বিলিয়ন মানুষকে বিপর্যয় থেকে নিরাপদ করা।’
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ সিভিএফের (জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরাম) বর্তমান চেয়ার এবং সম্প্রতি ঢাকায় গে¬াবাল সেন্টার অব অ্যাডাপ্টেশনের আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস গোলটেবিলটি আহ্বান করেন এবং যুক্তরাজ্যের সাংবাদিক ফেমি ওকে এটি পরিচালনা করেন।


বিজ্ঞাপন