বিআরটিএ’র দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন: কাদের

রাজধানী রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিআরটিএ’র দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি সব অনিয়ম বন্ধ করে বিআরটিএ-কে সেবাবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে মুজিববর্ষের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। রোববার ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ’র সঙ্গে সেবার মান বৃদ্ধিবিষয়ক আলোচনা সভায় এ নির্দেশ দেন। আলোচনা সভায় বিআরটিএ সদর দফতর, ঢাকা মহানগরী, পাশের জেলাসমূহ, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট জেলার কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের কিছু অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য চরমে পৌঁছেছে। আমি অভিযোগ পাচ্ছি, গ্রাহক সেবার নামে এসব জায়গায় হয়রানি করা হচ্ছে। এমনকি দালালদের দারস্থ না হয়ে লাইসেন্স করা, নবায়ন এবং ফিটনেস পরীক্ষা করাতে পারে না গ্রাহকরা। কোথাও কোথাও অনেকে নিজ এলাকার পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটাতে চান।’ তিনি এদের সতর্ক করেছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘কেউ যদি আমার এলাকার, আত্মীয় বা দলীয় পরিচয় দিয়ে বিআরটিএ-তে প্রভাব খাটাতে চান, তাদের ক্ষেত্রে আমি জিরো টলারেন্স পোষণ করি। বিআরটিএ-তে নিয়ম কানুন অনুযায়ী সবাইকে চলতে হবে।’ এর ব্যত্যয় ঘটলেই ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
দালালের দৌরাত্ম্য থেকে সবাইকে সাবধানে থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গ্রাহক সেবার নামে যাতে কেউ হয়রানির স্বীকার না হন, সেদিকে নজর দিতে হবে। বিআরটিএ’র কিছু কর্মকর্তা সবসময় লাভজনক পোস্টিং চান, বিশেষ করে ঢাকা বা চট্টগ্রামে আসতে চান এবং এ জন্য নানাভাবে তদবির করেন।’ তিনি বলেন, ‘যারা ঘুষ দিয়ে বদলি ও প্রমোশন করাতে চান, তাদের দিয়ে বিআরটিএ’র কোনও লাভ হবে না। এরা টাকা দিয়েও তদবির করেন বলে আমি জানি।’ বিআরটিএকে সেবাবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে মুজিববর্ষের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। নতুন গতি এসেছে প্রবাসী আয়ে, কিন্তু এসব ইতিবাচক দিক বিএনপি দেখতে পায় না।’ তিনি বলেন, ‘দেশে এখন পর্যন্ত ১৮টি ফ্লাইওভার, ৪১৩ কিলোমিটার চার লেনের সড়ক নির্মিত হয়েছে।’ এগুলো বিশ্বাস না হলে বিএনপি নেতাদের সরেজমিনে গিয়ে দেখে আসার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
বিএনপি নেতাদের ‘দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে সরকার মিথ্যাচার করছে’ অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশের কোনও সুখবর, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি তাদের গায়ে জ্বালা ধরায়। এ জন্যই সবকিছু নিয়ে অবিশ্বাস আর মিথ্যাচার করে তারা। এটা বিএনপির মজ্জাগত।’ তিনি জানান, করোনার প্রভাবের পরও প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের ওপরে অর্জিত হয়েছে। এডিবি ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৮ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক দিয়ে এশিয়ার চতুর্থ শীর্ষ দেশ হবে বাংলাদেশ।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আসলে রাজনৈতিক ব্যর্থতাজনিত হতাশা গ্রাস করেছে বিএনপিকে। তাই দেশ ও সরকারের অর্থনৈতিক কোনও ইতিবাচক অর্জন তারা দেখতে পায় না।’
বিএনপি’র গণঅভ্যুত্থান করার ঘোষণা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যাদের রাজপথে একটি বড় মিছিলের সক্ষমতা নেই, তারা অভ্যুত্থানের দিবাস্বপ্ন দেখছে।’


বিজ্ঞাপন