গবেষকরা নিশ্চুপ কেন : তথ্যমন্ত্রীর

এইমাত্র জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের অর্থনীতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা কোনো ইতিবাচক প্রতিবেদন দিলে অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা করা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর নিশ্চুপ থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
রোববার সচিবালয়ে ভিডিও কনফারেন্সে খুলনায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম সমাপ্তি ও পার্ক উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছরের শেষের দিকে দেশের মাথাপিছু আয় ভারতকেও ছাড়িয়ে যাবে। তবে এ বিষয়ে অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা করা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আইএমএফের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন, একই সঙ্গে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আউটলুক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পৃথিবীর হাতেগোনো যে কয়েকটি দেশের ভালো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে, এরমধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আইএমএফের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছরের শেষের দিকে আমাদের মাথাপিছু আয় ভারতকেও ছাড়িয়ে যাবে। এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর পুরো ভারতজুড়ে তোলপাড় পড়ে গেছে। ভারতের সমস্ত মিডিয়াতে এই নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিভিন্ন সভা-সমিতিতে এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বুদ্ধিজীবীরা আলোচনা করছেন। শেখ হাসিনা সরকারের প্রশংসা করছেন।’
তিনি বলেন, ‘শুধু ভারতে নয়, পাকিস্তানেও একই ঘটনা ঘটছে। সেখানেও তোলপাড় পড়ে গেছে। পাকিস্তানের কোনো কোনো টেলিভিশনে আবার একটু স্তুতি গাওয়ার অর্থাৎ নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য বলা হচ্ছে, আমাদের ভাইরা এগিয়ে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে ভারত-পাকিস্তানে তোলপাড় পড়ে গেছে।’
‘কিন্তু বাংলাদেশে যারা অর্থনৈতিক সমীক্ষা নিয়ে কাজ করেন, অর্থনীতি নিয়ে কাজ করেন, গবেষণা করেন, তাদের মুখে কোনো বক্তব্য আমরা দেখতে পাইনি। আইএমএফ ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক যদি কোনো নেগেটিভ প্রতিবেদন দিতো, তাহলে দেখতে পেতেন তারা এতদিন টেলিভিশনে বক্তব্য দিয়ে ঝালাপালা করে দিতো।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কিন্তু এ রকম একটি পজিটিভ প্রতিবেদন যেটি নিয়ে পুরো উপমহাদেশ জুড়ে তোলপাড় এতে তারা নিশ্চুপ। এতে প্রমাণিত হয়, দেশের ভালো কিছু হলে তারা খুশি হন কি-না, এই প্রশ্নই দেখা দেয়। যেহেতু দেশের অগ্রগতিতে তারা নিশ্চুপ।’
‘কিন্তু যখন দেশের কোনো নেগেটিভ প্রতিবেদনে কোনো জায়গায় ছিটেফোঁটা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ কেন, কোনো একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকায়ও যদি বের হয়, সেটি নিয়ে তারা খুব সরব হন। আজকে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, অনেক বিদগ্ধজন সেই প্রশ্ন করেছেন, আমি করছি না। অনেকেই প্রশ্ন করছে। তারা আজকে যেহেতু নিশ্চুপ এতে অনেকেই প্রশ্ন করছে, তারা কি আসলে দেশকে খারাপভাবে উপস্থাপন করার জন্য গবেষণা করেন’-বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘দেশকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের জন্য গবেষণা করেন। কোনো ইতিবাচক প্রতিবেদন হলে তারা নিশ্চুপ থাকেন কেন? এটি অনেকেই প্রশ্ন রেখেছেন, সেই প্রশ্ন আমারও।’
‘ফ্রান্সে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র আঁকা নিয়ে দেশে বিক্ষোভ হচ্ছে’-এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.)-কে অবমাননা করে কোনো কিছু, সেটি আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না। এতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে। এজন্য যে প্রতিবাদ হচ্ছে। অতীতেও যখন এ ধরনের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া হয়েছে, তখন এই ধরনের প্রতিবাদ হয়েছে। কোনো ধর্মের অনুভূতিতেই আঘাত দেয়া সমীচীন নয়।’
‘ধর্ম অবমাননার অভিযোগে লালমনিরহাটে একজনকে পুড়িয়ে মারা হলো’-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সেটির ব্যাপারে সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। পৈশাচিক ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকার বদ্ধপরিকর।’


বিজ্ঞাপন