পাট নিয়ে হবে সমন্বিত প্রকল্প : কৃষিমন্ত্রী

Uncategorized

নিজস্ব প্রতিবেদক : পাটের বীজ উৎপাদন থেকে শুরু করে সোনালী আঁশ বাজারজাতকরণের মাধ্যমে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে একটি সমন্বিত প্রকল্প নেওয়া হবে বলে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন। সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার উচ্চফলনশীল পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন নিয়ে এক সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের এই যৌথ সভায় ঠিক হয়েছে, বেসরকারি সংস্থাসহ আরও যারা সংশ্লিষ্ট রয়েছেন, তাদেরকে নিযে একটি সমন্বিত কর্মসূচি নেওয়া হবে।
শুধু পাট বীজ উৎপাদন করলেই হবে না, চাষীর কাছে বিতরণ, কৃষকের উৎপাদিত পাট দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রির নিশ্চয়তা দেওয়াসহ ভ্যালু চেইনের প্রত্যেকটি জায়গা আমাদের অ্যাড্রেস করতে হবে। না হলে আমরা সফল হব না।
কৃত্রিম তন্তু পরিবেশের ক্ষতি করছে জানিয়ে রাজ্জাক বলেন, সে কারণেই পাটের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের দুই মন্ত্রণালয়কে পাটের যোগান দিতে হবে। তিনি বলেন, পাট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশ পাটের বীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে।
আমিও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, অর্থের কোনো সমস্যা হবে না। বীজ করতে এত বেশি টাকার দরকার হয় না।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, পাট বীজের ক্ষেত্রে আমরা অন্যের উপর নির্ভরশীল হব না। পাটকে আমরা বাংলাদেশের চাষিদের জন্য একটা লাভজনক ফসলে উন্নীত করব। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে পাট আবার অসাধারণ ভূমিকা রাখবে।
ভর্তুতি দিয়ে হলেও পাট বীজের উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর বলেন, পাট বীজের ক্ষেত্রে ভারতের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নিজেরদের পায়ে দাঁড়াতে হবে, এছাড়া আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আমরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি, তাতে অনেকের চক্ষুশূল হতে পারি। পাটটা আমাদের নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে না হলে ভবিষ্যতে সমস্যা দেখা দেবে।
পাটপণ্যে ভারত আমাদের উপর এন্ট্রি ডাম্পিং ডিউটি বসিয়েছে, এজন্য আমরা ৩ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকার পাটপণ্য ভারতে রপ্তানি করতে পারিনি। সেটাকে চ্যালেঞ্জ করে আমরা অন্যান্য দেশে গিয়ে ৪০ শতাংশ গ্রোথ করেছি।
পাটমন্ত্রী বলেন, কৃষক যদি পাট উৎপাদন করতে না পারে, দেশের পাটশিল্প বসে পড়বে। একটির সঙ্গে অন্যটি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। সুতরাং কৃষককে লাভবান করতে হবে।
এবার পাটের দাম বেশি হওয়ায় শিল্প কারখানাগুলো কিনতে পারছিল না জানিয়ে পাটমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীরা প্রস্তাব দিয়েছিল রপ্তানির উপর ডিউটি বসিয়ে দেন। আমরা ডিউটি বসানোর চিন্তা-ভাবনা করছিলাম, এটা প্রধানমন্ত্রীর নলেজে যায়। তিনি বলেছেন, খবরদার তুমি এই ধারায় যাবে না। কৃষকরা যদি এবার লাভবান হয়, আগামী বছর কৃষকরা বেশি উৎপাদন করবে, লাভবান না হলে ফসল করবে না।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, আমরা পাটের সোনালী দিন ফিরে পাব, পাট হবে সবচেয়ে বড় রপ্তানি পণ্য।
কৃষি সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, সাবেক কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামানসহ কৃষি ও পাট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মন্ত্রণালয়গুলোর অধীন সংস্থার প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।


বিজ্ঞাপন