স্বাধীনতা মানে শুধু ভৌগিলক স্বাধীনতা নয়

জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : রোববার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আলোচনাসভায় দুদক চেয়ারম্যান ড. ইকবাল মাহমুদ বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ নিপীড়িত মানুষের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির এক অনবদ্য আহবান, অনুপম সাহিত্য কর্ম, গেরিলা যুদ্ধের প্রস্ততি, রাজনীতির অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিক নির্দেশনার এক সমন্বিত দলিল। এ ভাষণের প্রতিটি শব্দই তাৎপর্যপূর্ণ। একটি তর্জনী একটি দেশের স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে উঠবে এমনটি আমি অন্য কোনো ভাষণে দেখি নাই। এই তর্জনী আজ বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে। এটা আমাদের গর্বের।


বিজ্ঞাপন

স্বাধীনতা মানে শুধু ভৌগিলক স্বাধীনতা নয়, বরং স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য হচ্ছে গণমানুষের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে মুক্তির কথা বলেছেন। যুদ্ধ থেকে শান্তি, অতীত থেকে ভবিষ্যত সবই বলেছেন। তাইতো ৫০ বছর আগের এ ভাষণ আজ যখন বাজে, তখন আমাদের রক্তে অনুরণন ঘটে। এটা চিরঞ্জীব, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চির ভাস্বর হয়ে থাকবে। ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বাঙালির স্বাধীনতার নতুন সূর্য ফিরে পাওয়ার প্রথম দীপ্ত উচ্চারণ বলে আমি মনে করি।

ড.ইকবাল মাহমুদ আরো বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ আমাদের শক্তি দেয়, প্রেরণা দেয়। বঙ্গবন্ধু যে মুক্তির কথা বলেছেন , সেই মুক্তি পেতে হলে দুর্নীতি বন্ধ করতেই হবে। যেহেতু এটা দুদকের আইনি দায়িত্ব , তাই দৃঢ়তার সাথে নির্মোহভাবে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখা হবে। সার্বিকভাবে মুক্তির জন্য শিক্ষকসহ সমাজে যার যার যে দায়িত্ব আছে, তা সঠিকভাবে পালন করতে হবে। তাই আসুন, আমরা সবাই আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমে মুক্তির পথকে এগিয়ে নিয়ে যাই। এসময় দুদক চেয়ারম্যান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিদেহী আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন।

আলোচনাসভায় দুদক কমিশনার ড.মোঃ মোজাম্মেল হক খান বলেন, ৭ ই মার্চের ভাষণটি ছিল অলিখিত, জাতির পিতার হৃদয় থেকে উৎসারিত। এটা প্রথম ছিল রেসকোর্স ময়দনে উপস্থিত ১০ লক্ষ জনতার, তারপর হলো বাংলাদেশের মানুষের, আজ তা সারা বিশ্বের মানুষের সম্পদে পরিণত হয়েছে। এই ভাষণে ইতিহাস, সংগ্রাম, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, যুদ্ধের কৌশল, ভাষা ঐতিহ্য সবই ছিল ।

দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম জাতির পিতার রাজনৈতিক জীবনের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে বলেন, এ ভাষণকে অতীতের ঐতিহাসিক সংগ্রাম, বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনার একটি দলিল বলা যেতে পারে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা এক সময় মন্ত্রী হিসেবে দুর্নীতি দমন ব্যুরোর দায়িত্বে ছিলেন। তাই প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আদর্শবান কর্মী হিসেবে অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমে দেশ সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে।

দুদক সচিব ড.মুহা: আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, ঐতিহাসিক এই ভাষণ আজ শুধু জাতীয় সম্পদ , এটা আজ আন্তর্জাতিক সম্পদে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। আচার-আচরণে ইতিবাচক হওয়া উচিত। নেতিবচক মানসিকতার কারণেই ভালো কাজেরও সমালোচনা হয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সামান্য ত্রুটিকে বড় করে দেখা হয়।

আলোচনাসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদকের মহাপিরচালক আ ন ম আল ফিরোজ, পরিচালক শেখ মোঃ ফানাফিল্যা, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মোঃ আকতার হোসেন, উপপরিচালক নাজমুস সায়াদাত, মোঃ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।