নিজস্ব প্রতিনিধি : বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত ‘বাংলাদেশ পুলিশ অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ’ এর ইনবক্সে মৌলভীবাজার জেলা থেকে মেডিক্যাল শিক্ষার্থী এক ছাত্রী একটি বার্তা প্রেরণ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, তার সাথে কোনো এক ছেলের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু, সম্পর্কের কিছু দিনের মধ্যেই সে জানতে পারে যে ছেলেটি ভাল নয়। মাঝে মাঝে নেশা করে এবং স্বভাব চরিত্রও ভাল নয়। জানার পর ছেলেটির সাথে সম্পর্ক না রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সে। কিন্তু ছেলেটি তাকে বিরক্ত করতে থাকে।
এক পর্যায়ে পরিবারের উদ্যোগে ছেলেটি বিদেশে চলে যায়। কিন্তু, সেখান থেকে সে মেয়েটির নামে ফেইক আইডি খোলে এবং তার ছবি এডিট করে নানা অশ্লীল ছবি ও ভিডিও তৈরী করে তা মেয়েটির নিকটজনদের কাছে পাঠাতে থাকে। এক পর্যায়ে তাকে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করার জন্য হুমকি দিতে থাকে। ছেলেটির কথা না শুনলে সেইসব ভুয়া ছবি ও ভিডিও মেডিকেল কলেজে মেয়েটির সহপাঠি ও শিক্ষকদের কাছেও পাঠানো হবে বলে হুমকি দেয়।
ছেলেটির নিয়মিত হুমকি ও হয়রানির ফলে মেয়েটি তার পড়াশুনায় মন দিতে পারছিল না। তার জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছিল। তার পরিবারও এটি নিয়ে বেশ বিড়ম্বনায় ছিল। তারা ছেলেটির পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে এর প্রতিকার চেয়েও কোনো সহযোগিতা পায়নি।
ছেলেটির নাম ইমরান হোসেন। তার পরিবার থাকে গাজীপুর মেট্টোপলিটন এর বাসন থানা এলাকায়। মেয়েটির ভাষায়, ‘আমার পরিবারের সবাই কথা বলেছে। কিন্তু, ওই ছেলের বাবার কথা হল যে ওনার ছেলে যা ইচ্ছে করুক আর আমরা যা পারি আমরা যেন করি। উনি উনার ছেলেকে উস্কানি দিচ্ছেন। উনার প্রশ্রয়ে ওনার ছেলে আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ওই ছেলে আজকে আমার মেডিক্যালের সহপাঠিদের নক দিয়েছে। আমি কিভাবে স্যার মেডিকেলে যাব? আমি কিভাবে পড়াশুনা করবো?’ উল্লেখ্য, ছেলেটি বলতো যেহেতু সে বিদেশে থাকে। বাংলাদেশের পুলিশ তার কিছুই করতে পারবে না। কোনোভাবেই তাকে থামানো যাচ্ছিল না।
বার্তাটি পেয়ে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং উক্ত ছাত্রীর পাশে দাঁড়ায় এবং তাকে সকল প্রকার পুলিশি সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। গাজীপুরের বাসন থানার ওসি মো. কামরুল ফারুককে নির্দেশনা দেয় ছেলে ও তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে। এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করতে মেয়ের পরিবারকে মৌলভী বাজার থেকে গাজীপুর আসতে হতো। মেয়েটির বৃদ্ধ বাবার শারীরিক অবস্থা, করোনাকাল ও দূরত্ব বিবেচনা করে মিডিয়া উইং এর পরামর্শে ও বিশেষ সুপারিশে অনলাইনে মেয়েটির পরিবারের নিকট থেকে অভিযোগ নেয় থানা পুলিশ।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ছেলের পরিবারকে থানায় ডাকা হয়। পরবর্তীতে, মেয়েটির পরিবারের সম্মতিতে এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিশ্চয়তায় একটি মুচলেকার ভিত্তিতে বিষয়টির সমাধান হয়। মুচলেকার সেই কপিটি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মেয়ের পরিবারকে পাঠিয়েছে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং।
ঘটনার পর মেয়েটির ভাষ্য,‘ আসসালামুআলাইকুম, স্যার। আপনারা আমার যে উপকার করেছেন তার জন্য কোনো কৃতজ্ঞতাই যথেষ্ট না। কিভাবে থ্যাংক ইউ জানাবো, সে ভাষা আমার জানা নাই। গত কয়েকদিন যাবৎ আমি এই ব্যাপারটা নিয়ে অনেক টেনশনে ছিলাম। এখন থেকে আমি মনোযোগ দিয়ে আমার পড়াশোনা কন্টিনিউ করতে পারবো।’
উল্লেখ্য, যে কারো সাথে সম্পর্ক স্থাপনে অত্যন্ত সতর্ক থাকা উচিত। কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে খুব ভাল ভাবে না জেনে তার সাথে কখনোই সম্পর্কে জড়ানো উচিত নয়।