হেফাজতের ব্যানারে তাণ্ডব আড়াল করতেই বিএনপির মিথ্যাচার: তথ্যমন্ত্রী

জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তির সময় হেফাজতের ব্যানারে বিএনপি-জামায়াতের সক্রিয় অংশগ্রহণে যে তাণ্ডব হয়েছে তা অস্বীকার করা এবং অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর অপচেষ্টা করা বিএনপি মহাসচিবের মিথ্যাচারেরই বহিঃপ্রকাশ।


বিজ্ঞাপন

‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করোনা হওয়ার জন্যও আওয়ামী লীগ দায়ী’—এমন কথাও বিএনপি মহাসচিব দাবি করতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তথ্যমন্ত্রী।

রবিবার (১৩ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘মার্চের তাণ্ডব হেফাজত নয়, আওয়ামী লীগেরই সাজানো’ বক্তব্যের প্রতিবাদ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘২৬, ২৭ ও ২৮ মার্চ যেসব ঘটনাপ্রবাহ চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা এবং অন্যান্য জায়গাসহ সমগ্র বাংলাদেশে ঘটেছে, সেগুলো কারা ঘটিয়েছে, সেই ভিডিও ফুটেজ আছে। আসামিদের বিচার হচ্ছে। যারা ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। মির্জা ফখরুল যখন এই কথাগুলো বলেন, তখন প্রমাণিত হয়—তারা যে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তা অস্বীকার করার জন্যই বলেছেন। এরকম জঘন্য মিথ্যাচার একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদের কাছ থেকে কখনও কাম্য নয়। তার বরং উচিত ছিল—যারা এই ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে, তাদের নিন্দা জানানো। সেটি না করে বরং মিথ্যাচার করে এ ধরনের ঘটনাকে উসকে দেওয়া হচ্ছে, প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে— এটি কখনও সমীচীন নয়।’

‘জনগণের উত্তাল আন্দোলনে আওয়ামী ভেসে যাবে’ মির্জা ফখরুলের এ মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ কথা আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার ৬ মাস পর থেকে, অর্থাৎ ১২ বছর ধরে শুনে আসছি। বাস্তবতা হচ্ছে—জনগণের রায় নিয়ে পরপর তিনবার জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করেছেন, দেশ পরিচালনা করছেন। এসব কথা বলে নিজেরা নিজেদের হাস্যকর করে তুলছেন।’

জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ঠিক উত্তর দিতে পারবে। তবে এ কথা ঠিক, জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করেছেন।’

বিএনপি মহাসচিবের অপর মন্তব্য ‘আওয়ামী লীগ ইতিহাস বিকৃতি করছে’-এর জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘ফখরুল সাহেব পারিবারিকভাবে দুইবার ক্ষমতায় ছিলেন। তার বাবা এরশাদ সাহেবের মন্ত্রী ছিলেন। তিনি আবার খালেদা জিয়ার মন্ত্রী ছিলেন। তারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন বঙ্গবন্ধুর নাম রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনসহ সকল প্রচারযন্ত্রে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং ক্রমাগত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হলো, আর সেই বঙ্গবন্ধুকেই অস্বীকার করা হয়েছিল এবং স্বাধীনতার খলনায়ককে নায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। আজকে যখন ঠিক ইতিহাসটা জনগণ জানতে পারছে, তখন তাদের গাত্রদাহ হচ্ছে। এজন্য তারা এসব কথা বলছে।’

‘গণমাধ্যমকর্মী আইন’ প্রণয়নে অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আইনের চূড়ান্ত খসড়া আইন মন্ত্রণালয় থেকে ভেটিং হয়ে মন্ত্রিসভায় যাবে। এ আইন প্রণীত হলে বিএনপি’র সময় গণমাধ্যমকর্মীদের যে শ্রমিক বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেটি থেকে মুক্তিলাভ হবে। সম্প্রচারের সঙ্গে যুক্তদের আইনি সুরক্ষা হবে। যেকোনও সময় ছাঁটাই করা অনেকটা বন্ধ হয়ে যাবে।’