আজকের দেশ রিপোর্ট : কখনো কাদায় ভরা পাহাড়ি মেঠো পথ, আবার কখনো অন্ধকারাচ্ছন্ন গিরিপথ। আবার কখনো পাহাড়ি ঝিরি এবং খাল। সবকিছু পেরিয়ে ২ পাহাড়ি সন্ত্রাসীকে নিয়ে পায়ে হেঁটে এগিয়ে যাচ্ছে পিবিআইয়ের একটি বিশেষ টিম।
৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পায়ে হাঁটার পর হত্যার সম্পৃক্ত দু’আসামিই দেখিয়ে দেয় পিকআপ চালক মোসলেমকে অপহরণ এবং হত্যার পর লাশ গুম করার স্থান। এরপর শুরু হয় লাশের সন্ধানে সম্ভাব্য স্থানগুলোতে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি। কিন্তু পাহাড়ি ঢলের কারণে লাশ উদ্ধারে তাদের চরম বেগ পেতে হচ্ছে।
রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা এবং চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকাটি পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর কিডন্যাপ হাইড পয়েন্ট হিসেবে পরিচিত। ওই হত্যা মামলার ২ আসামিকে আটকের পর তাদের নিয়েই পিবিআই লাশ উদ্ধারের অভিযানে নামে।
পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, ‘চন্দনাইশের ধোপাছড়ি থেকে এই মামলার ২ আসামিকে পিবিআই গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি অংশ নেয়ার পাশাপাশি লাশ গুমের কথা স্বীকার করে। এরপরই আমরা তাদের নিয়ে লাশ উদ্ধারের জন্য দুর্গম এই এলাকায় আসলাম।’
পিবিআইয়ের পরিদর্শক একেএম মহিউদ্দিন সেলিম জানান, গত বছরের ২১িি ফেব্রুয়ারি রাতে চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ পিকআপ চালক মোসলেমকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ মেলেনি।
এ ঘটনায় অপহৃতের বড় ভাই আবু তাহের বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ মামলার কোনো সুরাহা করতে না পারলে তদন্তভার পায় পিবিআই।
আটকরাও স্বীকার করেছে উথই প্রু মারমা নামে এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর হয়ে তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে লাশ ঘুম করেছিল।
এদিকে, দুর্গম হওয়ার কারণে পুরো এলাকাটি পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের অপহরণ রাজ্য বলে দাবী স্থানীয়দের।
গত কয়েকদিন আগেও এই এলাকা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল।
মোসলেমের পরিবারের অভিযোগ, ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপটি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
পটিয়ার সীমান্তবর্তী হাইদগাঁও থেকে ২০ টির বেশি ছোট-বড় পাহাড়, ৪ টি বড় পাহাড়ি ঝিরি এবং গহীন বন পেরিয়ে পৌঁছাতে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের এ আস্তানায়।