রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতায় বঙ্গবন্ধু নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার

রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু নৃশংস হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
রোববার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে পিরোজপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় রাজধানীর বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন। কিন্তু প্রতিবিপ্লবীদের হাতে তাঁর নির্মম হত্যাকা- আমরা রুখতে পারিনি। সেদিন রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা ব্যর্থ হয়েছিলেন। সে সময় রাজনৈতিক নেতৃত্ব সঠিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিলেন তারা যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে পারলে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংস হত্যাকা-ের শিকার হতে হতো না। কেন আমরা সেদিন সঠিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারিনি, এই বিষয়টি অনুধাবন করতে হবে। এ নিয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। রাজনৈতিক নেতৃত্বে কারা ব্যর্থ হয়েছে, কারা ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল, কারা ষড়যন্ত্রের কথা জেনেও পদক্ষেপ নেয়নি, তাদের স্বরূপ উন্মোচন করতে হবে। তাহলে ইতিহাসের রেকর্ডে এই কলঙ্কজনক অধ্যায়ে অভিযুক্তদের কথা থেকে যাবে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ হত্যার জন্য বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধু বা তাঁর পরিবার অথবা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্টজন যারা নেতৃত্ব দিতে পারেন তাদের কাউকে বাঁচিয়ে রাখা হবে না। বঙ্গবন্ধুর সরাসরি খুনিদের বিচার করা সম্ভব হয়েছে কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিচার আমরা করতে পারিনি। বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থদের বিচারও আমরা করতে পারিনি।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুদের প্রেতাত্মা এখনো এ দেশে বাস করছে। এ কারণে এখনো মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ব্যক্তিরা দেশে নিরাপদ নয়। এদের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে হলে সাংগঠনিক শক্তিকে দৃঢ়তর করতে হবে। দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। সম্মিলিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেখানে হাইব্রিড রাজনীতিতে সম্পৃক্ত, অর্থ-বিত্তের লোভের সাথে সম্পৃক্ত মানুষরা থাকবে না। তা না হলে আমাদের রাজনীতি আবার ঠুনকো ধাক্কায় ভেঙে যেতে পারে।
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হাকিম হাওলাদার। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না, পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবর রহমান খালেক, পিরোজপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান ফুলু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোপাল বসু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গৌতম নারায়ণ চৌধুরীসহ পিরোজপুরের বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকতা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন।


বিজ্ঞাপন