টিকটক চক্রের খপ্পরে পড়ে অপহরণ হওয়া ঢাকার বৈশাখীকে ময়মনসিংহ থেকে উদ্ধার

অপরাধ

বিশেষ প্রতিবেদক : টিকটক চক্রের খপ্পরে পড়ে অপহৃত ঢাকার কাফরুল থানা এলাকার ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী বৈশাখীকে ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থেকে উদ্ধার হলো র‍্যাব ৪ এর সহায়তায়। অপহরণকারী চক্রের ১ সদস্য কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।


বিজ্ঞাপন

এলিট ফোর্স হিসেবে র‌্যাব আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে।

জঙ্গীবাদ, খুন, ধর্ষণ, নাশকতা এবং অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি মনুষ্য অপরহরণকারী চক্রের সাথে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র‌্যাব সদা তৎপর।

গত ১২ সেপ্টেম্বর ৮ম শ্রেণীর এক ছাত্রী তার কাফরুল এর বাসা থেকে স্কুলে যাবার কথা বলে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেনি মর্মে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তার পিতা।

কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পর তার কন্যা বাড়িতে ফেরত না আসায় পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর পিতা র‌্যাব-৪ বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করে। যার প্রেক্ষিতে র‌্যাবের একটি দল এটির ছায়াতদন্ত শুরু করে।

এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৪ এর উক্ত অভিযানিক দল গত রবিবার ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০ টা হতে গত রবিবার ২৬ সেপ্টেম্বর সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত ভিকটিম’কে উদ্ধারপূর্বক অপহরণকারী চক্রের অন্যতম হোতা রায়হান হোসেন (২২), জেলা- লক্ষীপুর’কে গ্রেফতার করতে করতে সমর্থ হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, অপহরণকারীরা একটি টিকটক গ্রুপের সদস্য। এই গ্রুপে ৭/৮ জন সদস্য রয়েছে যারা ঘন ঘন লাইভে এসে একে অপরের সাথে বাক্য বিনিময় এবং তথ্য আদান প্রদান করে।

উক্ত গ্রুপের অন্যতম সদস্য ঢাকার নর্দায় আজিজ সড়কে অবস্থানকারী গ্রেফতারকৃত রায়হান, পলাতক রবিন ও খোকন। রায়হান একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে গাড়ি চালাতো।

জিজ্ঞাসাাবাদে সে জানায় যে, নারায়ণগঞ্জে তার স্ত্রী ও সন্তান আছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, খোকন অন্য একটি বেসরকারী কোম্পানিতে কাজ করে এবং রবিন নর্দায় একটি সেলুনে কাজ করে। উক্ত টিকটক গ্রুপের আরো বেশ কয়েকজন সদস্যের নাম পাওয়া যায়। এই টিকটক গ্রুপের অন্যতম দুইজন সদস্য মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী বলে জানা যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, তারা স্কুলপড়ুয়া উঠতি বয়সী মেয়েদের প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে বিপথে পরিচালিত করতো। তারা অত্যন্ত ধুরন্দর প্রকৃতির। উক্ত টিকটক গ্রুপের সদস্যরা নানা অপকর্মে লিপ্ত।

তারা টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেনামী পরিচয় ব্যবহার করত। অপহৃত ভুক্তভোগী বেশ কিছু দিন ধরে এই টিকটক গ্রুপের সাথে যুক্ত ছিল।

নিখোঁজ হওয়ার দিন অপহৃত ভুক্তভোগী বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার কথা বলে বের হয় এবং গ্রেপ্তারকৃত রায়হান বিভিন্ন প্রলোভনে ভুলিয়ে তাকে নর্দায় আজিজ রোডের একটি ভাড়া করা বাসায় আটকে রাখে।

বৈশাখীর পরিবার তাকে খুঁজে পেতে পুলিশের শরণাপন্ন হয়েছে জানতে পেরে বৈশাখীকে সুকৌশলে উক্ত ভাড়া করা বাড়ি থেকে বের করে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে পাঠিয়ে দেয় রায়হান।

উক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতেও এইরুপ শিশু অপহরণকারী চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাব-৪ এর জোরালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।