সোনাইমুড়ীতে ‘গান্ধী মেমোরিয়াল মিউজিয়াম’ উদ্বোধন

সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি : নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার জয়াগ গান্ধী আশ্রমে মহাত্মা গান্ধীর ১৫২তম জন্মবার্ষিকী, আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস উদযাপন এবং নবরুপায়িত গান্ধী মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের উদ্বোধন করা হয়।


বিজ্ঞাপন

গতকাল শনিবার (২ অক্টোবর) বিকেল ৪ টায় গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট্রের ক্যাম্পাসে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এড. আনিসুল হক।

গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট্র ও ভারতীয় হাই কমিশন বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে সন্মানিত অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, ভারতীয় হাইকমিশনার শ্রী বিক্রম দোরাইস্বামী। এতে অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ও সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর , সংসদ সদস্য ও বিশিষ্ট উন্নয়ন কর্মী মিজ অরোমা দত্ত, জাতিসংঘের অন্তর্বর্তীকালীন আবাসিক প্রতিনিধি তৌমু পউতি আইনেন।

গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকারের সভাপতিত্বে পরিচালক সিইও রাহা নব কুমারের সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, জেলা পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম, সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফজলুর রহমান প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ শাসনামলের শেষের দিকে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানের মতো নোয়াখালীতেও হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। সেই দুঃসময়ে শান্তি মিশন নিয়ে নোয়াখালীতে ছুটে আসেন মহাত্মা গান্ধী।

১৯৪৬ সালের ৭ নভেম্বর থেকে ১৯৪৭ সালের ২ মার্চ পর্যন্ত নোয়াখালী অবস্থানকালে তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, হিন্দু-মুসলিম ভ্রাতৃত্ব স্থাপনসহ সেবামূলক বিভিন্ন কাজে হাত দেন।

এভাবে ১৯৪৭ সালের ২৯ জানুয়ারি সোনাইমুড়ির জয়াগ গ্রামে গান্ধীর আগমন ঘটে। জয়াগের তৎকালীন জমিদার ব্যারিস্টার হেমন্ত কুমার ঘোষ সব সম্পত্তি মানুষের কল্যাণে ব্যবহারের জন্য গান্ধীকে দিয়ে দেন। এরপর জমিদারবাড়িতে গড়ে ওঠে গান্ধী শান্তি ক্যাম্প।

বাড়ির পাশে একটি কারিগরি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন গান্ধী। যা পরে গান্ধী মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউট ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে জাতীয়করণ করা হয়।

যেখানে কর্মমুখী শিক্ষার পাশাপাশি গান্ধীর জীবনদর্শন ‘অহিংস নীতি’ এর শিক্ষা দেয়া হয়।

গান্ধীর দৃষ্টিতে সাতটি সামাজিক অপরাধ যা বিশ্বব্যাপী সহিংসতাকে উস্কে দেয় যেমন- নীতিহীন রাজনীতি, চরিত্রহীন শিক্ষা, শ্রমহীন সম্পদ, নৈতিকতাহীন বাণিজ্য, মানবতাহীন বিজ্ঞান, ত্যাগহীন অর্চনা, বিবেকহীন আনন্দ।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ‘গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট’ অর্ডিন্যান্স গঠনের মধ্যদিয়ে মানুষের মধ্যে গান্ধীর জীবন দর্শন ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ও বিভিন্ন সেবামূলক কাজ শুরু করা হয়।