বিএসটিআই’র সক্ষমতা না বাড়লেও বাড়ছে দেশের মানুষের সক্ষমতা

জাতীয়

বিশেষ প্রতিবেদক : মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআই’এর সক্ষমতা না বাড়লেও বাড়ছে দেশের মানুষের সক্ষমতা। বড় হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তালিকাও। একই সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক পণ্যের তালিকায় যুক্ত করা হচ্ছে নতুন নতুন পণ্য।


বিজ্ঞাপন

এগুলোর উৎপাদন, বাজারজাতকরণ বা বিক্রির ক্ষেত্রে তদারকির এখতিয়ার দেশের একমাত্র মাননিয়ন্ত্রনকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। পণ্য বাড়লেও সক্ষমতা বাড়ছে না সংস্থাটির ।

এবছর খাবারের পাশাপাশি ঘরের কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী, বেশকিছু প্রসাধনী, কাপড়, জুতা, স্বর্ণ, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস এবং নির্মাণকাজে ব্যবহৃত পণ্যগুলোর জন্য বিএসটিআইয়ের মান সনদ নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বর্তমানে বাধ্যতামূলক তালিকায় রয়েছে মোট ২৩৯টি পণ্য।

এর মধ্যে এবছর যুক্ত হয়েছে নতুন ৪৭টি পণ্য। এর আগে একসঙ্গে এতগুলো পণ্য কখনো বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক তালিকায় যুক্ত হয়নি।

এসব পণ্য এখন বাজারজাতকরণে বাধ্যতামূলকভাবে বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স নিতে হয়। পাশাপাশি পণ্যগুলোর মান সার্ভিলেন্স করছে সংস্থাটি।
বিএসটিআইয়ের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের একমাত্র মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিএসটিআইয়ের সক্ষমতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় আমাদের বাধ্যতামূলক পণ্যের তালিকা অনেক ছোট। বিশেষ করে সব ধরনের খাদ্যপণ্য বিএসটিআইর তদারকির আওতায় থাকা দরকার।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, এবছর একসঙ্গে এতগুলো পণ্য বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক তালিকায় যুক্ত করার বিষয়টিকে সাধুবাদ জানাই। সংস্থাটির সক্ষমতা আরও বাড়ানো দরকার। কারণ এটি দেশের একমাত্র মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা।

তিনি আরও বলেন, নিত্য ব্যবহার্য পণ্যগুলোর মান নিয়ে মানুষ খুবই শঙ্কায় থাকে। সেগুলোর মান বিএসটিআইকে দেখতে হবে। এজন্য সারাদেশে বিএসটিআইয়ের কার্যক্রম জোরদার করা উচিত।

এ বিষয়ে বিএসটিআইয়ের পরিচালক (প্রশাসন) তাহের জামিল গণমাধ্যমকে জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ পণ্যগুলো স্ট্যান্ডার্ড ফর্মুলেশনের জন্য আমাদের ৭৬টি কমিটি রয়েছে। তারাই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পণ্য বাধ্যতামূলক করতে সুপারিশ করে। পাশাপাশি বিএসটিআই বাজারের পরিস্থিতি বুঝে বিভিন্ন নতুন পণ্য বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করে।

‘এরপর বিএসটিআইয়ের গভর্নিং কাউন্সিল সেগুলো চূড়ান্ত করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আইন মন্ত্রণালয় সেসব বাধ্যতামূলক তালিকা নিশ্চিত করে। ফলে পণ্য বাধ্যতামূলক করার ক্ষেত্রে বিএসটিআই চাইলেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।’
একমাত্র মাননিয়ন্ত্রনকারী সংস্থা হওয়ায় দেশের বাজারে উৎপাদন ও আমদানি করা সব পণ্যের উৎপাদন কার্যক্রম, বাজারজাতকরণ, মোড়কীকরণ এবং বিক্রয় কার্যক্রম নজরদারির দায়িত্ব বিএসটিআইয়ের।
কিন্তু বিএসটিআই আইনে বাধ্যতামূলক পণ্যের বাইরে অন্য পণ্যগুলো তদারকির সম্পূর্ণ এখতিয়ার নেই প্রতিষ্ঠানটির।

এদিকে এখতিয়ারভুক্ত পণ্যগুলোর সার্ভিলেন্স করছে বিএসটিআই। ২০২০-২১ অর্থবছরে এক হাজার ২৯৬টি সার্ভিলেন্স কার্যক্রম চালিয়েছে সংস্থাটি। এ কার্যক্রমে ২২৬টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করা হয়। এসব মামলায় সাজা হয়েছে ৪৩ জনের এবং ৫১টি কারখানা স্থায়ীভাবে সিলগালা করা হয়েছে গত এক বছরে।