যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান-সচিবসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিনিধি : আয়কর ও ভ্যাট কর্তনের নামে মিথ্যা বর্ণনায় সরকারি আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সচিবসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।


বিজ্ঞাপন

গতকাল সোমবার (১৮ অক্টোবর) দুদকের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।


বিজ্ঞাপন

দুদক সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুদক সচিব বলেন, গত ১০ অক্টোবর দুদকের হটলাইন-১০৬ এ আসা অভিযোগের ভিত্তিতে সংস্থাটির এনফোর্সমেন্ট টিম যশোর শিক্ষা বোর্ডে একটি অভিযান চালায়। সেখানে দেখা যায় ৯টি চেকের মুড়িতে যে পরিমাণ আয়কর ও ভ্যাট কর্তন করা হয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করা হয়েছে। যার পরিমাণ আড়াই কোটি টাকা টাকা। যে কারণে আজ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আসামিদের গ্রেফতার করবে কিনা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি প্রয়োজন মনে করেন তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতার করতে পারেন।

মামলার আসামিরা হলেন- যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোল্লা আমীর হোসেন, সচিব অধ্যাপক এ এম এইচ আলী আর রেজা, হিসাব সহকারী আব্দুস সালাম এবং ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক শেখ শরিফুল ইসলাম বাবু ও শাহী লাল স্টোরের মালিক আশরাফুল আলম।

দুদক সূত্রে জানা যায়, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ২০২০-২১ অর্থবছরের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট থেকে দেখা যায়, বোর্ডের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এসটিডি হিসাব খাতে নয়টি চেক পরিশোধিত হয়। বোর্ডে সংরক্ষিত চেকের রক্ষিত অংশে উল্লেখিত টাকার পরিমাণের সঙ্গে ব্যাংক কর্তৃক পরিশোধিত টাকার মিল নেই। ইস্যু করা চেকগুলোর বিপরীতে ভ্যাট ও আয়কর বাবদ সরকারি কোষাগারে অর্থ পরিশোধিত হয়নি। অথচ ওই চেকের বিপরীতে জালিয়াতি করে দুটি প্রতিষ্ঠান ব্যাংক থেকে ২ কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার টাকা উত্তোলন করেছে।

বোর্ডের রেজিস্ট্রার নিরীক্ষা করে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠান দুটি ওই টাকার বিপরীতে বোর্ড স্টোরে কোনো মালমাল সরবরাহ করেনি। নিয়মানুযায়ী কোনো প্রতিষ্ঠান বোর্ডে মালামাল ও সেবা সরবরাহের লক্ষ্যে বোর্ডের সচিবের সই করা কার্যাদেশ পাওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্টোরে মালামাল সরবরাহ পূর্বক বোর্ডের সচিবের কাছে মালামালের চালান ও বিল ভাউচার দাখিল করে। এরপর বোর্ডের সচিব মালামাল বুঝে নেওয়ার জন্য চালান ও বিলের ওপর স্টোর কিপারকে মার্ক করে স্টোরে পাঠান।

সূত্র আরও জানায়, স্টোর কিপার ওই চালান এবং বিল ভাউচার সচিব কর্তৃক স্বাক্ষরিত স্মারকের কার্যাদেশ অনুযায়ী মালামাল বুঝে নিয়ে বিল দেওয়ার লক্ষ্যে রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে বিল ভাউচার হিসাব প্রধান শাখায় প্রেরণ করেন । কিন্তু এক্ষেত্রে হিসাব প্রধান শাখার কার্যাদেশের মাধ্যমে বিল প্রদান নথি পরীক্ষা করে দেখা যায়, পরিশোধিত অর্থের বিপরীতে কোনো বিল ভাউচার নথিতে উপস্থাপন করা হয়নি। অথচ জালিয়াত চক্র ও প্রতিষ্ঠান দুটি সুকৌশলে অন্য বিল হতে ভ্যাট ও আয়কর সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার লক্ষ্যে ইস্যু করা চেকগুলোর মুড়ির নম্বর এবং তারিখের সঙ্গে মিল রেখে চেক জালিয়াতি করে বোর্ড তহবিল হতে অর্থ উত্তোলন করে নিয়েছে। আসামিরা দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯/৪৭৭ (ক) তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অপরাধ করেছেন।