টাকা পাচারের চেয়ে মেধা পাচার বেশি হতাশার

উপ-সম্পাদকীয়/মতামত

মন্তব্য প্রতিবেদন


বিজ্ঞাপন

আমিনুর রহমান বাদশা : খবরে দেখলাম মঙ্গল গ্রহের জন্য ড্রোন তৈরিতে বিশ্বের ২৬ টি দলের মধ্যে সেরা দশে রয়েছে বাংলাদেশের দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি ড্রোন। বুয়েট ও কুয়েটের তৈরি ড্রোন মঙ্গল গ্রহে চলতে সক্ষম।
কত ক্যলকুলেশন করে তৈরি করতে হয়েছে হিসেব আছে?
আবার বাংলাদেশের তৈরি মঙ্গলযানও নাসায় সেরা হয়েছিল। সবাই তো মহাখুশি।

এতে লাভ কি হচ্ছে?
এই মেধাবী ছেলেগুলো যারা প্রজেক্ট এ অংশ নিলো তারা অনার্স শেষে কোথায় যায়?

বিজ্ঞানের ছাত্র হচ্ছে পুলিশের এডমিন। যে ড্রোন বানাতো সে দিনরাত পড়াশোনা করবে কাস্টম অফিসার হওয়ার জন্য। আর যারা এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমাবে তারা জীবনের একটা পর্যায়ে Airbus, boeing, lockheed martin,nasa এর মতো বড় বড় এরোস্পেস কোম্পানিতে কাজের সুযোগ পাবে।

তাহলে এই যে প্রতিবছর বুয়েটে কুয়েটে শত শত কোটি টাকা বাজেট দিয়ে এই ছেলেমেয়েদের পড়ানো হচ্ছে এতে দেশের কি লাভ হচ্ছে? তাঁরা দেশের জন্য কিছু উদ্ভাবন ও করছেনা বরং বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে।

কতদিন আগে জানলাম বিশ্বের সেরা যুদ্ধবিমানের জন্য যে শক্তিশালী পাতলা শংকর ধাতুর প্রয়োজন ছিল সেটার উদ্ভাবন করেছে একজন বাংলাদেশী।

উনি তার সারা জীবনে চাকরি জীবনে হয়তো এক হাজার কোটি টাকাই বেতন পেয়েছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই এফ-১৬ দিয়ে শত শত বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। যাইহোক এই মেধাগুলোর জন্য কি দেশে কর্মসংস্থান করা যায়না?

বাংলাদেশে কি ড্রোনের চাহিদা নেই? সামরিক বাহিনীতে তো অনেক চাহিদা। শত শত কোটি টাকার ড্রোন কেনা হয়। এখন যদি সরকার বলে ১০০ কোটি টাকার প্রোজেক্ট। সেনাবাহিনীর জন্য এই এই মানের একটা ছোট আকৃতির নজরদারি ড্রোন লাগবে। যাদের ডিজাইন পাশ হবে তারা পাবে একশো কোটি।

তারপর এরকম ২০০/৩০০ ড্রোন ক্রয় করা হবে। তখন বেসরকারি কোম্পানীগুলো পাগলের মতো এইসব ছাত্রদের চাকরি দিবে। হ্যা বেসরকারি কোম্পানীকে সুযোগ দিতে হবে। সরকারি কোম্পানি কি করতে পারে তা চিনিকল, বিআরটিসি এর মতো প্রতিষ্ঠান দেখলেই বুঝা যায়।

যাই হোক এইসব কোম্পানি গুলোকে ধাপে ধাপে বড় কাজের টেন্ডার দিতে হবে। এতে দেশের টাকা দেশে থাকবে।
ছেলেমেয়ে গুলো বিদেশে পাড়ি জমাবেনা।

আর দেশ আত্মনির্ভর হবে। যে ছেলেগুলো মঙ্গলের মতো উঁচুনিচু পাথরের ভূমির জন্য রোবট তৈরি করে সেরা হতে পারে। তারা কি পারবেনা বোম্ব ডিসপোজাল রোবট বানাতে? কিন্তু এগুলো আমাদের বিদেশ থেকে ক্রয় করতে হয়।

যারা বোম্ব ডিসপোজাল রোবট বানাতে পারবে তারা কি পারবেনা জাতিসংঘ মিশনে ব্যবহারের জন্য আইইডি ডিসপোজাল রোবট বানাতে?

যদি ২০২০ সালে তারা ৫ কিমি রেঞ্জ এর রকেট বানাতে পারে তাহলে ২০৩০ সালে তারা ১০০ কিমি রেঞ্জের মিসাইল ও বানাতে পারবে। যারা আজকে ৫ কেজি পো লোডের ড্রোন বানাতে পারবে তারা ৫/১০ বছর পর ১০০ কেজি লোডের ড্রোন ও‌ বানাতে পারবে। তারা পারবে কামিকাজি ড্রোন বানাতে। প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা কত খাতে ক্ষতি হয়।

যদি এরকম গবেষণায় টাকা ব্যয় হয় তাহলে দেশের ছেলেমেয়েগুলোর একটা চাকরিও হলো মেধাগুলোর সঠিক ব্যবহার হলো।
বেসরকারি বড় ২/৪ টা কোম্পানি গুলোকে এরকম প্রজেক্ট দিয়ে সুযোগ দিয়ে ট্রাই করেই দেখুন তারাই বিদেশ থেকে কত প্রকৌশলী প্রযুক্তি এনে মারামারি শুরু করবে প্রজেক্ট জেতার জন্য। দিনশেষে লাভ কিন্তু আমাদেরই।