বাঘারপাড়া ভাংগুড়ায় প্রতারকচক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার

অপরাধ

সুমন হোসেন, যশোর : যশোর বাঘারপাড়া থানার মামলা নং-০৭, তারিখ-১৮ অক্টোবর, ধারা-৪০৬/৪২০/১০৯ পেনাল কোড এর বাদী জাকির শেখ (৪৫), পিং-মৃত রতন শেখ, সাং-মহিষখোলা, থানা-নড়াইল সদর, জেলা-নড়াইল ধৃত অভিযুক্তদের কর্তৃক প্রতারিত হলে পুলিশ সুপার, পিবিআই, যশোর বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে অনুসন্ধানকালে বাদীর আনিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।


বিজ্ঞাপন

তৎপ্রেক্ষিতে উক্ত মামলাটি রুজু হয় এবং পিবিআই, যশোর স্ব-উদ্যোগে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে এসআই (নিঃ) ডি এম নুর জামাল এর উপর অর্পণ করা হয়।


বিজ্ঞাপন

মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) ডি এম নুর জামাল সঙ্গীয় অফিসার এসআই(নিঃ) স্নেহাশিস দাশ ও ফোর্স সহ যশোর জেলার আভিযানিক দল কর্তৃক পুলিশি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে গত ১৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১ টায় অভিযুক্ত মোঃ লাবলু খান(৩৮), পিতা-মোঃ শওকত আলী খান, সাং-খোর্দ্দ, থানা-পাটকেল ঘাটা, জেলা-সাতক্ষীরাকে তার নিজ বাড়ী থেকে, মোঃ গোলাম আলী(৩২), পিতা-মোঃ মান্নান আলী খান, সাং-খোর্দ্দ, থানা-পাটকেলঘাটা, জেলা-সাতক্ষীরাকে গত ১৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ১২ টার সময় তার নিজ বাড়ী থেকে, মোঃ শামসুর রহমান(৫১), পিতা-মৃত শাহাজাহান মোল্যা, সাং-ষাটখালী, থানা-বাঘারপাড়া, জেলা-যশোরকে গত ১৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ৩ টার সময় নিজ বাড়ী হতে, মোঃ মনিরুল ইসলাম(২৫), পিতা-মোঃ নছিয়ার বিশ্বাস এবং মোঃ রইজ হোসেন(২৮), পিতা-আঃ রহিম খান, উভয় সাং-মাহামুদপুর, থানা-বাঘারপাড়া, জেলা-যশোরদ্বয়কে গত ১৯ অক্টোবর ভোর ৪ টা ৪০ মিনিটে সময় ৪ নং অভিযুক্ত মনিরুল ইসলাম এর বসতবাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র।

তারা বিভিন্ন পশু হাটে গরু ক্রয় বিক্রয়ের দালাল পেশার পাশাপাশি হাটে আগত সহজ সরল ব্যক্তিদের প্রতারিত করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।

গত ২৭ অক্টোবর বিকাল অনুমান ৪ টার সময় অত্র মামলার বাদী মোঃ জাকির শেখ বাড়ীতে পোষা একটি গরু বিক্রয় এবং নতুন একটি ভাল জাতের গরু ক্রয়ের উদ্দেশ্যে তার প্রতিবেশী মোঃ সাখাওয়াতকে সংগে নিয়ে যশোর জেলার বাঘারপাড়া থানাধীন ভাংগুড়া নামক গরুর হাটে যায়।

জাকির শেখ তার গরুটি বিক্রয়ের জন্য সাখাওয়াতকে গরুর কাছে দাঁড় করিয়ে রাখে এবং সে গরুর হাটে আরেকটি গরু কেনার জন্য ভাল জাতের গরু খোঁজা খুজি করতে থাকে।

একপর্যায়ে জাকির শেখ একটি গরুর কাছে দাঁড়ায় এবং সেখানে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন গরু ক্রয় বিক্রয়ের দালাল চক্রের লোক দেখতে পায়।

অভিযুক্তরা জাকির শেখ এর সরলতার সুযোগে, বিভিন্নভাবে প্ররোচিত করে হাটের অন্য একটি সাদা কালো রং এর গরু যার মূল্য ১,৬৫,০০০ (এক লক্ষ পঁয়ষট্টি হাজার) টাকা দেখিয়ে উক্ত গরুটি ক্রয় করতে বাধ্য করে।

প্রতারক চক্রের এক সদস্য জাকির হোসেন এর নিকট থেকে ১,২০০ টাকা নিয়ে গরুটি ক্রয়ের হাসিল করে। উক্ত হাসিলে ১,৬৫,০০০ টাকায় গরুটির দাম নির্ধারণ হয়। হাসিল করে আসার পথে প্রতারক চক্রের ঐব্যক্তি জাকির শেখ এর নিকট থেকে ৫০,০০০ টাকা নিয়ে গরুটির কাছে এসে কৌশলে পালিয়ে যায়।

জাকির শেখ এর কাছ থেকে গরু ক্রয়ের হাসিলটি অভিযুক্ত মোঃ শামসুর রহমান (৫১) নিজেকে বাজার কমিটির সদস্য পরিচয় দিয়ে কৌশলে নিয়ে নেয় এবং তাকে বলে গরু ক্রয়ের ১,৬৫,০০০ টাকা পরিশোধ করে আপনি গরু নেন।

জাকির শেখ এর কাছে টাকা না থাকায় প্রতারক চক্রের আরেক পলাতক সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর ভুইয়া(৩৮), পিতা-মৃত ফায়েক ভুইয়া, সাং-মহিষখোলা, থানা ও জেলা নড়াইল এর নিকট থেকে ১,২০,০০০ টাকা ধার নিতে বাধ্য করে এবং জাকির শেখ এর ৪৫,০০০ টাকার গরুটি ৪২,০০০ টাকায় বিক্রয় করতে বাধ্য করে।

জাকির শেখ গরু বিক্রয়ের ৪২,০০০ টাকা, ধার বাবদ নেয়া ১,২০,০০০ টাকা এবং বাজার করতে আনা ১,০০০ সর্বমোট ১,৬৩,০০০ (এক লক্ষ তেষট্টি হাজার) টাকায় অভিযুক্তদের পছন্দের সাদা কালো রং এর গরুটি ক্রয় করতে বাধ্য করে।

গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত মোঃ মনিরুল ইসলাম জানায়, জাকির শেখ এর কাছে প্রতারনার মাধ্যমে ১,৬৩,০০০ টাকায় বিক্রয়কৃত গরুটি তারা ১,১১,০০০ টাকায় সাতমাইল বাজার থেকে ক্রয় করেছে মর্মে স্বীকার করে।

অভিযুক্তদেরকে গত ১৯ অক্টোবর মোঃ সাইফুদ্দীন হোসাইন, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রে আমলী আদালত কোতয়ালী, যশোর আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। মামলার তদন্ত অব্যহত রয়েছে।