আজকের দেশ রিপোর্ট : আবারও নতুন করে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এসব বৈঠকে তিনি বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শুনেছেন এবং তার অভিমতও ব্যক্ত করেছেন।
এসব বৈঠকের পর বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, তারেক রহমান এখন বিএনপিকে ক্ষমতায় নিতে চান না।
বরং প্রথমে তিনি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চান। আর এ কারণেই বড় ধরনের আন্দোলন নয় বরং ষড়যন্ত্রের দিকেই তার মনোযোগ রয়েছে। বিভিন্ন প্রসঙ্গে আকার-ইঙ্গিতে তিনি এ কথা বলেছেন।
একাধিক বিএনপি নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, তারেক রহমান এই সমস্ত বৈঠকে এও বলেছেন, আগে আওয়ামী লীগকে বিদায় করতে হবে, নইলে আমাদের ক্ষমতায় আসার চিন্তা বাদ দিতে হবে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমান আওয়ামী লীগকে হটাতে একটি মাস্টারপ্ল্যান গ্রহণ করেছেন, যা অনেকটা এরকম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষ ছড়ানো।
ইতিমধ্যে লন্ডন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সুইডেন থেকে বাংলাদেশে বিরোধী লাগাতার প্রচারণা শুরু হয়েছে এবং নোংরা অশ্লীল কুৎসিত ভাষায় তারেক রহমানের কিছু ভাড়াটে লোক আওয়ামী লীগের বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী সম্বন্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করছে।
এই সমস্ত ইউটিউব এবং ফেসবুকের কন্টেন্টগুলো অবাধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সরকার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বিএনপির নেতারা মনে করছেন যে এটি তাদের সাফল্যের প্রথম ধাপ।
এর ফলে মানুষের মধ্যে এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। এই বিভ্রান্তি তৈরি জরুরি বলে মনে করছেন বিএনপি নেতারা। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা।
তারেক রহমানের ষড়যন্ত্রের লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করা। বাংলাদেশে একটি কর্তৃত্ববাদী শাসন চলছে এ সম্পর্কে প্রচারণা করা। আর এ ক্ষেত্রেও তারেক রহমানের মাস্টারপ্ল্যান অনেকটা সফল বলে বিএনপি নেতারা দাবি করছেন।
তারা বলছেন, অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউজ, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এখন বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রতিনিয়ত নেতিবাচক মন্তব্য দিচ্ছে।
বিশেষ করে গুম, নিরাপত্তা, মানবাধিকার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ইত্যাদি ইস্যুগুলো সামনে আসছে। এটি চলতে থাকলে সরকার কিছুটা হলেও চাপে পড়বে। বাংলাদেশে জঙ্গি এবং সন্ত্রাসীদের মদদ দেওয়া, উসকে দেওয়া।
তারেক রহমানের মাস্টারপ্ল্যানের লক্ষ্য, বাংলাদেশে যে মৌলবাদী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো আছে সেগুলোকে উসকে দেওয়া।
সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যেন তারা অংশগ্রহণ করে সেজন্য অর্থায়ন করা, এরকম প্রক্রিয়াও চলছে। বিএনপির বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে, খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে দৃশ্যমান কিছু হবে বলে জানা গেছে। সরকার ও প্রশাসনের ভেতরে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করা।
তারেক রহমানের লক্ষ্য সরকারের ভিতরেই ষড়যন্ত্রকারীদের বিভিন্ন মিশনে কাজে লাগানো। প্রশাসনে নিজেদের লোকজনকে দিয়ে স্যাবোটাজ করানোই তার মাস্টারপ্ল্যানের একটি অংশ।
প্রশাসনে বেশকিছু বিএনপি-জামাতপন্থি লোক আছে যাদের সঙ্গে তারেক রহমানের এবং তার অনুগতদের যোগাযোগ রয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এই যোগাযোগটাকে আরো সুসংহত করে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা এবং তা মূল ধারার গণমাধ্যমে প্রকাশ করে একটি মিশন বাস্তবায়ন চলছে বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো দাবি করেছে।
সুশীল সমাজকে সামনে নিয়ে আসা।
বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সুশীল সমাজকে ক্ষেপিয়ে তোলাও তারেকের মিশনের একটি অংশ।
বিশেষ করে সুশীল নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমগুলোতে আওয়ামী লীগ বিরোধী এবং সরকারবিরোধী নানারকম প্রতিবেদন প্রকাশ করা যেন সাধারণ মানুষকে অস্থিতিশীল করা হয়। এরকম একটি পরিস্থিতি তৈরি করে একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপট সৃষ্টি তারেকের প্রধান লক্ষ্য।
বিএনপির নেতারা বলছেন, তারেক রহমান চান প্রথমে আওয়ামী লীগকে হটাতে। আওয়ামী লীগকে যে রাজপথের আন্দোলন দিয়ে হটানো যাবে না, এটি বিএনপি মনে প্রাণে বিশ্বাস করে।
কাজেই তারা এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় যেখানে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ঘটে। তবে তৃতীয়পক্ষ কে সে সম্পর্কে বিএনপির নেতারা কেউই কিছু বলেননি।