আওয়ামী লীগ থেকেও বাদ পড়ছেন মুরাদ

রাজনীতি

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পদত্যাগপত্র
জামালপুর আ’লীগ থেকে বহিষ্কার


বিজ্ঞাপন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : সদ্য পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে দলীয় পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিনি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করছেন। দলীয় পদ আছে তার। তবে ঢাকায় কোনো পদ নেই। তিনি জামালাপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদে রয়েছেন। ওই পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।’
মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যতোটুকু জানি, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ আজ সভা ডেকেছে। সভাটি ডা. মুরাদ হাসানকে নিয়েই। তার বিষয়টি সেখানে প্রধান আলোচ্যসূচি। তারা (জেলা কমিটি) সম্ভবত তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেবে। এ রকম সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়েছে।’
মুরাদ হাসানের দলের প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করা হবে কি না, জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা সেন্ট্রালি (কেন্দ্রীয় কমিটি) সিদ্ধান্ত নেবো। পরবর্তী ওয়ার্কিং কমিটিতে সিদ্ধান্ত নেবো। যেভাবে গাজীপুরের মেয়র এবং ওই মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদকের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং ছাড়া করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা পরবর্তী ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে তার (মুরাদ হাসান) বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবো।’
সংসদীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটি পরের ব্যাপার। এখন আপাতত যেটা হয়েছে, প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে তাকে সরে যেতে হলো। দলেও একটা পদে ছিল, সেখানেও অব্যাহতি পাচ্ছে। এমপি পদে থাকার বিষয়েও যদি সেরকম গুরুতর কোনো অভিযোগ আসে, সেটা সংসদের স্পিকার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পদত্যাগপত্র : ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। বর্তমানে পদত্যাগপত্রটি সচিবের দপ্তর থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের একান্ত সচিব মাহমুদ ইবনে কাশেমের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন প্রতিমন্ত্রীর তথ্য কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন।
এর আগে দুপুরে ই-মেইলে পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রণালয়ের সচিবের দফতরে পাঠানো হয়।
পদত্যাগপত্রে মুরাদ হাসান লেখেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্ব-শ্রদ্ধেয় সালাম নেবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গত ১৯ মে ২০২১ তারিখের স্মারকমূলে আমাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমি আজ ৭ ডিসেম্বর ২০২১ সাল থেকে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক। এমতাবস্থায়, আপনার নিকট বিনিত নিবেদন, আমাকে অদ্য ৭ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার লক্ষ্যে পদত্যাগপত্র গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি।
পদত্যাগপত্রে মুরাদ লিখেছেন, তাকে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ২০২১ সালের ১৯ মে, যদিও ওই দায়িত্বে তিনি এসেছিলেন ২০১৯ সালের ১৯ মে।
এর আগে অশালীন, শিষ্টাচারবহির্ভূত ও নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর বক্তব্য দেয়ায় মুরাদ হাসানকে আজকের মধ্যে পদত্যাগ করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে পদত্যাগের খবরে মুরাদের নির্বাচনী এলাকা জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে আনন্দ মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সেখানে মুরাদ হাসানের কুশপুতুল পোড়ানো হয়। বর্তমানে ডা. মুরাদ চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন।
জামালপুর আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার : ডা. মুরাদ হাসানকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ।
পদত্যাগের পর তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নিতে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মুরাদকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ বহিষ্কার করবে বলে জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সকল সিদ্ধান্ত মেনে নিবো আজীবন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।