নিজস্ব প্রতিবেদক : হাতি হত্যার দায়ে সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদ-ের বিধান থাকলেও আইনের সঠিক প্রয়োগ ও শাস্তি না হওয়ায় দেশে চলছে হাতি হত্যার মহোৎসব। চট্টগ্রাম বন বিভাগের তথ্যমতে, গত ৩ বছরে ৪৫টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। যার বেশিরভাগই বৈদ্যুতিক শক ও গুলি করে হত্যা করা হয়।
হাতি হত্যার এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত মাত্র ১৬টি মামলা হয়েছে, অথচ নিষ্পত্তি হয়নি একটিও! ক্রমান্বয়ে নিধনে এশিয়ান হাতিকে বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় রেখেছে সংরক্ষণ সংস্থা আইইউসিএন।
গোপনে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায় বৈদ্যুতিক শকে হত্যার পর বাবা-ছেলে মিলে মাটি চাপা দিচ্ছে হাতি। গত ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রামের বাঁশখালির লটমনির ঘটনা এটি। পরে অবশ্য দুজনকে কারাগারে পাঠায় আদালত। তখন ২০ দিনের ব্যবধানে বাঁশখালী, সাতকানিয়া ও চকরিয়ায় ৪টি হাতিকে বিদ্যুতায়িত ও গুলি করে হত্যা করে স্থানীয়রা।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, যার ওই ধানক্ষেত সে বর্গাচাষি। অন্যদিকে, হাতি হত্যার ঘটনার পর থেকে ওই ধানক্ষেতের পাহারাদার পলাতক রয়েছে। পুলিশও চেষ্টা করছে তাকে ধরতে।
চট্টগ্রাম বন বিভাগের তথ্য মতে, গত তিন বছরে ৪৫টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। যার ১০টি বৈদ্যুতিক শকে, ৫টি গুলিতে আর অসুস্থজনিত কারণে ২৩টি। এরমধ্যে কক্সবাজারে ২১, বান্দবানে ৫ আর চট্টগ্রামে ১৯টি। সবচেয়ে বেশি হত্যা হয় বাঁশখালীতে ৮টি।
১৬টি মামলা হলেও আসামি ও সাক্ষীর অনুপস্থিতির কারণে নিষ্পত্তি হয়নি একটিও।
চট্টগ্রাম আদালতের বন মামলা পরিচালক হারুনুর রশিদ বলেন, আমাদের বন আদালতে চারটি মামলা আছে। তারমধ্যে একটির বিচার শুরু হয়েছে। দুটি মামলা সাক্ষীর জন্য আটকে আছে। অপর একটি মামলা আমলে আছে।
প্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা আইইউসিএনের ২০১৬ সালের জরিপ বলছে, সারাদেশে ২৬৮টি হাতি আছে। চলাচলস্থল দখল করে চাষাবাদ আর ফাঁদ পেতে নিধনে ক্রমান্বয়ে কমছে হাতি।
চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, আমরা ইতোমধ্যে চকরিয়া ও চট্টগ্রামে ইতোমধ্যে ১৬টি মামলা চলমান আছে।
আইনে হাতি হত্যার জন্য সর্বনি¤œ দুই থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদ- এবং সর্বনি¤œ এক লাখ থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে।