স্বাগতম ২০২২

জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা/ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা/…বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এভাবেই নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছেন। আজ ১ জানুয়ারি। ঘড়ির কাঁটা ১২টা অতিক্রমের সাথে সাথে শুরু হয়েছে নতুন বর্ষ গণনা। কালের গর্ভে হারিয়ে গেলো আরো একটি বছর, বিদায় ইংরেজি ২০২১। স্বাগত ২০২২। হ্যাপি নিউ ইয়ার (শুভ নববর্ষ)।
নতুন বছর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা অতিমারীর মধ্যে স্বাস্থ্য সতর্কতার অংশ হিসেবে এবার উদযাপনে কিছুটা কমতি থাকলেও উৎসব আনন্দে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে শুরু করেছে সারাদেশ।


বিজ্ঞাপন

তবে উন্মুক্ত এলাকায় এবার তেমন আয়োজন নেই। আগেই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানকে ঘিরে আতশবাজি ও বাড়ির ছাদসহ খোলা জায়গায় অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করে পুলিশ। সন্ধ্যার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এবং কূটনৈতিক এলাকায় যানচলাচল নিয়ন্ত্রিত করা হয়।


বিজ্ঞাপন

বিশৃঙ্খলা এড়াতে রাজধানীর অভিজাত এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এছাড়া হোটেলসহ ঘরোয়া আয়োজনগুলোতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা ছিলো।

এদিকে, ধর্মীয় উগ্রবাদসহ যেকোনো সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করার জন্য সবাইকে নতুন বছরে প্রতিজ্ঞা করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণীতে খ্রিষ্টীয় নতুন বছর- ২০২২ উপলক্ষে দেশবাসী এবং প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি শুভেচ্ছা বাণীতে বলেন, প্রকৃতির নিয়মেই যেমন নতুনের আগমনি বার্তা আমাদের উদ্বেলিত করে, তেমনি অতীত-ভবিষ্যতের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে পুরনো স্মৃতি সম্ভারে হারিয়ে যাওয়ার চিরায়ত স্বভাব কখনও আনন্দ দেয়, আর কখনোবা কৃতকর্মের শিক্ষা নব উদ্যোমে সুন্দর আগামীর পথচলার জন্য অনুপ্রেরণা যোগায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২০ এবং ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ বাঙালি জাতির জীবনে ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আমরা এ সময়ে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠান- ২০২১ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের সঙ্গে একযোগে পালনের কর্মসূচি গ্রহণ করি। এরই মধ্যে আমরা চলতি-২০২১ সালের মার্চ মাসে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০-দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করি। যেখানে সার্কভুক্ত ৫টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধানরা সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানমালায় যোগ দিয়েছিলেন। তাছাড়া বিশ্বের ৭৭টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধানরা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা ভিডিও বার্তা ও অভিনন্দনপত্র প্রেরণ করেছেন, যেখানে সকলেই আমাদের সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

এদিকে, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেছেন, নতুন বছরে বাংলাদেশ অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ‘অতীতকে পেছনে ফেলে সময়ের চিরায়ত আবর্তনে খ্রিষ্টীয় নববর্ষ আমাদের মাঝে সমাগত। নতুনকে বরণ করা মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। তাইতো নববর্ষকে বরণ করতে বিশ্বব্যাপী বর্ণাঢ্য নানা আয়োজন। খ্রিষ্টীয় নববর্ষকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত গোটা দেশ। বাংলা নববর্ষ আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকলেও ব্যবহারিক জীবনে খ্রিষ্টীয় বর্ষপঞ্জিকা বহুল ব্যবহৃত। খ্রিষ্টাব্দ তাই জাতীয় জীবনে প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় অবিচ্ছেদ্যভাবে মিশে আছে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রতিবছর নববর্ষকে বরণ করতে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী বর্ণাঢ্য নানা আয়োজন করা হলেও করোনা মহামারির কারণে বিগত বছরের মতো এবারের উৎসবের আমেজও অনেকটাই ম্লান।