জঙ্গি হামলার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই, তারপরও আমরা প্রস্তুত: র‌্যাব

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : জঙ্গি হামলার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তারপরও যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। যেন যে কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি আমরা মোকাবিলা করতে সক্ষম হই। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে গুলশান-২ নম্বর চত্বরে থার্টি ফাস্ট নাইটের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পরিদর্শন শেষে র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ-আল মামুন সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। তিনি বলেন, র‌্যাবের হেলিকপ্টার, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, ডগ স্কোয়াড ও ক্রাইম সিন ভ্যানসমূহ প্রস্তুত রাখা হয়েছে কৌশলগত স্থানে। যেন যে কোনো প্রয়োজন যে কোনো পরিস্থিতিতে আমরা ভূমিকা রাখতে সক্ষম হই। এ ছাড়া যে কোনো বিশৃঙ্খল পরিবেশ দেখা দিলে আমাদের জানানোর অনুরোধ জানাচ্ছি। র‌্যাব ডিজি আরও বলেন, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা থার্টি ফার্স্ট নাইটের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কাজ করছি। সবার সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণে একযোগে কাজ করছি। থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে র‌্যাবের গোয়েন্দা ও আভিযানিক দল প্রস্তুত রয়েছে। রাতে (গত শুক্রবার) ঢাকা ও ঢাকার বাহিরে র‌্যাবের বিভিন্ন ব্যাটালিয়ানের সদস্যদের পোশাকে এবং সাদা পোশাকে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন করতে কোনো বাধা নেই। তবে কাউকে বিরক্ত বা বিব্রত করে তা উদযাপন করা যাবে না। আর যদি কেউ থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপনের নামে নাগরিকদের বিরক্ত ও বিব্রত করে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে র‌্যাব। চৌধুরী আবদুল্লাহ-আল মামুন বলেন, এ ছাড়া আমাদের সাইবার মনিটরিং টিম সাইবার ওয়ার্ল্ডয়ে তাদের নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং কূটনৈতিক এলাকায় অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা চেকপোস্ট বসিয়েছি। চেকপোস্টে প্রয়োজন মনে হলে তল্লাশি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ভিআইপি ও ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের টহল টিমসহ গোয়েন্দা দল রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যেন কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা না ঘটে সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা বনানী, গুলশান ও বারিধারা এলাকার সম্মানিত নাগরিকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুশৃঙ্খল রাখতে তাদের সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা আশা করবো, নতুন বছর উদযাপনের যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সবাই সেসব নির্দেশনা মেনে উদযাপন করবেন। কোনো ধরনের উশৃঙ্খলতা বা মাদকাসক্ত হয়ে কোনো ধরনের উশৃঙ্খলতা করলে তা প্রতিরোধ করতে সচেষ্ট রয়েছি। র‌্যাব ডিজি বলেন, আমরা আশা করবো, কেউ উচ্চৈঃস্বরে হর্ন বাজিয়ে নাগরিকদের বিরক্ত ও বিব্রত করার চেষ্টা করবেন না। যদি কেউ করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমাদের টিম প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া অনেককে দেখা যায় দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে মানুষকে বিরক্ত করে। তাদের বিরুদ্ধেও আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেবো। কেউ যেন নারীদের ইভটিজিং করতে না পারে তা নজরদারিতে রাখতে আমাদের সদস্যদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে যেসব এলাকার রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে সেসব এলাকার নাগরিকদের অসুবিধার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে চৌধুরী আবদুল্লাহ-আল মামুন বলেন, এ বিষয়ে ডিএমপি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে এবং ট্রাফিক বিভাগও কাজ করছে। অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা কিন্তু কোনো অনুষ্ঠান করতে বাধা দিইনি। অনুষ্ঠান হবে, তবে সুশৃঙ্খলভাবে। এর আগেও থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে অনেক ঘটনা ঘটেছে, যেটি আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আনন্দ-উচ্ছ্বাস করতে সরকার বা আমরা কখনোই বাধাগ্রস্ত করি না। আমরা সবাই উচ্ছ্বাস-আনন্দ করবো, কিন্তু আরেকজনকে বিরক্ত বা বিব্রত করে নয়। সবকিছুর মধ্যে সীমারেখা মানতে হবে। নতুন বছরে র‌্যাবের প্রত্যাশা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন বছরে বিরাজমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধরে রাখার প্রত্যাশা করছি আমরা। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী যে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন, সে নীতি বাস্তবায়নে র‌্যাবের প্রতিটি সদস্য কাজ করে যাবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।


বিজ্ঞাপন