সময় এখন বাংলাদেশের: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সময় কিন্তু এখন আমাদের, সময় বাংলাদেশের; একথাটি মনে রাখতে হবে এবং সেই সুযোগটি আমাদের নিতে হবে।’
শনিবার ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে রাজধানীর পূর্বাচলে নতুন ভেন্যুতে ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা-২০২২ উদ্বোধন ঘোষণা করে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পণ্যের গুণগত মান ধরে রেখে আপনারা (ব্যবসায়ীরা) যেন আপনাদের বাজার ঠিক রাখতে পারেন, আরও উন্নত করতে পারেন; সে দিকে আপনারা অবশ্যই দৃষ্টি দিবেন। অর্থাৎ নিজস্ব ব্র্যান্ডিং সৃষ্টি করে আপনাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী নিজে গবেষণাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেন জানিয়ে বলেন, আমার মনে হয় ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমাদের আরও গবেষণা দরকার। আমাদের পণ্যের চাহিদা এবং মান সেগুলো বিশেষভাবে নিরুপণ করা এবং রফতানির ক্ষেত্রে পণ্যের মান ধরে রাখার বিষয়ে প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিল্পমালিক এবং উদ্যোক্তাদের আমি অনুরোধ করবো— নিজের দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য আপনাদেরই উদ্যোগ নিতে হবে।’
ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সরকারে আসার পর যে বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্ব নিয়ে উদ্যোগ নিয়েছিলাম, তা হলো- উৎপাদন বাড়ানো। আমাদের দেশে আর্থসামাজিক উন্নয়ন করতে হলে উৎপাদন বাড়াতে হবে; যেটা আমাদের জাতির পিতারই নীতিমালায় ছিল, সেটা আমরা অনুসরণ করি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির সৃষ্টি করি, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রটা উন্মুক্ত করে দেই।
দেশের বিভিন্ন খাতকে এই সরকার বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশটা যেন শিল্প-বাণিজ্যে এগিয়ে যেতে পারে, উৎপাদন বাড়াতে পারে; সে উদ্যোগ নিয়েছি। বিশেষ করে নিজস্ব বাজার তৈরিতে আমরা মনোনিবেশ করি। কারণ শিল্পায়নের ব্যাপক প্রসার ঘটবে তখনই যখন আমাদের নিজস্ব বাজার তৈরি হবে।’
করোনাকালে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, করোনায় ব্যবসা ধরে রাখতে এবং এগিয়ে যেতে নানা প্রণোদনা দিয়েছি। করোনায় ব্যাংকের সুদ ৫০ ভাগ আপনাদের দিতে হবে, বাকিটা আমরা ভর্তুকি দিয়ে দিচ্ছি। এই করোনায় অনেক দেশের অর্থনীতি স্থবির হয়ে গেছে। আমাদের অর্থনীতি চালু রাখতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে কিছুটা ধাক্কা লেগেছে। সেটাও অতিক্রম করতে পারবো বলে বিশ্বাস করি। যে আদর্শ নিয়ে জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছেন, তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় রফতানি খাতের ভূমিকা অনেক বেশি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নারীর ক্ষমতায়ন ও দারিদ্র বিমোচন এবং বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিতে এগিয়ে নিয়ে যাবে এই অর্থনৈতিক অগ্রগতি।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের সময় মোট রফতানি আয় পেয়েছিলাম ১৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত ১৩ বছরে আমরা অর্জন করেছি ৪৫ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এই ব্যাপক উন্নতি আমরা করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের আগামী প্রজন্ম পাবে একটা সুন্দর সমাজ, সুন্দর দেশ, উন্নত দেশ; যে দেশ হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আত্ম নির্ভরশীল, আত্মমর্যাদাশীল, উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ ও এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান এবং সিইও এ এইচ এম আহসান।


বিজ্ঞাপন