মাত্র ১৫ টাকা ছিনতাই কালে খুন হয় মিলন পিবিআই যশোর কর্তৃক হত্যা মামলার মুল আসামি গ্রেফতার

অন্যান্য এইমাত্র

সুমন হোসেন ঃ পিবিআই, যশোর জেলার একটি চৌকষ পুলিশ দল কর্তৃক গত ৩১ ডিসেম্বর রাত অনুমন সাড়ে ১০ টার সময় অভিযুক্ত মোঃ হিরো(২৪), পিতা-মৃত তোতা মিয়া, গ্রাম-ভবেরবেড় পশ্চিমপাড়া, এ/পি সাং-পোড়াবাড়ী, নারায়নপুর, থানা-বেনাপোল পোর্ট, জেলা-যশোরকে নড়াইল জেলার কালিয়া থানাধীন পূর্ব মাধবপাশা গ্রামে তার শ^শুর বাড়ী জনৈক হান্নান শেখ এর বসত বাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত হিরো’র দেখানো মতে ঘটনার দিন মৃত মিলন হোসেন সাথে থাকা একটি সাদা প্লাষ্টিকের ব্যাগ (যাতে ভিকটিমের পরনের কাপড়, ভিকটিমের ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ এর ছবি, দলিল এর ফটোকপি ও ভিকটিমের এনআইডি কার্ডের একটি ফটোকপি) উদ্ধার করা হয়।


বিজ্ঞাপন

গত ২৮ আগস্ট ২০২১ তারিখ সকাল অনুমান ১০ টার সময় মিলন হোসেন (৪০), সাং-চুড়ামনকাটি, থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর স্ত্রীর নিকট হতে মাত্র ১০০ টাকা ও নিজ বাড়ির দলিল নিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে বাড়ি হতে বের হয়ে যায়। এরপর দুই দিন অতিবাহিত হলেও মিলন হোসেন বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন অনেক খোজাখুজি করেও মিলনের কোন সন্ধান পান নাই।


বিজ্ঞাপন

গত ১ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখ ভোর অনুমান ০৬.৪৫ ঘটিকার সময় বেনাপোল পোর্ট থানাধীন ভবেরবেড় গ্রামস্থ বেনাপোল রেলস্টেশনের ১০০ গজ পূর্বে রেল কর্মচারীর পরিত্যক্ত ভবনের সামনে হতে স্থানীয় লোকজন মিলন হোসেন এর মৃতদেহ দেখে থানায় সংবাদ দিলে পুলিশ মিলনের মৃতদেহ অজ্ঞাতনামা হিসাবে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। থানা পুলিশ কর্তৃক এ সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হলে মৃত মিলনের ছেলে বিপ্লব থানায় এসে তার বাবার ব্যাগ দেখে তাকে চিহ্নিত করে।

উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে নিহত মিলন হোসেন এর পুত্র মোঃ বিপ্লব হোসেন (১৮) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে বেনাপোল পোর্ট থানার মামলা নং-০২, তারিখ-০১/০৯/২০২১ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করেন। উক্ত মামলাটি পিবিআই, যশোর জেলা স্ব-উদ্দ্যোগে গ্রহণ করে মামলার তদন্তভার এসআই(নিঃ) ডি এম নূর জামাল হোসেন এর উপর অর্পণ করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অভিযুক্ত হিরোসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা ছিনতাই সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সহিত জড়িত এবং মাদকাসক্ত। গভীররাতে বেনাপোল পোর্ট থানাধীন রেলষ্টেশন এলাকায় আগত লোকজনদের নিকট থেকে সবর্স্ব ছিনিয়ে নেওয়াই তাদের পেশা।

অভিযুক্ত হিরো ঘটনার তারিখ ও সময়ে ঘটনাস্থলের আশেপাশে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকে। মৃত মিলন হোসেন গত ৩১ আগস্ট ২০২১ তারিখ দিবাগত গভীর রাতে রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে তার ব্যাগ মাথার নীচে দিয়ে ঘুমিয়ে থাকে।

উক্ত এলাকায় লোকজনের আনাগোনা থাকায় হিরো সংগীয় লোকজনসহ মিলনকে ঘুম থেকে রেলস্টেশনের পরিত্যক্ত বাড়ীর কাছে নিরিবিলি স্থানে নিয়ে। তার পকেটে থাকা টাকা ছিনতাই করার সময় মিলন বাধা দিলে তাদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। তারা জোরপূর্বক মিলনের পকেটে থাকা ১৫ টাকা ছিনাইয়া নেয় এবং তাব পেটের বাম ও বুকের ডান পার্শ্বে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এতে মিলন রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়ে পড়ে যায়।

অভিযুক্ত হিরো ও তার সহযোগীরা ভিকটিমকে ছুরিকাঘাত পূর্বক হত্যা করে ভিকটিমের সাথে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় মর্মে স্বীকার করে। অভিযুক্ত হিরো ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিল। সে দীর্ঘদিন পর তার শ^শুরবাড়ী নড়াইল জেলার মাধবপাশা গ্রামে আসলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা পূর্বক তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বেনাপোল পোর্ট থানাধীন মাছ বাজারস্থ অভিযুক্তের নিজ ভাংড়ীর দোকান থেকে তার দেখানো মতে মৃত মিলন হোসেন এর একটি সাদা প্লাষ্টিকের ব্যাগ, ভিকটিমের পরনের কাপড়, ভিকটিমের ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ এর ছবি, দলিল এর ফটোকপি ও ভিকটিমের এনআইডি কার্ডের একটি ফটোকপি উদ্ধার পূর্বক জব্দ তালিকা মোতাবেক জব্দ করা হয়। অভিযুক্ত হিরো’কে গত শনিবার ১ জানুয়ারী আদালতে সোপর্দ করলে সে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।