চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক খুনসহ ডাকাতি মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার ৬

অন্যান্য এইমাত্র

নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ গত ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, বিকাল অনুমান ৩ টার সময় জোরারগঞ্জ থানার অধিবাসী দুবাই প্রবাসী জনৈক হোসেন মাস্টার পাহাড়তলী থানাধীন অলংকার বাসস্ট্যান্ডে বাড়ী যাওয়ার জন্য পরিবহণের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন।


বিজ্ঞাপন

ঠিক তখনই যাত্রী ও ড্রাইভার বেশে ৫ জন একটি মাইক্রোবাসে তার সামনে এসে দাঁড়ায়। মাইক্রোবাসের ড্রাইভার তাকে ১০০ টাকা ভাড়ায় পৌঁছে দিতে প্রস্তাব দেয়। হোসেন মাষ্টার সরল বিশ্বাসে তাদের মাইক্রোবাসে ওঠেন।

কিছু পথ যাওয়ার পরে তার উপর নেমে আসে নির্মম নির্যাতন। মাইক্রোবাসে যাত্রী বেশে থাকা ৪ জন তাদের সাথে থাকা হাতুড়ি এবং স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে তাকে আঘাত করে গুরুতর আহত করে তার নিকট থাকা নগদ ১০,০০০ টাকা, ২টি স্বর্ণের আংটি, ১টি মোবাইল ফোন ও তার পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেয়। তারপর তাকে কিছুক্ষণ চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কে এলোমেলো ঘুরিয়ে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানাধীন উত্তর বেতিয়ারা নামক জায়গায় ঢাকা চট্টগ্রাম লেইনের পাশে ফেলে দেয়।

স্থানীয় লোকজন হোসেন মাষ্টারকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের সহায়তায় প্রথমে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করে এবং পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি হলে নিকট আত্মীয়রা হোসেন মাষ্টারকে ঐদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে ভিকটিম হোসেন মাষ্টারের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় নগরীর পাহাড়তলী থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।

মামলা রুজুর পর পুলিশ কমিশনার, সিএমপি, চট্টগ্রাম এর নির্দেশে এডিসি (ডিবি-বন্দর) নোবেল চাকমার নেতৃত্বে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এবং থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান আরম্ভ করে।

গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশ, পাহাড়তলী থানা ও আকবরশাহ থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে গতকাল বুধবার ১২ জানুয়ারি, রাত ৯ টা ৪৫ মিনিটে সময় উক্ত মামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে তাদের অপর দুই সহযোগী সহ সর্বমোট ৬ জনকে পাহাড়তলী থানাধীন অলংকার মোড় এলাকা হতে একটি মাইক্রোবাস, হাতুড়ি, স্ক্রু-ড্রাইভার, প্লাস, ২টি টিপ ছুরি, ১টি গামছা, ১০টি মোবাইল সেট, ১টি পাসপোর্ট এবং একটি ভিসার কপি সহ আটক করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ৪ জন শাহ আলম, আবু কালাম, জাকির ও আল-আমিন উক্ত মামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং উদ্ধারকৃত হাতুড়ি ও স্ক্রু-ড্রাইভার উক্ত মামলার ঘটনায় ব্যবহৃত হয়েছিল মর্মে জানায়।

তারা আরো জানায় যে, তারা বরিশাল এলাকা হতে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে এসে মাইক্রোবাস ব্যবহার করে যাত্রী ও ড্রাইভার সেজে গাড়ীতে টার্গেট যাত্রী তুলে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়।

এছাড়াও তারা ধৃত হওয়ার সময় অলংকার মোড়ে আরেকটি ডাকাতি করার জন্য শিকারের অপেক্ষায় বসে ছিল। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বাংলাদেরশের বিভিন্ন জেলায় একাধিক দস্যুতা ও ডাকাতি মামলা রয়েছে।

উল্লেখ্য যে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মোঃ আবুল কালাম (৪৭) এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতয়ালী থানা এবং খুলনার খালিশপুর থানা এলাকায় বোমা বিস্ফোরন ঘটিয়ে স্বর্ণের দোকান লুট, হালিশহরে ব্যাংক ডাকাতি সহ অসংখ্য ডাকাতির মামলা রয়েছে। আসামীদের বিরুদ্ধে পাহাড়তলী থানায় ডাকাতির প্রস্তুতি মামলা রুজু করা হয়েছে।