বাংলাদেশের একটি মহল আরো নিষেধাজ্ঞার তদ্বির চালাচ্ছে – যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্য মিকস

অন্যান্য এইমাত্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ঃ বাংলাদেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে একটি মহল আরো অনেক কর্মকর্তা এবং রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে ‘নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে তদ্বির চালাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন কংগ্রেসের পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ার গ্রেগরি মিকস।


বিজ্ঞাপন

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে তার দেশের চমৎকার একটি সম্পর্ক রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে ‘চায় না’।

সোমবার নিউ ইয়র্কের কুইনস এলাকায় নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের জন্য একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজ-সমাবেশে কংগ্রেস সদস্য মিকস এই মন্তব্য করেন।

গ্রেগরি মিকস বলেন, “আমরা নিশ্চিত করতে চাই, যে আমরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নই। আমরা এখনও বাংলাদেশের সরকার ও সে দেশের জনগণের সাথে কাজ করে যাচ্ছি।”

ডেমোক্র্যাট আইনজীবী মিকস যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে নিউ ইয়র্কের ভোটারদের প্রতিনিধিত্ব করে আসছেন ১৯৯৮ সাল থেকে। ২০২১ সাল থেকে তিনি পররাষ্ট্র বিষয়ক হাউজ কমিটির চেয়ারের দায়িত্বে আছেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আমরা দিচ্ছি না। যেটা দেওয়া হয়েছে, সেটা একটি সংস্থার কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে, পুরো সংস্থার বিরুদ্ধে নয়। আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।”

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গত ১০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র ‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমদসহ বাহিনীর ৭ কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে তলব করে সরকারের অবস্থান জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠিও দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

নিউ ইয়র্কের অনুষ্ঠানে কংগ্রেস সদস্য গ্রেগরি মিকস বলেন, “একটি মহল বাংলাদেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে যুক্তরাষ্ট্রে তদ্বির চালাচ্ছে, যাতে আরও অনেক কর্মকর্তা এবং রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

“কিন্তু তাদের কথায় তো আমরা সেটা করব না।… সেটা সম্ভবও নয়। সব যাচাই করে দেখে আমরা সঠিক পদক্ষেপই নেব।”

মিকস জানান, মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং অন্যান্য বিষয় দেখতে এ বছরই তিনি বাংলাদেশ সফর করবেন।

“তার আগে আমি পররাষ্ট্র দপ্তরের সাথে এবং কংগ্রেসে এশিয়া-প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের সাব কমিটির সাথে বসব। যদি প্রয়োজন মনে হয়, কংগ্রেসে আমরা বাংলাদেশ বিষয়ে একটি শুনানিরও আয়োজন করতে পারি।”

বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র বসবাসের সুযোগ দিয়েছে। তাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন রাখা হয়েছিল এই কংগ্রেস সদস্যের সামনে।

জবাবে তিনি বলেন, “বিষয়টি সত্য হলে তা অবশ্যই দুঃখজনক এবং মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রকেও কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। বিষয়টি আমি অবশ্যই খুঁজে দেখব। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কথা বলব।”

ডেমক্র্যাটিক পার্টির এই কংগ্রেসম্যানের নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের জন্য ‘বাংলাদেশিজ ফর গ্রেগরি মিক্স’ ব্যানারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন কমিউনিটি লিডার মোর্শেদ আলম।

অন্যদের মধ্যে কমিউনিটি অর্গানাইজার সাখাওয়াত আলী, নিউ ইয়র্কে ডেমক্র্যাটিক পার্টির তৃণমূল নেতা ড. দীলিপ নাথ, আমেরিকা-বাংলাদেশ অ্যালায়েন্সের প্রেসিডেন্ট এম এ সালামসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।