পুলিশ বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে ————— স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

অন্যান্য এইমাত্র সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ গতকাল শনিবার ২৬ মার্চ বিকালে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে আলোচনা সভা, মুজিববর্ষ স্মারকগ্রন্থ ‘অনশ্বর পিতা’র মোড়ক উন্মোচন এবং ‘রং তুলিতে আঁকি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ’ শীর্ষক শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।


বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এমপি। বিশেষ অতিথির আসন অলংকৃত করেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)। স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজি ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন সভাপতি মোঃ মনিরুল ইসলাম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

অতিরিক্ত আইজি ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম, রেবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আসাদুজ্জামান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ।

এ ভাষণের শক্তিতে বীর বাঙালি মৃত্যু অবধারিত জেনেও সম্মুখযুদ্ধ করে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। রাজারবাগের পুলিশও বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের কণ্ঠ স্তব্ধ করার প্রক্রিয়া চলছিল।

আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণ হচ্ছে, নতুন প্রজন্ম মন খুলে আঁকতে পারছে, মনের ভাষা প্রকাশ করতে পারছে।

আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর বাংলাদেশ পুলিশ বুঝে যায় তাদের কি করতে হবে।

সে কারণেই ৭ মার্চের পরে অনেক মহকুমায় পুলিশের অস্ত্রাগার খুলে দেয়া হয়। তখন ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ মুক্তিকামী মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য তাঁতিয়ে ছিলেন।

পুলিশ তাদেরকে অস্ত্র দেয়ার ব্যবস্থা করে। তখন কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়নি। মুক্তিকামী মানুষ পুলিশের কাছে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, এ দেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ পুলিশ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রনায়কোচিত প্রজ্ঞার কারণে, তাঁর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন রাষ্ট্র পরিচালনার কারণে আজ বাংলাদেশের বিস্ময়কর অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে পুলিশের।

একটি গোষ্ঠী দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য। তারা জিএসপি বন্ধ করতে চিঠি লিখছেন।

তিনি বলেন, আপনারা রাজনীতি করেন জনগণের জন্য, আবার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন, জনগণকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

আইজিপি বলেন, জিএসপি বন্ধ করে কার টুটি চেপে ধরতে চান?
২২ লাখ নারী শ্রমিক কাজ করেন গার্মেন্টস সেক্টরে। ৪০ লাখের বেশি মানুষ সরাসরি কাজ করেন এ সেক্টরে।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, জিএসপি বন্ধ হলে কার ক্ষতি হবে, অর্থনৈতিক অবরোধ হলে কার ক্ষতি হবে।

ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী বলেন, যে বিশ্বাসটা সবসময় আমি বুকে ধারন করি সেটি হল বঙ্গবন্ধু এসেছিল বলে আজ আমরা এখানে আছি। বঙ্গবন্ধু নেই তো, আমরাও নেই।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে দেশের আপামর জনতা সঠিক দিকনির্দেশনা পেয়েছিল।

বাংলাদেশ পুলিশের যত সদস্য স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছে আর কোন বাহিনীতে এককভাবে এত সদস্যের প্রাণ দিতে হয় নাই।

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে।

শুধু মুক্তিযুদ্ধে নয়, জাতীয় জীবনের প্রতিটি সঙ্কটে পুলিশ সদস্যরা আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত স্পেশাল ব্রাঞ্চের এএসআই সিদ্দিকুর রহমান নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের রক্ষার চেষ্টা করেছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা সমুন্নত রেখে জনসেবার মহান ব্রত নিয়ে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজিগণ, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ, এসোসিয়েশনের সদস্যবৃদন্দ এবং বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অতিথিরা স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।