ভাসান চরে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুরা শৈশবকালীন টিকাদান কর্মসূচির আওতায় টিকা পাচ্ছে-ইউনিসেফ
নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ বৃহস্পতিবার ২১ এপ্রিল, বাংলাদেশের ভাসান চরে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুরা একটি নিয়মিত শৈশবকালীন টিকাদান কর্মসূচির আওতায় এই সপ্তাহে টিকা পাচ্ছে। ভাসান চরে শৈশবকালীন টিকাদান কর্মসূচিতে সহযোগিতার লক্ষ্যে ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারকে প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা দেয়।
যদিও রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুরা দ্বীপে আসার পর অ্যাডহক-ভিত্তিক দুটি কর্মসূচির মাধ্যমে কিছু টিকা পেয়েছে, তবে ভাসান চরে প্রথম নিয়মিত শৈশবকালীন টিকাদান কার্যক্রম শুরু হলো এই সপ্তাহে।
এ বিষয়ে ইউনিসেফ দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক জর্জ লারিয়া-আদজেই বলেন, “আমাদের নষ্ট করার মতো সময় নেই। পিছিয়ে পড়া মানে মৃত্যু। ভাসান চরের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের শৈশবকালীন টিকা দেওয়া আবশ্যক, অন্যথায় পরিণতি প্রাণঘাতী হতে পারে।”
ইউনিসেফের আঞ্চলিক পরিচালক ২০-২১ এপ্রিল ভাসান চরে তাঁর সফরের সময় শিশুদের টিকাদানে নিয়োজিত সরকারি স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে যোগ দেন। এমএনসিএএইচ-এর লাইন ডিরেক্টর ড. মো. শামসুল হক বলেন, “বাংলাদেশ সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় ভাসান চরে নিয়মিত শৈশবকালীন টিকাদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
এই কর্মসূচির অধীনে শিশুদের ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি, এইচআইবি, পোলিও, নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা, হাম ও রুবেলার টিকা দেওয়া হবে।”
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিবারগুলোকে ভাসান চর দ্বীপে স্থানান্তর করা শুরু হয় মাত্র এক বছর আগে। অনুমান অনুযায়ী, দ্বীপটিতে এখন ১০ হাজারের বেশি শিশু রয়েছে। ভাসান চরে স্বাস্থ্য ও অন্যান্য পরিষেবা প্রদানে সরকারকে সহায়তা প্রদানে ইউনিসেফ, ইউএনএইচসিআর, ডব্লিউএইচও এবং অন্যান্য অংশীদাররা একসঙ্গে কাজ করছে। ইউনিসেফের আঞ্চলিক পরিচালক বলেন, “যত চ্যালেঞ্জিং বা দুর্গম এলাকাই হোক না কেন, সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা এবং প্রান্তিক ছেলে-মেয়েদের কাছে পৌঁছানোর জন্য আমাদের অবশ্যই যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে, তারা যেই হোক বা যেখানেই থাকুক না কেন।”
জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন বা টিকাকে অন্যতম সেরা অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা শিশুদের বেঁচে থাকার, উন্নতি করার, হাঁটাচলা, খেলা ও শেখার একটি ন্যায্য সুযোগ তৈরি করে দেয়। প্রতি বছর এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হয় বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ। আর এই বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহের ঠিক আগে টিকাদান কর্মসূচিটি শুরু হয়েছে, যার লক্ষ্য হচ্ছে এখনও জীবন রক্ষাকারী টিকা থেকে বঞ্চিত লাখ লাখ শিশুর প্রতি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।