নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদ্ঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, র্দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
গ্রেফতার কৃত আসামী মোঃ সেকাব উদ্দিন কুখ্যাত ডাকাত হিসেবে তার এলাকায় পরিচিত। ২০০৬ সাল থেকে সে বিভিন্ন অপরাধ করে নিজ এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে আসছে। মোঃ সেকাব উদ্দিন ২০১০ সালে ডাকাতি করতে গিয়ে মোঃ হামিদ নামে এক ব্যক্তিকে খুন করে।
নিহত ভিকটিম মোঃ হামিদ ওই রাতে ডাকাত দলকে শনাক্ত করে তাদের ধরার চেষ্টা করলে ঐ সময় মোঃ সেকাব উদ্দিন তাকে গুলি করে। পরবর্তীতে হামিদকে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কর্তব্য ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
এই ডাকাতি এবং হত্যা কান্ডটি সংগঠিত করার পর মোঃ সেকাব উদ্দিন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার এড়াতে সে দেশ ছেড়ে দুবাই পালিয়ে যায়। সেখান থেকে সে ২০১৬ সালে আবার দেশে ফিরে আসে।
২০১৬ সালে দুবাই থেকে ফিরে এসে নিজ এলাকায় অবস্থান করে সে আবার তার সেই পূর্বের অপকর্ম শুরু করে এবং এলাকার মানুষ তার এই অপকর্মের কারণে আতঙ্কে ভীত হয়ে পড়ে।
এছাড়াও ২০১৭ সালে পুনরায় একটি ডাকাতি করতে গিয়ে মোঃ নুরুল (মজু মিয়া) আরেক ব্যক্তিকে খুন করে। মজু মিয়ার বাড়িতে ডাকাতি করার সময় তাদের’কে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে সে সময় সেকাব উদ্দিন মজু মিয়ার মাথায় শর্টগান দিয়ে গুলি করে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করে।
গ্রেফতার কৃত আসামী মোঃ সেকাব উদ্দিনের নামে উল্লেখিত ডাকাতি ও হত্যা মামলার ২টি ওয়ারেন্ট রয়েছে। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত তার সমস্ত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন।
প্রায় ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে পলাতক চকরিয়া থানার চাঞ্চল্যকর ও নৃশংস দুইটি পৃথক হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত শীর্ষ ডাকাত ও প্রধান আসামি মোঃ সেকাব উদ্দিনকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, উপরে উল্লেখিত পৃথক দুইটি হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত শীর্ষ ডাকাত ও প্রধান পলাতক আসামি মোঃ সেকাব উদ্দিন কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন চিরিঙ্গা বাজার এলাকায় অবস্থান করছে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার ২০ এপ্রিল, আনুমানিক ১০ টা ২০ মিনিটের সময় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল উল্লেখিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ সেকাব উদ্দিন (৩৬), পিতা- মোঃ মনজুর আলম, সাং- রামপুর গুরাইন্যা কাটা, থানা-চকরিয়া, জেলা- কক্সবাজারকে আটক করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামী উল্লেখিত হত্যা ও ডাকতির সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কথা অকপটে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, রামপুর তার নিজ গ্রামস্থ বসত বাড়ির ঘরে অবৈধ মাদক দ্রব্য ও আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে।
পরবর্তীতে আসামী নিজ মূখে স্বীকার ও দেখানো মতে তার বসত ঘর থেকে ০১টি ওয়ান শুটানগান, ১টি থ্রী কোয়ার্টারগান এবং ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার সহ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য যে, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে ধৃত আসামীর বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানায় ২টি মামলা পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে কক্সবাজার জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।