পিবিআই যশোর কর্তৃক নড়াইলের দীর্ঘ ৭ বছর পর চাঁন মিয়া হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন ও আসামি গ্রেফতার

Uncategorized আইন ও আদালত

মোঃ রফিকুল ইসলাম ঃ দীর্ঘ ৭ বছর পর নড়াইলে চাঁন মিয়া হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন সহ ঘটনার সহিত জড়িত অভিযুক্ত আসামী মোঃ মকিদুল শেখ (৩৭), পিতা-মোঃ মোতালেব শেখ, সাং-মাগুরা, থানা-সদর, জেলা-নড়াইল কে গত ২৯ মে, দুপুর সাড়ে ১২ টার সময় তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই যশোর।

গত ৮ মার্চ ২০১৫, রাত অনুমান ৯ টার সময় ভ্যানচালক চান মিয়া, পিং-আইয়ুব শেখ, সাং-মাগুরা, যোগা-নড়াইল কে তার বাড়ির কে যেন “চানমিয়া” ডাক দিলে সে “দাড়াও আসি” বলে ঘর হতে বাহির হয়ে যায়।

পরবর্তীতে ইং ৯ মার্চ ২০২২ সকাল অনুমান ৭ টার সময় চান মিয়ার বাড়ির পূর্ব পাশের মেহগনি বাগানের মধ্য থেকে চানমিয়ার মৃতদেহ গলায় রশি বাধা অবস্থায় উদ্ধার হয়।

উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে নিহতের ভাই মোঃ উজ্জ্বল শেখ (৩০) এর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে নড়াইল সদর থানার মামলা নং-৩৯, তারিখ-২৮/০৫/২০১৫, ধারা-৩০২ পেনাল কোড রুজু হয়।

নড়াইল সদর থানা পুলিশ মামলাটি তদন্তশেষে নড়াইল সদর থানার চূড়ান্ত রিপোর্ট সত্য নং-৮১, তারিখ-১১/১১/২০১৬, ধারা-৩০২ পেনাল কোড দাখিল করলে বাদীর নারাজির প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডি নড়াইল’কে নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশে সিআইডি নড়াইল জেলা মামলাটি তদন্ত শেষে নড়াইল সদর থানার চূড়ান্ত রিপোর্ট সত্য নং-২১, তারিখ ১৯/০৬/২০২১ খ্রিঃ, ধারা-৩০২ পেনাল কোড দাখিল করেন। বাদীর নারাজির প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই যশোর জেলাকে নির্দেশ প্রদান করেন।

আদালতের নির্দেশে গত ৭ মার্চ ২০২২ খ্রিঃ মামলাটি পিবিআই, যশোর জেলা গ্রহণ করে এবং মামলার তদন্তভার এসআই (নিঃ) মিজানুর রহমান-২ এর উপর অর্পণ হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মোঃ মিজানুর রহমান-২ যথারীতি মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেন এবং তদন্তের জন্য তৎপর হন।

এক পর্যায়ে পিবিআই প্রধান বনজ মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম, অ্যাডিশনাল আইজিপি, বাংলাদেশ পুলিশ এর সঠিক তত্ত্ববধান এবং পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর দিক নির্দেশনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মোঃ মিজানুর রহমান-২ এর নেতৃত্বে পিবিআই যশোরের একটি চৌকস দল গত ২৯ মে, দুপুর সাড়ে ১২ টার সময় অভিযুক্ত ১। মোঃ মকিদুল শেখ (৩৭), পিতা-মোঃ মোতালেব শেখ, সাং-মাগুরা, থানা-সদর, জেলা-নড়াইলকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অত্র মামলার ভিকটিম চান মিয়া ও অভিযুক্ত মোঃ মকিদুল শেখ এর বাড়ি একই গ্রামে এবং পাশাপাশি। অভিযুক্ত মাকিদুলের ছোট ভাই একাদুলের স্ত্রীর সাথে ভিকটিম চাঁন মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

বিষয়টি জানাজানাজি হলে স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে একাধিকবার ভিকটিম চাঁন মিয়াকে জরিমানা করে। ভিকটিম চান মিয়ার প্রেম থাকার কারনে চাঁন মিয়ার স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে চলে যায়। ভিকটিম চাঁন মিয়া ও অভিযুক্ত মোঃ মকিদুল শেখ এর আপন ভাই মোঃ একাদুলের স্ত্রীর সম্পর্কের কারণে অভিযুক্ত মোঃ মকিদুল শেখ সহ অন্যান্য অভিযুক্তগণ ভিকটিম চাঁন মিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

অত্র মামলার ঘটনার দিন অর্থাৎ গত ০৮/০৩/২০১৫ তারিখ রাত অনুমান ৯ টার সময় গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত আসামী মোঃ মকিদুল শেখ সহ তার অন্যান্য সহযোগীরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ভিকটিম মৃত চান মিয়াকে তার বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে গলায় একটি রশি পেচিয়ে গভীর রাতে মৃত চাঁন মিয়ার বাড়ীর পূর্ব পাশে জনৈক অতিত কর (৬০) এর মেহগনি গাছের বাগনের মধ্যে ফেলে রেখে যায় মর্মে স্বীকার করে।

গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত আসামী মোঃ মকিদুল শেখকে গতকাল সোমবার ৩০ মে আদালতে সোপর্দ করা হলে সে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।


বিজ্ঞাপন